বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

পাহাড়ধস

সচেতনতা বাড়াতে হবে

প্রতি বছরের জুন, জুলাই ও আগস্টে পাহাড় আর ভূমি ধসে মানুষের মৃত্যু এখন যেন এক স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। দিন দিন ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যাও বাড়ছে। সর্বশেষ পাহাড়ধসে আবারও কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং মহেশখালী ও টেকনাফে একাধিক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। প্রতি বছর ভয়াবহ পাহাড়ধসে প্রাণহানি ও আহত হয়। সম্পূর্ণ এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় বহু বসতভিটা। আশা ছিল পাহাড় রক্ষায় পাহাড়ের কোনাকানচিতে বসবাসকারী প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রাণ রক্ষায় এবার একটা বাস্তব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনেক আশার বাণী প্রচারিত হয়। বলা বাহুল্য, পরে পাহাড় বিপর্যয়ের ঘটনায় মানুষের প্রাণ রক্ষায় তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বর্ষণমুখর রাতে মানুষ শুধু মাইকের ঘোষণা শুনেছে। নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার হুঁশিয়ারি ছিল ঘুমের ঘোরে শোনা সেসব ঘোষণায়। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও বিভিন্ন উপজেলায় পাহাড়ধসে এবং বানের পানিতে ভেসে এ পর্যন্ত আটজন মারা গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। মৃত্যুঝুঁকি এড়াতে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে মাইকিং ও অভিযান চলছে। আসলে তথাকথিত উন্নয়নের নির্যাতন-নিপীড়নে কাহিল পাহাড়গুলো এখন দাঁড়িয়ে আছে লাশের মতো, মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির চাপ সহ্য করার শক্তি তার নেই। বৃষ্টি এলেই পাহাড়ধসের আতঙ্কে থাকে বাংলাদেশ। এ দুর্যোগ কিছুটা প্রাকৃতিক এবং কিছুটা মানবসৃষ্ট। ১৯৯৭ সালে জিআইএস পদ্ধতি ব্যবহার করে খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজার জেলায় ১৬০টি ভূমিধসপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করা হয়। কক্সবাজার জেলায় প্রায় ৩ হাজার পরিবার চিহ্নিত করা হয়েছিল, যারা পাহাড়ের পাশে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস করছে। তাদের ঘরবাড়ির অবস্থান অতি ঝুঁকিপূর্ণ। অন্যান্য পার্বত্য জেলায়ও অনেক পরিবার পাহাড়ের পাশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস করছে। পার্বত্য জেলাগুলোর প্রশাসনকে আরও আন্তরিক হতে হবে। পাহাড় কাটা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ, আইনের যথার্থ প্রয়োগের মাধ্যমে এ অপরাধ অবশ্যই বন্ধ করা সম্ভব।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর