মিয়ানমারের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। এমনিতেই সে দেশ থেকে আসা ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গার বোঝা বইতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। দেশের প্রধান পর্যটন এলাকা কক্সবাজারের পরিবেশ-প্রতিবেশের ওপর হুমকি সৃষ্টি করছে রোহিঙ্গাদের অবস্থান। তাদের পেছনে রাষ্ট্রের যে বিপুল অর্থ ব্যয় হচ্ছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে জনমনে। এ অবস্থায় মিয়ানমার থেকে আর যাতে কেউ বাংলাদেশে প্রবেশ না করে সে ব্যাপারে বিজিবিকে সতর্ক রাখা হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোয় সংঘটিত একাধিক সন্ত্রাসী ঘটনা প্রমাণ করেছে চোখ-কান খোলা রাখার বিকল্প নেই। স্মর্তব্য, বাংলাদেশের বান্দরবানের ওপারে মিয়ানমার সীমান্তের কানপ্লেট ও হাকা শহরে ভারী অস্ত্রসহ সেনা মোতায়েন করেছে দেশটির সামরিক সরকার। সেখানে বসতি ধ্বংস ও নির্যাতনের কথা উল্লেখ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা ইউএনএইচসিআর। সংস্থাটির মতে, গত এক মাস ধরে কানপ্লেট ও হাকায় নিরস্ত্র লোকজনের ওপর নির্যাতন ও গুলি চালাচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। কেটে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট। মিয়ানমারে ১ ফেব্রুয়ারি অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে দেশটির সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের নেতৃত্বাধীন সামরিক বাহিনী। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা ১৬ এপ্রিল সু চিকে স্টেট কাউন্সিলর করে জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠন করে। এ সরকার মূলত দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা এবং বিদেশে নির্বাসিত থেকে কাজ করছে। রেডিও ফ্রি এশিয়ার খবরে বলা হয়েছে, শুধু সেপ্টেম্বরে সেনাবাহিনীর সঙ্গে ১৩২টি লড়াইয় হয়েছে। মিয়ানমারে যা ঘটছে তা সে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ছাড়া প্রতিবেশীর কোনো বিষয়ে আমাদের আগ্রহী হওয়ার প্রয়োজন নেই। আমরা আশা করব মিয়ানমার যেহেতু তার নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সেহেতু তারা প্রতিশ্রুতি পালনে যত্নবান হবে। পাশাপাশি মিয়ানমার সীমান্তের দিকে রাখা হবে তীক্ষ্ণ নজর। যাতে আর একজনও আশ্রয় প্রার্থীর বোঝা বাংলাদেশের ওপর না চাপে।