মাদক দেশের যুবসমাজের জন্য সমূূহ সর্বনাশের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আইনশৃঙ্খলার জন্য হয়ে উঠছে মূর্তমান সমস্যা। আশা করা হয়েছিল, জুলাই গণ অভ্যুত্থানের পর মাদক নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর হবে। মাদকের গডফাদার বলে কথিত নেতা নামধারীরা সবাই আটক বা পলাতক হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ পাবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, জুলাই গণ অভ্যুত্থানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের একাংশ মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে- এমন অভিযোগও উঠছে। তাদের কারণে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনে ভয় পাচ্ছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চাঁদাবাজির অভিযোগে গুলশান থেকে গ্রেপ্তার হওয়া সমন্বয়ক পরিচয়দানকারী রিয়াদসহ পাঁচজন শুধু চাঁদাবাজিই নয়, তারা মাদক সিন্ডিকেটেরও সদস্য। এ ধরনের শতাধিক তরুণ সমন্বয়ক পরিচয় ব্যবহার করে সারা দেশে একটি শক্তিশালী মাদক সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। গুলশান-বনানীসহ অভিজাত এলাকায় আগে যেসব মাদক বাণিজ্য ছিল ৫ আগস্টের পর তা দখল করেন সমন্বয়ক নামধারীরা। এ সুযোগে এলাকার প্রভাবশালী মাদক কারবারিরা তাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে। পরবর্তী সময়ে এসব সমন্বয়ক পরিচয়ধারীকে ব্যবহার করে নিরাপদে মাদক আনা-নেওয়ার কাজে। তাদের মাধ্যমে সারা দেশে সমন্বয়ক পরিচয়ধারী শতাধিক ব্যক্তিকে নিয়ে গড়ে তোলা হয় মাদক পরিবহনের নিরাপদ সিন্ডিকেট। ৫ আগস্টের পর নতুন সিন্ডিকেটের বদৌলতে মাদক ভোক্তার সংখ্যাও বেড়ে গেছে। মাদক পরিবহন এমনকি হোম ডেলিভারি দেওয়া এখন অনেক নিরাপদ হয়ে উঠেছে। জুলাই গণ অভ্যুত্থান দেশবাসীর মনে শুদ্ধ সমাজ ও রাষ্ট্রকাঠামো গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখিয়েছিল। সে স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের একাংশের পদস্খলনে। মানুষ অপরাধীদের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারছে না মবের ভয়ে। আশা করব, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অপরাধীদের অপরাধী হিসেবে দেখবে। যে পরিচয়েই তারা অপরাধবৃত্তিতে জড়িত হোক না কেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। জুলাই গণ অভ্যুত্থানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে যারা অপরাধ পেশায় জড়িত হচ্ছে, তাদের নিছক অপরাধী হিসেবে দেখতে হবে।