শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ : শফিক সাদেকী

অভিনয়টা আমার রক্তে মিশে আছে

আলী আফতাব

অভিনয়টা আমার রক্তে মিশে আছে

অভিনয় জগতের এক পরিচিত মুখ শফিক সাদেকী। মাঝে লম্বা সময় অভিনয়ে অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। কিন্তু এবারের ঈদে দুটি নাটকের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ছয় বছর পর অভিনয় জগতে ফিরেছেন তিনি। নাটক ও সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে আজ তার ইন্টারভিউ—

 

হঠাৎ করে অভিনয় থেকে দূরে ছিলেন কেন?

দীর্ঘদিন ক্যামেরার সামনে দাঁড়াইনি। তার মানে এই নয়, অভিনয় ছেড়ে দিয়েছি। অথবা মিডিয়া ছেড়ে দিয়েছি। অভিনয়ে না থাকলেও কাজ করেছি ক্যামেরার পেছনে। অসংখ্য নাটক, বিজ্ঞাপন এমনকি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ করেছি। এতদিন পর্দায় আমাকে না দেখে আমার আত্মীয়স্বজন এমনকি ভক্তদের একটা কমন প্রশ্ন ছিল। কেন অভিনয় করছি না? এ প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক ব্যস্ততার কারণে অভিনয় করতে পারিনি। তবে এখন থেকে কাজে নিয়মিত হয়েছি। অভিনয়ের এ জায়গাটি থেকে সরে যাওয়া সম্ভব নয়। তবে এটুকু বলতে পারি, আজ আমার ফেরার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান ভক্তদের। তাদের জন্যই আমি অভিনয়ে ফিরেছি। তাই ভক্তদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

এবার ঈদে আপনার দুটি নাটক প্রচার হলো। কেমন সাড়া পেয়েছেন? 

অভিনয়টা আমার রক্তে মিশে আছে। অনেক দিন পর হয়তো ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছি কিন্তু অভিনয় তো আর ভুলে যাইনি। তারই প্রমাণ পেয়েছি মাহমুদ দিদারের পরিচালনায় ‘কষ্ট পুরুষ’ শিরোনামের এই টেলিছবির মধ্যদিয়ে। এটি  ঈদের দ্বিতীয় দিন দীপ্ত টিভিতে প্রাচার হয়েছে। অনেক পরিচিত অপরিচিত মানুষের ফোন পেয়েছি। নিজের কাছেও অনেক ভালো লেগেছে এত মানুষের ভালোবাসা পেয়ে। আর এম সাখাওয়াত হোসেনের ‘ডটকম ঢাকা’ নামের একটি নাটক দেশ টিভিতে প্রচার হবে সামনে।

মিডিয়ার পথ চলার গল্পটা একটু বলুন?

মঞ্চ নাটকের মধ্যদিয়ে অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু হয় আমার। নাট্যদল নাট্যকেন্দ্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম অনেক বছর। বেশকিছু জনপ্রিয় নাটকে অভিনয় করেছি আমি। এর পাশাপাশি একসময় টিভি ও রেডিও নাটকে কাজ করা শুরু করি। রেডিওর অনেক নাটকে বেশকিছু গুণী মানুষের সঙ্গে কাজ করেছি আমি। বিটিভির অনেক জনপ্রিয় নাটকে অভিনয় করেছি আমি।

অভিনয়ের পাশাপাশি আমি বিটিভির প্রায় ১৭টি নাটকের চিত্রনাট্য লিখেছি। আমার অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘নিঃশ্বাসে বিশ্বাসে’, ‘সেই তুমি এলে’, ‘চেনাজন চেনা মন’, ‘অন্তরে’সহ অনেক নাটক। আর ধারাবাহিক নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘সুবর্ণ সময়’, ‘এক জনমে’, ‘বড় বাড়ি’, ‘জলাশয় কত দূরে’, ‘মাটির মায়া’, ‘কোন কাননের ফুল’ উল্লেখযোগ্য।

বর্তমান সময়ের নাটকের অবস্থা সম্পর্কে কিছু বলুন?

আসল ব্যাপারটা হলো, আমাদের সময়ের কাজ আর এখনকার কাজের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য। তখনকার নাটকের কথা দর্শক এখনো মনে রেখেছে। কিন্তু এখন কেন মনে রাখতে পারছে না। কারণ এখন এত চ্যানেল হয়েছে যে, দর্শক তাদের মনে ঠাঁই করে নিতে পারার মতো কোনো নাটক দেখতে পান না। এক শিল্পীকে প্রতিদিন একটানা দুই তিনটি সেটে যেতে হচ্ছে। কি অভিনয় করছেন সেটা তিনিই ভালো জানেন। অভিনয়ের জন্য ন্যূনতম প্রস্তুতি দরকার। যা নেওয়ার সময় ওই শিল্পীর নেই। শুটিং সেটে গিয়ে স্ক্রিপ্ট কি হবে তা জানতে পারছেন। অথচ আমাদের সময়ে আমরা আগে স্ক্রিপ্ট পেয়েছি। সেটা নিয়ে ভাবনার জায়গা ছিল। সহশিল্পীর সঙ্গে বসে আলোচনা করেছি।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

আমার খুব ইচ্ছা একটি ডিজিটাল ফিল্মে কাজ করব। এরই মধ্যে গল্পের কাজ চলছে। ইচ্ছা আছে এ বছরের শেষের দিকে ছবির কাজটিতে হাত দেব।

সর্বশেষ খবর