কুড়িগ্রামে নদীর পানি কমতে শুরু করলেও বন্যা পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে। জেলার নদনদী তীরবর্তী এলাকায় ফসল ও মানুষের বসবাস বিপন্ন অবস্থায় রয়েছে।
গত তিন দিনের ভারি বর্ষণ ও উজান ঢলার ফলে নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছিল। মঙ্গলবার বিকেল থেকে তিস্তা ও দুধকুমর নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তিস্তা নদী কাউনিয়া পয়েন্টে ৩০ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলা নদীর পানি শিমুলবাড়ি পয়েন্টে এবং দুধকুমর নদীর পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে কমেছে। ব্রহ্মপুত্র নদের তিনটি পয়েন্টে পানি বেড়েছে, তবে সব নদী বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
নদনদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চলগুলো এখনও প্লাবিত। এসব এলাকায় রোপা আমন, শাকসবজি, চীনা বাদাম ও মাসকলাইসহ বিভিন্ন ফসল পানির নিচে নিমজ্জিত রয়েছে। জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি বন্যায় চর ও দ্বীপচরের প্রায় ১,৮০০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে রাজারহাট, উলিপুর, চিলমারী, নাগেশ্বরী, ফুলবাড়ী, রৌমারী ও রাজিবপুরের নদী চরের ফসলি জমি নিমজ্জিত হয়েছে।
রাজারাহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়নের কৃষক মতিয়ার রহমান জানান, কয়েকবার তিস্তা নদীর পানি বেড়ে আমনসহ বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় আমরা চিন্তিত।
নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামে গত দু’দিনে প্রায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ব্রহ্মপুত্র নদে বিলীন হয়েছে। অনেক পরিবার খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতে বাধ্য হয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, 'নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। দু-এক দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। তবে জেলার কয়েকটি নদী তীরবর্তী এলাকায় নদী ভাঙন চলছে। জিও ব্যাগ ফেলে নদী ভাঙন রোধের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।'
বিডি প্রতিদিন/হিমেল