প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান হওয়ায় গত ১৫ বছরে দৃশ্যত কোনো উন্নয়ন করা হয়নি বগুড়ায়। বরং বগুড়ার নাম নিয়ে করা হয়েছে তিরস্কার। উত্তরাঞ্চলের রাজধানী খ্যাত বগুড়ার উন্নয়নে অনীহার নেপথ্যে ছিল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিহিংসা। কলা দেখিয়ে বগুড়াবাসীকে মুলাও দেননি আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে থাকা শেখ হাসিনা। দেড় দশক ধরে উন্নয়নবঞ্চিত বগুড়াবাসী এবার উন্নয়নের বিভিন্ন দাবি তুলেছেন। বগুড়ায় সাতটি সংসদীয় আসন রয়েছে। এগুলোয় আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরে দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন হয়নি। জেলার জন্য বিশেষ বরাদ্দ, বিশেষ উন্নয়ন কাজ আনতে ব্যর্থ হয়েছেন আওয়ামী লীগ, জাপা ও জাসদের এমপিরা। যে বরাদ্দ পেয়েছেন নিজেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছেন। নিজের এবং পরিবারের উন্নয়নেই ব্যস্ত ছিলেন তাঁরা। উন্নয়নের নামে দফায় দফায় জেলা মন্ত্রী-এমপিরা পরিদর্শন করলেও বাস্তবায়ন হয়নি একটিও। উন্নয়নের নামে লোভ দেখিয়ে গেলেও বাস্তবায়ন করা হয়নি কিছুই। বগুড়া বিএনপির ঘাঁটি বলে প্রতিহিংসায় সব উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় উন্নয়ন করলেও বগুড়াকে দেখেছেন শেখ হাসিনা ভিন্ন চোখে। সচিবালয় বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে বগুড়ার জন্য কাজ করতে গেলে বগুড়া বিএনপির এলাকা বলে তিরস্কারও করা হয়েছে। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন এ জেলার মানুষ। জেলাবাসী বলছেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তারেক রহমানের নেতৃত্বে বগুড়ায় হাসপাতাল, রাস্তাঘাট, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, শিল্পকারখানাসহ যে উন্নয়ন হয়েছিল তা উত্তরের মানুষের জন্য সুফল বয়ে এনেছিল। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বগুড়াকে সিটি করপোরেশন ঘোষণা, বিমানবন্দর স্থাপনসহ নানা উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিলেও সেগুলো থেমে যায় শেখ হাসিনার সরকারের কারণে। উন্নয়নে পিছিয়ে থাকা বগুড়াকে এগিয়ে নেওয়ার দাবি জেলাবাসীর। জেলার উন্নয়নে পৌরসভাকে সিটি করপোরেশন ঘোষণা, বাণিজ্যিকভাবে বিমানবন্দর চালু, দ্বিতীয় বিসিক শিল্পনগরী, বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত রেলপথ স্থাপন, সবজি হিমাগার, কমপক্ষে চারটি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, যমুনা নদীতে ট্যুরিস্ট স্পট নির্মাণ, সার কারখানা স্থাপন, পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল আরও আধুনিকায়ন, করতোয়া নদী সংস্কার, শহরের যানজট নিরসন, কাঁচা সড়ক পাকাকরণ, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ ফিরিয়ে আনাসহ বঞ্চিত হিসেবে চাকরির ব্যবস্থা গ্রহণ, শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে সহজ শর্তে সরকারি ঋণ প্রদানের দাবি জানিয়েছেন বগুড়াবাসী। জানা যায়, প্রতি বছর জেলায় ২০ লাখ মেট্রিক টন সবজি উৎপাদন হয়। সংরক্ষণের অভাবে চাষিরা দাম পান না। সময়মতো বিক্রি করতে পারেন না বলে সবজি নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে জেলায় আধুনিক মানের সবজি হিমাগার স্থাপনের দাবি তুলেছেন তারা। বগুড়ায় উড়ছে না বিমান। ১৯৯৬ সালে বগুড়া সদর উপজেলার এরুলিয়ায় বগুড়া স্টল বিমানবন্দর নির্মাণ শুরু হয়। ২০০০ সালে নির্মাণকাজ শেষ হয়। কিন্তু বিমান ওড়ার কোনো খবর নেই। দীর্ঘ ২৫ বছর অপেক্ষায় থেকেও বিমানবন্দরটি বাণিজ্যিকভাবে চালু না হওয়ায় বগুড়াবাসীও আশাহত। উত্তরের ১৬ জেলার অর্থনীতির গতি বাড়াতে বিমানবন্দর চালু করা অত্যন্ত জরুরি। বিমানে ওড়ার স্বপ্ন দেখছেন বগুড়াসহ উত্তরের মানুষ। বগুড়া বিসিকে নতুন প্লট বরাদ্দ বন্ধ হয়ে আছে দুই দশক ধরে। বগুড়া থেকে সরাসরি সিরাজগঞ্জের সঙ্গে রেলপথ স্থাপন না হওয়ায় ৮ ঘণ্টা রেলপথ ঘুরে ঢাকা পৌঁছাতে হয়। এ রেলপথ স্থাপন হলে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টায় ঢাকা পৌঁছাবেন বগুড়াবাসী। বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চল কৃষি এলাকা হওয়ায় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনেরও দাবি জানান বগুড়াবাসী। বগুড়া জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আলহাজ মোশারফ হোসেন বলেন, ‘বগুড়ায় বেশ কিছু উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করতে হবে। পৌরসভাকে সিটি করপোরেশন ঘোষণার মধ্য দিয়ে বগুড়াকে আধুনিক জেলা হিসেবে গড়ে তোলার দাবি সবার। খেলাধুলার জন্য আধুনিক স্টেডিয়াম, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য আধুনিক হল নির্মাণ, সরকারি বিদ্যালয় স্থাপন, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের আরও আধুনিকায়ন করা দরকার। করতোয়া নদীতে যে সংস্কারকাজ চলছে তার বরাদ্দ বাড়িয়ে ১৮০ কিলোমিটার জুড়ে নদীর যৌবন ফিরিয়ে আনতে হবে।’ বগুড়াবাসীর দাবির সঙ্গে তিনিও একমত বলে জানান। বগুড়া জেলা বিএনপি সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বগুড়াকে মডেল জেলা হিসেবে গড়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার এসে সেসব কবর দিয়ে দেয়। বগুড়ার উন্নয়নের কথা বললেই তারা মুখ ভার করত। বগুড়ার কোনো উন্নয়ন করা হয়নি। বগুড়ায় যে উন্নয়ন করা হয়েছে তা বিএনপির সময়ে।’
শিরোনাম
- শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হয়েছে : রুমিন ফারহানা
- ঢাবি এখনো ফ্যাসিবাদের প্রভাব থেকে পুরোপুরি মুক্ত নয়: রাশেদ খান
- প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন শুরু, জানুন কোন দেশে কখন
- শেখ হাসিনার রায় ঘিরে দেশে কোনো অস্থিরতা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- মালিতে সেনাবাহিনীর অভিযানে ৩১ গ্রামবাসী নিহত
- জামায়াত-এনসিপিসহ ৬ দলের সঙ্গে সংলাপে বসেছে ইসি
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি আবেদনের শেষ দিন আজ
- টরন্টোয় শিরীন চৌধুরীর ‘পরান যাহা চায়’ সঙ্গীত সন্ধ্যা
- সৌদিকে ন্যাটোর বাইরে প্রধান মিত্র ঘোষণা ট্রাম্পের
- 'ব্যানফ ফেস্টিভালে' এভারেস্টজয়ী নিশাতকে নিয়ে তথ্যচিত্র
- সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ইসি ওয়াদাবদ্ধ: সিইসি
- সাবেক ডিএমপি কমিশনারসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ আজ
- নতুন বছরের পাঠ্যবই সরবরাহ শুরু করেছে এনসিটিবি
- ভিসা আবেদন নিয়ে জার্মান দূতাবাসের সতর্কবার্তা
- কাউখালীতে নাশকতার অভিযোগে আটক ৫
- কুমিল্লায় ৪ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক ক্বিরাত সম্মেলন
- সামরিক হস্তক্ষেপ চালালে ট্রাম্পের রাজনৈতিক জীবনের ইতি ঘটবে, মাদুরোর হুঁশিয়ারি
- মধ্যরাতে বাসা থেকে সাংবাদিককে তুলে নিল গোয়েন্দা পুলিশ
- জাতিসংঘ রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিলে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের হত্যার হুমকি ইসরায়েলি মন্ত্রীর
- জাপানে ১৭০ ভবনে অগ্নিকাণ্ড
কী অপরাধ ছিল বগুড়াবাসীর
আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া
অনলাইন ভার্সন
টপিক
এই বিভাগের আরও খবর