ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে সিরাজগঞ্জের ১২টি থানার কার্যক্রম। পাঁচদিন পর কর্মস্থলে ফিরছে পুলিশ সদস্যরা। কিছু থানায় পুলিশ অবস্থান করলেও ১১ দফা দাবীতে কর্মবিরতিতে থাকায় বন্ধ ছিল কার্যক্রম। সেই সকল থানা আবার চালু হলেও পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসেনি।
শনিবার সকাল থেকে সেনাবাহিনী, র্যাব ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন থানায় পুলিশ সদস্যের নিয়ে কাজে যোগদান শুরু করান।
শনিবার সকালে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি সোয়াইব রিয়াজ আলম জেলার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এনায়েতপুর থানার কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা করেন। এই থানায় ৪ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ১৫ পুলিশ ও তিন ছাত্র জনতা নিহত হয়েছিল। সে সময় পুড়িয়ে দেওয়া হয় এনায়েতপুর থানা ভবন। এ সমাবেশে তিনি বলেন, ছাত্রদের কারনে দেশে অনেক বিপ্লব হয়েছে। তবে এবার স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বড় বিপ্লব রচিত হয়েছে। এনায়েতপুরসহ সারা দেশে বিভিন্ন পরিস্থিতির কারনে বিগত কিছুদিন আমরা কঠিন সময় অতিবাহিত করেছি। পুলিশের থানার কার্যক্রম না থাকায় বিভিন্ন স্থানে চুরি ডাকাতি ছিনতাই হচ্ছে। যারা প্রকৃত অপরাধী তারা এ সময়ে এসব সুযোগ নিচ্ছে। এতে সাধারন মানুষের বিপদ আরো বেড়েছে। এ কারনে আমরা এনায়েতপুর থানার কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছি। আপনারা পুলিশের পাশে থেকে সার্বিক সহযোগিতা করবেন। আমরা চাই সবাই মিলে দেশটাকে নতুন করে সাজাতে।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ সদস্যদের অনেকে এখনো ভীতির মধ্যে রয়েছে। তাদেরকে সহযোগীতা দিয়ে আপনারা আপন করে নেবেন। তাদের ভয় দুর করবেন। উল্লাপাড়া ও সলঙ্গা থানায় র্যাব-১২ ও সেনাবাহীনির সহযোগিতায় ফিরেছে পুলিশ। এসময় সিরাজগঞ্জ সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন আসমা খাতুন, র্যাব-১২ এর অধিনায়ক মারুফ হাসান উপস্থিত ছিলেন। এসময় তারা বলেন, সকলেই সহযোগিতায় থানার কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে। কার্যক্রম না থাকলে নানা অঘটন ঘটতে পারে। পুলিশ ছাড়া কোন রাষ্ট্র ব্যবস্থা চলতে পারে। জনগনের স্বার্থরক্ষা করে পুলিশ কাজ করবে।
এদিকে বেলকুচি থানার কার্যক্রম শুরু হলেও স্বাভাবিক হয়নি এখনো। শনিবার সরেজমিনে গেলে পোশাক পরিহিত কোন পুলিশ সদস্যকে দেখা যায়নি। থানা চত্বরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করলেও ভেতরে ভুতুড়ে বাড়ির মতো ফাঁকা। থানা সূত্র জানায়, এখানে ৬০ জনের মতো স্টাফ রয়েছে। দু একটি হারানো জিডি ছাড়া আর কোন কার্যক্রম চলছে না।
এদিকে সদর থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম, তাড়াশ থানার ওসি নজরুল ইসলাম ও কামারখন্দ থানার ওসি রেজাউল ইসলাম বলেন, আমরা থানায় আছি। বাইরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন। দু একটা হারানো জিডি ছাড়া আর কোন কার্যক্রম চলছে না।
সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. আরিফুল ইসলাম মন্ডল বলেন, স্বল্প পরিসরে ১২টি থানার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। খুব শ্রীঘই সব থানার কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
বিডি প্রতিদিন/এএম