সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া স্টেশনে লালমনি ও একতা আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে অন্তত দুজন নিহত ও ৪০ জন আহত হয়েছেন। ভুল সিগন্যালের কারণে এ ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় একতা এক্সপ্রেসের একটি বগি ট্রেনের ইঞ্জিনের ওপরে উঠে যায় এবং দুটি ইঞ্জিন ও দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়। দুর্ঘটনার পর ঐতিহ্য অনুযায়ী তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। কয়েকজন কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। স্বাধীনতার পর গত ৪৩ বছরে পরিবহন খাতে অন্যান্য সেক্টরে উন্নতি হলেও একমাত্র ব্যতিক্রম রেল যোগাযোগ খাত। দেশের পরিবহন ব্যবস্থায় অমিত সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও রেল খাতটিকে পঙ্গু করে রাখা হয়েছে অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে। বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ে ভুগছে দক্ষ লোকবলের অভাবে। রেলওয়ের ওপর একের পর এক কালো বিড়ালের অাঁছড় ওই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে হতাশাজনক অবস্থায় ঠেলে দিয়েছে। রেলওয়ের সৈয়দপুর ও পাহাড়তলীর কারখানায় তৈরি হতো বগিসহ রেলওয়ের সরঞ্জাম। এই দুই কারখানার উৎপাদিত বগি ও অন্যান্য যন্ত্রাংশের মানও ছিল সমীহ করার মতো। কিন্তু অব্যবস্থাপনার কারণে সে দুটি কারখানাও বন্ধ হয়ে গেছে। দুনিয়ার সর্বত্র নিরাপদ পরিবহন হিসেবে রেলওয়ের সুনাম থাকলেও বাংলাদেশ এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। গত সাত বছরে ছোট-বড় মিলিয়ে তিন হাজারেরও বেশি রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে মুখোমুখি ট্রেন সংঘর্ষের ঘটনা ১৭টি। যাতে হতাহত হয়েছে ১ হাজার ২৩৫ জন। বাংলাদেশ রেলওয়েকে বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচাতে দ্রুত সংস্কারের পদক্ষেপ নিতে হবে। বিভিন্ন পর্যায় থেকে কালো বিড়াল সরিয়ে যোগ্য লোকদের ঠাঁই দিতে হবে। রেলওয়েকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টিও ভাবা যেতে পারে।