বৃহস্পতিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত ইরফান খানের সেই সাক্ষাৎকার

বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত ইরফান খানের সেই সাক্ষাৎকার

ইরফান খান অভিনয় করেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘ডুব’ ছবিতে। এ ছবির শুটিংয়ে অংশ নিতে ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে ঢাকায় আসেন। এ সময় নিজের অনুভূতির কথা জানিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এক সাক্ষাৎকার দেন তিনি। ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ হয়। সাক্ষাৎকারটির চুম্বক অংশ এখানে তুলে ধরা হলো। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলেন জাকারিয়া সৌখিন

 

প্রথমেই ‘ডুব’ নিয়ে জানতে চাই। আপনি ‘ডুব’-এ কেন ডুবে গেলেন?

খুব সহজ, এই ফিল্মের গল্পটি ভালো লেগেছে। আর আমার চরিত্রটি অন্যরকম। এ ধরনের চরিত্রে আমি আগে কাজ করিনি। একজন অভিনেতার জন্য এমন সুযোগ হাতছাড়া করা ঠিক হতো না।

 

 শঙ্কা হয়নি, বাংলাদেশি ফিল্ম, বাংলাদেশি নির্মাতা- কেমন হবে?

শুনুন, দেশ-ভাষা-সংস্কৃতির তফাৎ দিয়ে ফিল্মকে বিচার করা যাবে না। ফিল্মের শক্তি অনেক। একটি ফিল্ম পুরো পৃথিবীকে এক করে ফেলতে পারে। তাই পৃথিবীর কোন কোণে বসে কে কী অসাধারণ ভাবনা ভাবছে, তা বলা যাবে না। তাই যে কোনো

 প্রস্তাবই মনোযোগ দিয়ে ভাবি, বিচার করি, তারপর আগ্রহ জম্মালে কাজ শুরু করি। আমি মোস্তফার ফিল্ম দেখেছি। তার গল্প বলার ধরন অসাধারণ। চরিত্রগুলোর মধ্যে সম্পর্কের যে রসায়ন তৈরি হয়, তা আমাকে মুগ্ধ করেছে। বিশেষ করে ‘পিঁপড়াবিদ্যা’ আমাকে মোস্তফার সঙ্গে কাজ করতে অনুপ্রাণিত করেছে। 

বাংলাদেশের সিনেমা, গান কিংবা অন্যকিছু সম্পর্কে কি আগে থেকে ধারণা ছিল?

সত্যি বলতে তেমন কোনো ধারণা ছিল না। তবে কিছু গান শুনেছি। যেমন অর্ণব। অর্ণবের গান আমার ভীষণ ভালো লেগেছে। ওর সঙ্গে দেখাও হলো এবার।

 

‘ডুব’-এ অভিনয় অভিজ্ঞতা কেমন হলো?

আমার জন্য এই ফিল্মটা চ্যালেঞ্জিং ছিল। প্রধান কারণ বাংলা ভাষা এবং বাঙালি সংস্কৃতি। আমি সেটা আয়ত্ত করতে চেয়েছি। তবে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ছিল মোস্তফার হুটহাট  ইম্প্রোভাইজেশন। স্ক্রিপ্টে যেভাবে লেখা তার থেকে বেরিয়ে প্রায়ই সে নতুন কিছু করতে চাইত। সেটা চমৎকার হলেও, আমার জন্য কষ্টের ছিল।

 

আপনি তো এর আগেও একটি বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছিলেন।

হ্যাঁ- শ্যাডোস অব টাইম। কিন্তু ওটা শুধু বাংলা নয়, জার্মান ভাষাও ছিল।

 

জাভেদ হাসান [ডুব-এ ইরফানের চরিত্রের নাম] হয়ে ওঠার জন্য আপনার প্রস্তুতি কেমন ছিল?

আমি জাভেদ হাসান হওয়ার আগে বাঙালি হতে চেয়েছি। শুটিংয়ের আগে প্রতিদিন মোস্তফার সঙ্গে স্কাইপেতে আলাপ হতো। খুঁটিনাটি জেনেছি। মোস্তফা রিহার্সেলও করিয়েছে। আমার সহশিল্পীদের ছবি [স্টিল ছবি] নিয়েছি। ছবি দেখে দেখে তাদের আপন করে নিতে চেয়েছি।

 

আপনার স্ত্রী তো বাঙালি। তার নামটা কিন্তু [সুতপা শিকদার] তিনি কোনো হেল্প করেননি?

সে তো অনেক ধারণা দিয়েছে। আর বাঙালি স্ত্রী আছে বলেই তো বড় কোনো বিপদে পড়িনি। এতদিন একসঙ্গে বসবাস করে তার কিছু বিষয় তো আমার মধ্যেও প্রভাব ফেলেছে।

 

বলিউড ছাপিয়ে হলিউড- অনেক নামি নির্মাতার সঙ্গে অভিনয় করেছেন। মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নির্মাতা হিসেবে কেমন?

আমি আগেই বলেছি, তার গল্প বলার ধরন অসাধারণ, তার ফিল্ম দেখে ভালো লেগেছে। নির্মাতা হিসেবে মোস্তফা আমাকে আগেই মুগ্ধ করেছে, শুটিংয়ে এসে মুগ্ধতা আরও বেড়েছে। অভিনেতা হিসেবে আমি তার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। 

 

প্রথম হলিউড ফিল্ম ‘এ মাইট হার্ট’ [২০০৭]। হলিউড নিয়ে ভাবনা কী?

কোনো আলাদা ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে আমার আলাদা ভাবনা নেই। আমি মনের আনন্দে সবখানে শুধু কাজ করে যেতে চাই।

 

আপনাকে ভার্সেটাইল এবং ন্যাচারাল অ্যাক্টর বলা হয়। ন্যাচারাল অ্যাক্টিংয়ের রহস্য কী?

কোনো রহস্য নেই। ডিরেক্টরের ইশারায় আমি আমার মতো করে চরিত্রগুলো ফুটিয়ে তুলি শুধু।

সর্বশেষ খবর