রাজবাড়ীর পাংশায় তাছলিমা (৩৫) হত্যাকান্ডের জট খুলেছে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে টাঙ্গাইল থেকে পাংশায় নিয়ে এসে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় তাসলিমাকে। হত্যার পর কালুখালী উপজেলার মোহনপুর ধানক্ষেতে মরদেহ ফেলে রাখা হয়। তাসলিমা টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল থানার পশ্চিমপাড়া গ্রামের দুলু তালুকদারের মেয়ে।
এ ঘটনায় দুই আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার মাদুলিয়া গ্রামের জব্বার মন্ডলের ছেলে মোনসের মন্ডল (৩৫) ও একই উপজেলার বনগ্রাম গ্রামের হাসেম মিয়ার ছেলে আমিন মিয়া (৩২)। এ ঘটনায় এক আসামী পলাতক রয়েছে।
অন্যদিকে পদ্মা নদীতে চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারের জন্য খুন হয় চরমপন্থী নেতা মো. শহিদ মোল্লা (৪৪)। নিহত শহিদ মোল্লা পাবনা জেলার আমিনপুর থানার বড় দুর্গাপুর গ্রামের মো. কানাই মোল্লার ছেলে। এ ঘটনায় রাজবাড়ীর বরাট ইউনিয়নের গোপালবাড়ি গ্রামের ইদ্রিস আলী ছেলে শাকিল খান (২৫) ও একই উপজেলার বালিয়াডাঙ্গী গ্রামের হালিম খানের ছেলে হাসিবুল খান (২২) কে গ্রেফতার করে পুলিশ।
রবিবার সন্ধ্যায় রাজবাড়ীর পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার মোছা. শমিমা পারভীন সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেন। শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে তাছলিমা হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পাংশা উপজেলার নিজের বসতবাড়ি থেকে মোসনের মন্ডল ও আমিন মিয়াকে গ্রেফতার করে পাংশা থানা পুলিশ।
এছাড়া ঢাকার শাহ আলী থানা এলাকা থেকে শাকিল ও গোয়ালন্দ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গ গ্রাম থেকে হাসিবুলকে গ্রেফতার করে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ।
পুলিশ সুপার জানান, ২৫ অক্টোবর বিকালে রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার মাঝবাড়ি ইউনিয়নের মোহনপুর মাঠের ধানক্ষেতে অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পঁচে যাওয়ার কারণে তৎক্ষণাৎ মরদেহ শনাক্ত করা যায়নি। মরদেহ শনাক্তের পাশপাশি হত্যার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে পুলিশ। কয়েকদিন পর ধানক্ষেত থেকে একটি ভ্যানিটিব্যাগ উদ্ধার করা হয় । ভ্যানিটিব্যাগ থেকে তাছলিমার জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া যায়। সেই পরিচয় পত্রের সূত্র ধরে একটি তার নামের নিবন্ধিত সীমকার্ডের ফোন নম্বার পায় পুলিশ। সেই ফোনের তথ্য বিশ্লেষণ করে হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ১৮ তারিখে টাঙ্গাইল থেকে তাকে রাজবাড়ীর পাংশায় নিয়ে আসা হয় তাছলিমাকে। ২০ তারিখে পাংশা থেকে তাকে ধর্ষণ করা হয়। ধর্ষণের পর তাকে হত্যা করে ভ্যানযোগে মরদেহ মোহনপুর মাঠের ধানক্ষেতে ফেলে রাখা হয়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আমিন মিয়া হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন।
অন্যদিকে শহিদ রাজবাড়ীতে ভাড়া বাসায় থাকতেন। গত ১৩ জুলাই (শনিবার) দুপুরের পর বাসা থেকে বের হন। বিকাল ৫টার দিকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাকে হত্যা করে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। পদ্মা নদী থেকে চাঁদা উত্তোলন ও আধিপত্য বিস্তারের কারণে হত্যা করা হয় শহিদকে। হত্যা দায় স্বীকার করে শাকিল খান ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন।
পুলিশ সুপার বলেন, রবিবার বিকালে আসামীরা আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
সম্মেলন কক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ ( অর্থ ও প্রশাসন) শরীফ আল রাজীব, অতিরিক্ত পুলিশ (ক্রাইম এন্ড অপস) মুকিত সরকার, সহকারী পুলিশ সুপার দ্রেববত সরকার উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/এএম