রবিবার, ২২ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

জিনিসের দাম বেড়েছে

মূল্যস্ফীতিতে পিষ্ট মানুষ

মূল্যস্ফীতির ছোবলে দেশের সিংহভাগ মানুষের এখন নাভিশ্বাস অবস্থা। সরকারের জন্যও ঘোরতর সংকট সৃষ্টি করেছে এ সমস্যা। নিজেদের অস্তিত্বের স্বার্থেই মূল্যস্ফীতি ঠেকাতে তারা তৎপর হয়ে উঠলেও খুব একটা সাফল্য আসছে না। করোনাভাইরাসের কারণে দুই বছর ধরে সারা দুনিয়ার মানুষ ছিল কার্যত অবরুদ্ধ। উৎপাদনব্যবস্থা ছিল স্তব্ধ। সে সংকট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা যখন চলছে তখন রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ দুনিয়াবাসীর জন্য ডেকে এনেছে অশেষ ভোগান্তি। জ্বালানি, ভোজ্য তেল ও গমের দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। বেড়েছে অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের দাম। বাংলাদেশেও অনুভূত হচ্ছে কিশোর কুমারের সুবিখ্যাত গান ‘জিনিসের দাম বেড়েছে মানুষের দাম কমেছে’র বাস্তবতা। সরকারের এক যুগের সব সাফল্য গিলে খাওয়ার চেষ্টা করছে মূল্যস্ফীতির আপদ। করোনাভাইরাস ও রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের কুফল হিসেবে দুনিয়াজুড়ে খাদ্যাভাব দেখা দিতে পারে এমন আশঙ্কা জাতিসংঘ মহাসচিবের। ব্রিটেনের মতো শক্তিশালী অর্থনীতিতেও মূল্যস্ফীতি ভয়াবহ থাবা বিস্তার করেছে। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে অগ্রসর দেশ শ্রীলঙ্কার মানুষ দুর্ভিক্ষের ভয়ে সময় কাটাচ্ছে। পাকিস্তানে ডলারের দাম ২০০ রুপি ছাড়িয়েছে। রাশিয়ার মূল্যস্ফীতিও ১৮ শতাংশের কাছাকাছি। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার পূর্বাভাস, এ বছর খাদ্যমূল্য ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় আমদানিনির্ভর পণ্যগুলোর মূল্য সমহারে বেড়েছে দেশের বাজারে। ফলে সরকারের হিসাবে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের ধারেকাছে থাকলেও বাস্তবে সাধারণ মানুষের ওপর প্রভাব পড়েছে এর কয়েক গুণ বেশি। মূল্যস্ফীতি যেহেতু এখন এক নম্বর সমস্যা; সেহেতু তা নিয়ন্ত্রণে সরকারকে প্রবৃদ্ধি অর্জনের চেয়েও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ চাল-ডাল-তেলের দাম বাড়লে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাদের দুর্ভোগ বাড়ে। এ সমস্যার সমাধান করা না গেলে সরকারের গ্রহণযোগ্যতা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। মূল্যস্ফীতি রোধে অর্থনীতির লাগাম শক্ত হাতে টেনে ধরতে হবে। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি রোধকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে। এর কোনো বিকল্পই নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর