২৯ মে, ২০২৪ ২১:৪৬

পাহাড়ি ঢলে আখাউড়ায় পানিবন্দী ২২ পরিবার, তলিয়ে গেছে ফসলি জমি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

পাহাড়ি ঢলে আখাউড়ায় পানিবন্দী ২২ পরিবার, তলিয়ে গেছে ফসলি জমি

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ভারী বর্ষণ ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। 

আখাউড়া স্থলবন্দর এলাকার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কালন্দি খাল, জাজি গাং ও হাওড়া নদী দিয়ে ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানি বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এতে করে বেশকিছু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আকস্মিক এই বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলায় কোনো ধরনের প্রস্তুতি চোখে পড়েনি।

বুধবার উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের কেন্দুয়াই মেলার মাঠ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ২০/২২টি পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। 

এসব পরিবারের লোকজন জানায়, মঙ্গলবার সকাল থেকে ভারতের ত্রিপুরা রজ্যের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও এর আগের রাতের ভারী বর্ষণে আখাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী দক্ষিণ ইউনিয়নের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়ে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। এ বন্যার কারণে তলিয়ে গেছে কৃষকের সবজি ক্ষেত, আউশ ধানের জমি, বীজতলা। ইতিমধ্যে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার।

অতিবৃষ্টির কারণে মঙ্গলবার সকাল থেকে ত্রিপুরা রাজ্যের উজান থেকে পানি নামতে শুরু করে। ভারত থেকে নেমে আসা এ পাহাড়ি ঢলের কারণে উপজেলায় নিম্নাঞ্চলে হঠাৎ পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে। পাহাড়ি ঢলের কারণে আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী কালিকাপুর, কেন্দুয়াই মেলার মাঠ প্লাবিত হয়েছে বেশি। 

মেলার মাঠ এলাকার বাসিন্দারা জানান, দুইদিন থেকে তারা পানিবন্দী থাকলেও এখন পর্যন্ত কেউ তাদের খোঁজ খবর নেয়নি।

কেন্দুয়াই মেলার মাঠ এলাকার বাসিন্দা ও রহিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আরোদিয়া ও তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী মিম পানি মাড়িয়ে স্কুলে যাওয়ার সময় জানায়, মঙ্গলবার থেকে তাদের বাড়িতে পানি, রান্নাঘরেও পানি। মা কিছু রান্না করতে পারেনি। তারা মুড়ি খেয়ে এখন স্কুলে যাচ্ছেন।

কেন্দুয়াই মেলার মাঠের বাসিন্দা ঈদন মিয়া, মালু মিয়া ও নিধু মিয়া বলেন, মঙ্গলবার থেকে তারাসহ তাদের আশপাশের ২০/২২ টি পরিবার পানিবন্দী। চুলা জ্বালানোর মতো কোনো অবস্থা নাই। তারা অটোরিকশা চালক দু’দিন থেকে আয়-রোজগারও বন্ধ। ছেলে-মেয়ে নিয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ তাদের খোঁজ-খবর নেয়নি।

আনন্দপুর গ্রামের মো. আকরাম ভূঁইয়া বলেন, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে এ আকস্মিক বন্যায় জাজি ব্রিজ সংলগ্ন আমার দুই বিঘা জমির সবজি ও ছোট একটি পুকুর তলিয়ে গেছে। এতে করে আমার প্রায় দেড় লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। 

আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জালাল উদ্দিন বলেন, আমি গত এক সপ্তাহ যাবৎ অসুস্থ। তবে আমি ওই এলাকার মেম্বারের মাধ্যমে পানিবন্দী পরিবার গুলির তালিকা তৈরি করেছি। এখন উপজেলায় পাঠাচ্ছি। 

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাবেয়া আক্তার বলেন, নির্বাচনি কাজে জেলার বাঞ্ছারামপুরে আছি। বিষটি আপনার মাধ্যমে জানতে পারছি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের মাধ্যমে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর