আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বগুড়া সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিজানকে (৪০) কুপিয়ে হত্যা করেছে। হামলা চালিয়ে হত্যার ঘটনায় সন্দেহজনক আটক যুবক লেদুকে (৩৯) কয়েকজন যুবক গণপিটুনি দিলে সেও মারা যায়।
সোমবার রাত ৯টায় বগুড়া সদরের গোকুল ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এ দুটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বগুড়া সদর থানা পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়া সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতা মিজানুর নেতাকর্মী নিয়ে রাত ৯টার দিকে ওই ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের সামনে কথা বলছিল। ওই সময় বিদ্যুৎ ছিল না। এ সুযোগে কয়েকজন দুর্বৃত্ত মোটরসাইকেলযোগে এসে মিজানুর ও তার নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা মিজানুরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে চলে যায়।
পরে স্থানীয়রা আহত মিজানুরকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত মিজান গোকুল উত্তরপাড়ার আফসার আলীর ছেলে। এ ঘটনার পরপরই নিহত মিজানুরের পক্ষে কয়েকজন যুবক মিলিয়ে রাতেই সন্দেহজনক গোকুল মধ্যপাড়া এলাকার বুলু মিয়ার পুত্র সালমান হোসেনে লেদুকে (৩৯) আটক করে গণপিটুনি দেয়।
এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর আহত লেদুকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। ভর্তির আগেই সেখানে উপস্থিত বিক্ষুব্ধ কয়েকজন যুবক লেদুকে আবারো মারপিট করে। এসময় হাসপাতালের সিসি ক্যামেরাও ভাঙচুর করা হয়। এরপর রাত আনুমানিক ১১টায় লেদু মারা যায়। নিহত লেদু গোকুল ইউনিয়নের বহিষ্কৃত যুবদল নেতা সুমন আহম্মেদ বিপুলের চাচাতো ভাই। লেদু ইউনিয়ন যুবদলের কর্মী ছিলেন। হত্যার খবর পেয়ে বগুড়া সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
বগুড়ার গোকুল ইউনিয়নের স্থানীয়রা জানান, নিহত মিজানুরের সাথে স্থানীয় এক যুবদলের নেতার মধ্যে বিভিন্ন সময় থেকে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। দ্বন্দ্বে জের ধরে এর আগে মিজানুর রহমানের উপর হামলা করা হয়েছিল। সম্প্রতি গোকুল ইউনিয়নের যুবদল নেতা সুমন আহম্মেদ বিপুলকে বহিষ্কৃত করা হয়। এ নিয়ে দ্বন্দ্ব আরও বেড়ে যায়।
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ জানান, হাসপাতালে ভর্তি করার আগেই মিজানুর মারা যান। অপরদিকে হাসপাতালে নেওয়ার সময় মারা যান লেদু।
মিজানুরের নিহত হওয়ার খবর পেয়ে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে যান বগুড়া জেলা বিএনপি’র সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি মোশারফ হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দল, যুবদল, ছাত্রদলসহ অঙ্গ-সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদ জানান, হত্যাকাণ্ডের তদন্তের বিষয়টি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা কাজ শুরু করেছেন। হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই