বুধবার, ৩১ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি

নিম্ন আদালতেও গতি সৃষ্টি হোক

বিলম্বিত বিচারের আরেক নাম বিচারহীনতা। এ বিষয়ে বিচারক, আইনজীবী কারোরই দ্বিমত নেই। তারপরও দেশের আদালতগুলোতে আকাশসমান মামলার স্তূপ গড়ে উঠেছে। বিলম্বিত বিচারের অভিশাপ থেকে বিচারপ্রার্থীদের রক্ষায় আদালত সংশ্লিষ্টদের অঙ্গীকার থাকলেও তা বাস্তবে রূপ পাচ্ছে না নানা সীমাবদ্ধতায়। দেশে মামলাজটের পেছনে বেশ কিছু কারণ জড়িত। এর একটি হলো মামলার বিপরীতে বিচারকের সংখ্যা কম। দ্বিতীয়ত, আইনজীবীদের একাংশের মধ্যে মামলা ঝুলিয়ে রাখার অনৈতিক মনোভাব, তৃতীয়ত, আদালতের বাইরে সমঝোতার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির যথাযথ উদ্যোগ না থাকা। ভূমি সংক্রান্ত মান্ধাতা যুগের আইনও দেশে অনাকাক্সিক্ষতভাবে পারিবারিক ও সামাজিক বিরোধ সৃষ্টি এবং একের পর এক মামলার উদ্ভব ঘটাচ্ছে। মামলাজট কমাতে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। এর ফলে সব পুরনো ফৌজদারি মামলা নিষ্পত্তিতে গতি এসেছে। প্রধান বিচারপতির উদ্যোগে দফায় দফায় গঠন করা হচ্ছে বিশেষ বেঞ্চ। এমন ১০টি বিশেষ বেঞ্চ বৃহস্পতিবার মাত্র সোয়া ২ ঘণ্টায় নিষ্পত্তি করেছে জামিন-সংক্রান্ত পুরনো ৩ হাজার ৪৯১টি মামলা। ফৌজদারি আপিল নিষ্পত্তিতে প্রধান বিচারপতি আগামী বৃহস্পতিবারের জন্য গঠন করে দিয়েছেন আরও বিশেষ ১০ বেঞ্চ। ওই দিন ২০২০ সাল পর্যন্ত দাখিল হওয়া ফৌজদারি আপিল আবেদনের শুনানি গ্রহণ করে নিষ্পত্তি করা হবে। হাই কোর্টের পাশাপাশি আপিল বিভাগও পুরনো মামলা নিষ্পত্তিতে সক্রিয়। গত সপ্তাহে আপিল বিভাগের দুটি বেঞ্চে প্রায় ৩০০টি পুরনো মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। এর আগে ২ মার্চ ৩ হাজার ২০০ মামলা নিষ্পত্তি করেছেন বিশেষ নয় বেঞ্চ। গত বছর ২০ ও ২১ এপ্রিল দুই দিনের জন্য ১৩টি বেঞ্চ গঠন করে দিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি। ওই দুই দিনে ৮ হাজার ৫১৭টি জামিন-সংক্রান্ত মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়। সর্বোচ্চ আদালত এবং উচ্চ আদালতে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হলেও নিম্ন আদালতে মামলা নিষ্পত্তিতে কাক্সিক্ষত গতি আনা যাচ্ছে না। সংকট মোচনে বিচারক সংখ্যা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর