বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

সাবরেজিস্ট্রি অফিসের দুর্নীতি

অপরাধীদের শাস্তি দিন

সাবরেজিস্ট্রি অফিস আর দুর্নীতি এ দুটি যেন একটি অন্যটির অনুষঙ্গ। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি প্রকাশিত প্রতিবেদনেও দুর্নীতির এই বহুল প্রচারিত বিষয়টি সমর্থিত হয়েছে। প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, দলিল নিবন্ধন থেকে শুরু করে সাবরেজিস্ট্রি অফিসে সেবাগ্রহীতাদের সব ধরনের কাজে টাকা দিতে হয়। সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে নিয়মবহির্ভূত এ অর্থ আদায় করা হয়। টাকা ছাড়া কাজ হয় না। ‘ভূমি দলিল নিবন্ধন সেবায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক ওই গবেষণা প্রতিবেদনে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের বিভিন্ন অনিয়মের তথ্য প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সাবরেজিস্ট্রার অফিসে টাকা ছাড়া কোনো কাজ করানো অত্যন্ত দুরূহ। দলিল লেখার ফি সম্পর্কে সেবাগ্রহীতাদের ধারণা না থাকায় অধিকাংশ দলিল লেখক তাদের থেকে উচ্চহারে পারিশ্রমিক আদায় করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন অজুহাতে সেবাগ্রহীতারা অতিরিক্ত টাকা দিতে বাধ্য হন। দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ভূমি দলিল নিবন্ধন সেবা খাতে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেছে। সেবা দেওয়ার নামে সেবাগ্রহীতাদের বিভিন্নভাবে জিম্মি করা হচ্ছে। সময় ক্ষেপণ করে নিয়মবহির্ভূতভাবে অর্থ ও ঘুষ আদায় করা হচ্ছে। আইনি দুর্বলতা তথা নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে পরিকল্পনা ও উদ্যোগের ঘাটতি থাকায় সাবরেজিস্ট্রি অফিসের দুর্নীতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে ও সর্বগ্রাসী রূপ ধারণ করছে। হয়রানির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। তারা ভূমি অফিসের পিয়ন থেকে শীর্ষ কর্মকর্তা সবার কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছে। এ অবস্থার অবসানে ভূমিসংক্রান্ত সব অফিসে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। দুর্নীতি-অনিয়মের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করাও জরুরি।

এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা থাকতে হবে। তা সম্ভব হলে, বিশেষত দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির বিধান নিশ্চিত করা গেলে একদিকে যেমন সাবরেজিস্ট্রি অফিসকেন্দ্রিক দুর্নীতি বন্ধ হবে, অন্যদিকে সেবাগ্রহীতারা রক্ষা পাবে হয়রানি থেকে।

সর্বশেষ খবর