শনিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে ভারতের আগরতলা থেকে ২৬ জন যাত্রী নিয়ে ছেড়ে আসা বাস ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তবে নিছক একটি সড়ক দুর্ঘটনাকে ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে পরিকল্পিত হামলা বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এ অবস্থায় বিষয়টির স্পষ্ট করতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো. জাবেদুর রহমান।
আজ রবিবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ভারত থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাসটিতে হামলা নয়, বরং দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল। তিনি বলেন, গত শনিবার দুপুরে ঘটে যাওয়া সড়ক দুর্ঘটনার খবরটি ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংখ্যালঘুদের উপর পরিকল্পিত হামলা বলে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। নিছক একটি ছোট দুর্ঘটনা নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। মূলত চারলেন সড়কের নির্মাণ কাজের জন্য কুমিল্লা-সিলেট সড়কটি স্বাভাবিকভাবেই সরু এবং বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনা ঘটে।
গতকাল শনিবার দুপুরে আগরতলা থেকে ঢাকাগামী শ্যামলী পরিবহনের ঢাকা-আগরতলা বাসটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার চান্দিয়ারা এলাকা অতিক্রম করার সময় একটি ট্রাক বাসটিকে ওভারটেক করতে গিয়ে চাপ দেয়। এ সময় বাসটি বাম দিকে সরে গিয়ে একটি তিন চাকার ভ্যানকে চাপা দেয়। এতে ভ্যানটি ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং ভ্যান চালক আহত হয়। তবে বাসে থাকা সকল যাত্রী অক্ষত ছিলেন। বাসের ১৭ জন ভারতীয় এবং ৯ জন বাংলাদেশি যাত্রী ছিলেন। ঘটনার পর শ্যামলী পরিবহনের বাসচালক আসাদুল হক ও ভ্যান চালক ইব্রাহিমের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে স্থানীয়রা আহত ভ্যান চালককে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্যামলী পরিবহন বাসের কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি মেহেদী হাসান এবং ভ্যান কর্তৃপক্ষের সাথে বিষয়টি আলোচনা করে মীমাংসা করেন এবং বাসটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্থ ভ্যান গাড়িটি রেকার দিয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়। সেখানে কোন রকম হামলা কিংবা কোন দেশ বা সম্প্রদায়কে কটাক্ষ করে কোন বক্তব্য দেওয়া হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা বাসের চালক মো. আসাদুল হক বলেন, ‘একটি ট্রাক ওভারটেক করতে গেলে আমি ইমার্জেন্সি ব্রেক করে দাঁড়িয়ে যাই। এ সময় পিছনে থাকা একটি তিন চাকার ভ্যানটি এসে ধাক্কা লাগে। এতে ভ্যানটি বাসের পিছনে আটকে যায়। খবর পেয়ে হাইওয়ে থানা পুলিশ রেকার দিয়ে ভ্যানটি সরিয়ে নেয়। দুর্ঘটনায় বাসের কোনো ক্ষতি হয়নি কিংবা যাত্রীরা আঘাতপ্রাপ্ত হননি। বাসে থাকা ভারতীয় যাত্রীদের সাথে স্থানীয় সাধারণ মানুষের কোন বাক-বিতণ্ডা বা কোনরকম ঝামেলা হয়নি। ভারতীয় গণমাধ্যমে বাসে হামলার খবর দেখে আমিও অবাক হয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ