রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার দুই পুলিশ সদস্যকে রিমান্ড শেষে আদালতের নির্দেশে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তাজহাট মেট্রোপলিটন থানার এএসআই আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে বৃহস্পতিবার বিকালে রংপুর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। রিমান্ড শেষে পিবিআই পুলিশ সুপার জাকির হোসেন আসামিদের আদালতে পাঠান এবং জানান, আসামিরা তদন্তে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তবে তদন্তের স্বার্থে এসব তথ্য এখনই প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
গত মঙ্গলবার আদালতে তাজহাট থানার দুই পুলিশ সদস্যকে হাজির করা হলে পিবিআই পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। বিচারক আসাদুজ্জামান চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন এবং রিমান্ড শেষে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটের সামনে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের গুলিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র আবু সাঈদ নিহত হন। এ ঘটনার পর নিহত আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী ১৮ আগস্ট রংপুরের অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আবু সাঈদ রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন এবং পুলিশের জন্য কোনো হুমকি না থাকা সত্ত্বেও তাকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় এবং বিক্ষোভ শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট পদত্যাগ করেন এবং দেশ ছাড়েন।
মামলায় আরও উল্লেখিত আসামিদের মধ্যে রয়েছেন পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, রংপুর রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি আবদুল বাতেন, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের তৎকালীন কমিশনার মো. মনিরুজ্জামানসহ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। এ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়, এবং ডিআইজি আবদুল বাতেন ও পুলিশ কমিশনার মনিরুজ্জামানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জাকির হোসেন জানান, আসামিদের দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে এবং প্রয়োজনে পুনরায় রিমান্ডের আবেদন করা হতে পারে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল