ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পূর্ব বিরোধের জের ধরে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে মিয়াজুল হোসেন (৫০) এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এসময় সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে। বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের নাটাই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মিয়াজুল সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের নাটাই গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে ও চান্দের বাড়ির গোষ্ঠীর লোক। তিনি সদর উপজেলার সিএনজি পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি।
স্থানীয় লোকজন ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের চান্দের বাড়ি গোষ্ঠী ও ছলিম বাড়ির গোষ্ঠীর মধ্যে অধিপাত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই বিরোধ চলে আসছিল। চান্দের বাড়ির গোষ্ঠীর নেতৃত্বে রয়েছেন সাবেক ইউপি সদস্য তকদির হোসেন ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোবারক হোসেন। সলিম বাড়ির গোষ্ঠীর নেতৃত্বে রয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুল্লাহ বাহার, সাবেক ইউপি সদস্য গোলাম মিয়া, সাইদ মিয়া ও বিএনপির নেতা কামাল হোসেন। গত সোমবার রাত থেকে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পূর্ব বিরোধের জেরে বুধবার বেলা দুইটার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে সংঘর্ষ হয়। এ সময় টেটা, বল্লমসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে ব্যাপক ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে। সংঘর্ষ চলাকালে ১০/১২টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে পুরো গ্রাম জুড়ে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে সংঘর্ষটি গ্রামের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে।
এসময় কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়। সংঘর্ষে দাঙ্গাবাজরা বেশ কিছু বাড়িঘর ব্যাপক ভাংচুর চালায়। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নাটাই এলাকায় প্রতিপক্ষের হামলায় চান্দের বাড়ির মিয়াজুল হোসেন আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি দেয়া হয়। সেখানে নেওয়ার কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হয়। সোয়া ছয়টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। আহতরা ক্লিনিকসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাজুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে আনার পর ওই ব্যক্তির শরীরে উচ্চ রক্তচাপ পাওয়া গেছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলা যাবে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোজাফফর হোসেন বলেন, গোষ্ঠীগত বিরোধ ও দ্বন্ধের জের ধরে চান্দের বাড়ির গোষ্ঠী ও ছলিম বাড়ির গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংর্ঘষে আহত একজনের মৃত্যুর খবরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনাস্থলে র্যাব সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন।
বিডি প্রতিদিন/এএ