শীতে কাঁপছে দেশ, চরম ভোগান্তিতে সারা দেশের ভাগ্যহত হতবিহ্বল অসহায় দরিদ্র মানুষ। বিশেষ করে শিশুদের কষ্টের শেষ নেই। মানুষ তো মানুষের জন্যই। তাই আসুন! আমরা অসহায় ও গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াই। একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিই। নিম্নআয়ের মানুষের দুর্ভোগও বাড়তে শুরু করেছে। গরম কাপড়ের অভাবে অসহায় মানুষগুলো রাতে ঘুমাতে পারে না। সমাজের উচ্চস্তরের মানুষ, তাদের পাশে দাঁড়িয়ে একটু মমতার দৃষ্টি দিলে তারা আরামে ঘুমাতে পারে। বেঁচে যাবে প্রচন্ড শীতের কষ্ট থেকে।
শীতার্ত মানুষগুলো কতটা দুর্বিষহ জীবনযাপন করে তা শহর, নগরীর ফুটপাথ, ওভারব্রিজ, মার্কেটের বারান্দা, রেলস্টেশন, বাসস্টেশনসহ যত্রতত্র প্রচন্ড শীতে কুকুরের সঙ্গে মানুষের রাতযাপনের ভয়াবহ দৃশ্য, সেখানে না গেলে বোঝা মুশকিল। মানবতার সেবা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, আল্লাহ ও তাঁর রসুলের নির্দেশ। তাই আসুন শীতার্ত মানুষগুলোর দুর্বিষহ জীবনযাপনে ব্যথিত হয়ে, তাদের পাশে মানবতার হাত বাড়িয়ে দিই, তাদের জন্য গরম কাপড়ের ব্যবস্থা করি। আমাদের একটু সহায়তা, লাঘব করতে পারে, তাদের অসহনীয় কষ্ট ও দুর্বিষহ জীবন। প্রচন্ড শীতের তুলনায় অসহায় গরিব মানুষের প্রস্তুতি অপ্রতুল। তাই ইসলাম, অসহায় ও দুস্থ মানুষের প্রতি সহানুভূতি দেখাতে বিশেষভাবে উদ্বুদ্ধ করে। যার অন্তরে দয়ামায়া আছে এবং যে পরোপকারী হয়, আল্লাহও তাকে ভালোবাসেন। এ প্রসঙ্গে রসুল (সা.) বলেছেন : তোমরা ক্ষুধার্তকে খাদ্য দাও, অসুস্থর সেবা কর এবং বন্দীকে মুক্ত করে দাও। ঋণগ্রস্তকে ঋণমুক্ত কর। সৃষ্টির সেবা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বড় নেকির কাজ, কেয়ামতের ময়দানে এই সামান্য উসিলা নিয়ে, অনেকেই জান্নাতি হবে এবং জাহান্নাম থেকে বেঁচে যাবে। শীতার্ত মানুষের প্রতি সমাজের সামর্থ্যবান, বিত্তশালী ও বিভিন্ন এনজিও সংস্থার কর্মীদের সাহায্য ও সহানুভূতির হাত সম্প্রসারিত করা প্রয়োজন। পর্যাপ্ত পরিমাণে সাধ্যমতো শীতার্তদের পাশে এসে দাঁড়ানো দরকার। সামান্য ভালোবাসাও অসহায় শীতার্ত মানুষকে একটু উষ্ণতার পরশ ও বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখাতে পারে। দুস্থ মানুষের দুর্দিনের সাহায্য, সহানুভূতি ও সহমর্মিতার মানসিকতা যাদের নেই তাদের মনে রাখতে হবে প্রবাদ বাক্য-‘নদীর এপার ভাঙে ওপার গড়ে এই তো নদীর খেলা’, ‘সকাল বেলার ধনীরে তুই ফকির সন্ধ্যাবেলা’। সার্বিকভাবে সহযোগিতা সম্পর্কে আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেছেন : যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর, তবে আল্লাহও তোমাদের সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পদযুগলকে দৃঢ় করে দিবেন। তিনি অন্যত্র ইরশাদ করেন তোমরা খোদাভীতি এবং নেক কাজে একে অপরকে সাহায্য কর এবং গুনাহ ও সীমালঙ্ঘনের ক্ষেত্রে সাহায্য করিও না।
লেখক : গবেষক, ইমাম ও খতিব কাওলার বাজার জামে মসজিদ, দক্ষিণখান ঢাকা।