বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

কালিদাস

কালিদাস

কালিদাস বাল্মীকি ব্যাসের পর সর্বাধিক খ্যাতিসম্পন্ন সংস্কৃত কবি ও নাট্যকার। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন ও আবির্ভাবকাল সম্পর্কে নানারকম মতবাদ প্রচলিত আছে। এক পক্ষ তাঁকে খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতকের কবি মনে করে। এ ক্ষেত্রে তাঁর মালবিকাগ্নিমিত্র নাটক প্রধান সূত্র হিসেবে কাজ করেছে, কারণ এ নাটকটি ওই সময়কার শূঙ্গবংশীয় রাজা অগ্নিমিত্রের কাহিনি অবলম্বনে তাঁরই জীবদ্দশায় রচিত বলে গবেষকদের ধারণা। অন্য একটি মতে কালিদাস খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতকে জন্মগ্রহণ করেন এবং কথিত হয় যে, তিনি উজ্জয়িনীর রাজা বিক্রমাদিত্যের সভার নবরত্নের অন্যতম ছিলেন। তাঁর জন্ম সম্পর্কে অনেক মতবাদের মধ্যে এ দুটিই প্রধান। কালিদাসের জন্মকালের মতো জন্মস্থান নিয়েও বিতর্ক আছে। কারও কারও মতে তিনি ছিলেন পশ্চিম মালবের অধিবাসী; আবার কেউ কেউ তাঁকে বাঙালি বলেও মনে করেন। কালিদাসকে নিয়ে অনেক কিংবদন্তি প্রচলিত আছে। কথিত হয় যে, বাল্যকালে অনাথ হয়ে পড়লে গোপালকরা কালিদাসকে লালনপালন করেন। ফলে তাঁর বিদ্যার্জনের সুযোগ হয়নি। কিন্তু ঘটনাচক্রে এক বিদুষী রাজকন্যার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। দুর্বিনীতা রাজকন্যাকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য মন্ত্রীর পরামর্শে রাজা এ বিয়ে স্থির করেন। বিয়ের পর কালিদাসের মূর্খতার কথা জেনে রাজকন্যা মর্মাহত হন। কিন্তু তিনি কালিদাসকে কালিকাদেবীর আরাধনা করে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য অনুপ্রাণিত করেন। দেবী কালিদাসের আরাধনায় প্রসন্ন হয়ে তাঁকে আশীর্বাদ করেন। এরপর কালিদাস লেখাপড়া শিখে বেদ, রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণ, ইতিহাস, কাব্য, অলংকার, ছন্দ, ব্যাকরণ, জ্যোতিষ, দর্শনশাস্ত্র, অর্থশাস্ত্র ইত্যাদি বিষয়ে পারদর্শী হয়ে ওঠেন এবং তাঁর মধ্যে অভিনব কবিত্বশক্তির প্রকাশ ঘটে। পরবর্তীকালে তিনি নিরবচ্ছিন্নভাবে সাহিত্য সাধনা করেন এবং তাঁর রচনায় অধীত বিদ্যার গভীর প্রভাব পড়ে।   

সুদীপ্ত সুজন

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর