কয়েক বছর ধরেই গানের বাজার তলানিতে এসে ঠেকেছে। একদিকে গানে বিনিয়োগ কম, অন্যদিকে নাটকের অনুষঙ্গ হিসেবে গানকে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর মধ্যেও কিছু গান হচ্ছে উৎসবের জন্য। বিস্তারিত লিখেছেন - পান্থ আফজাল
বেশ কয়েক বছর ধরেই দেশের অডিও বাজার মুখ থুবড়ে পড়েছে করোনার ধাক্কায়। অডিও লেবেলে শিল্পীদের গান প্রকাশ বলতে গেলে তেমন করে হচ্ছেই না। কোনো কোনো শিল্পী আবার অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানে ধরনা না দিয়ে নিজেরাই নিজেদের ইউটিউব চ্যানেলে ইচ্ছামাফিক গান প্রকাশ করছেন। অডিও ইন্ডাস্ট্রি হয়ে পড়েছে ডিজিটাল মাধ্যমনির্ভর। এ মাধ্যমে গান প্রকাশ হওয়ার শুরুটা ভালো হলেও এখন গানে বিনিয়োগ খুব কম করছেন প্রযোজকরা। অন্যদিকে অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শিল্পীর গানকে ব্যবহার করছেন নাটক-টেলিফিল্মে। কারণ গানের চেয়ে নাটকে বিনিয়োগটাকেই লাভজনক মনে করে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো। সাউন্ডটেক, ধ্রুব মিউজিক স্টেশন, লেজারভিশন, জি-সিরিজ, সিএমভি, সিডি চয়েস, ঈগল মিউজিক, মাই সাউন্ড, অনুপম মিউজিক, সুরাঞ্জলিসহ বেশির ভাগ প্রথম সারির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের রয়েছে নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল। তবে এসব চ্যানেল এখন গান নয়; নাটক ও নাটকের অনুষঙ্গ হিসেবে গান প্রকাশ হচ্ছে। উৎসবে খুব স্বল্প পরিসরে গান করছে এ প্রতিষ্ঠানগুলো। আবার শ্রোতা আবেদন বাড়াতে গান প্রকাশ হচ্ছে মিউজিক ভিডিও আকারে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবারের ঈদে বেশির ভাগ প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের গান প্রকাশের সংখ্যা খুবই কম। তাই ঈদের অডিও বাজার নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা। নতুন গানের আয়োজন কম। ব্যক্তিগত স্টুডিওগুলোতে চলছে নতুন কিছু গানের কাজ। অন্যদিকে তারকা শিল্পীসহ নবীনরা অল্প ব্যস্ত স্টেজ শো নিয়ে। আর উৎসবে প্রকাশ হয়েছে কুমার বিশ্বজিৎ, ফাহমিদা নবী, আসিফ আকবর, আঁখি আলমগীর, সন্দীপন, বেলাল খান, কণা, ন্যানসী, সালমা, লোপা, তানজীব সারোয়ার, নোলক, সফিক তুহিন, মিনার, স্বপ্নীল সজীব, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, মমতাজ, কিশোর, সানিয়া সুলতানা লিজা, শান সায়েক, লুৎফর হাসান, বাপ্পা মজুমদার, বাঁধন সরকার পূজা, আভরাল সাহির, সাদী, সজল, সামিনা চৌধুরী, বিউটি, ঝিলিক, ঐশী, নদী, পড়শী, কাজী শুভ, আরিফিন রুমি, বেলাল খান, ড. মাহফুজুর রহমান, শাওন গানওয়ালাসহ বেশকিছু নতুন-পুরনো শিল্পীদের গান। আরও বেশকিছু রয়েছে প্রকাশের অপেক্ষায়। এবারের উৎসবের গানের মধ্যে রয়েছে ফাহমিদা নবীর ‘আমি তোমার সমাধিতে এসেছি’ এবং ‘এমন কেন হয়’, আসিফ আকবরের ‘পাল্টা- ফা ফা ফা’, ‘এইতো সেদিন’, ‘ভাই’, ‘বকবক টগবগ’, আঁখি আলমগীর ‘কেন এত ভয়’, লিজার ‘চাই তোমায়’, বেলাল-লোপার ‘সুবহানাল্লাহ’, বেলাল-মমতাজের ‘বাপের বড় পোলা’, শুভ্রদেবের ‘গার্লফ্রেন্ড’, তৌসিফের ‘ভালোবাসো কিনা’, দিলশাদ নাহার কণার ‘মন ভালো’, ‘তোমারই আছি’ (ইমরান), রেজওয়ানা বন্যা-স্বপ্নীলের ‘মঙ্গলবারতা’, কুমার বিশ্বজিতের ‘প্রেমের মন্ত্র’, বুশরা শাহরিয়ারের ‘একশ নালিশ’, কিশোরের ‘কান্দে রে ভাই কান্দে’, সন্দীপনের ‘ও ঢাকি বাজা’সহ বেশকিছু গান। ধ্রুব মিউজিক স্টেশনের কর্ণধার ও সংগীতশিল্পী ধ্রুব গুহ বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে রিলিজ দিচ্ছি কিছু। তবে কয়েক বছর তো কাজই করতে পারিনি করোনা পরিস্থিতিতে। তবে এই রোজার ঈদে কম হলেও কোরবানি ঈদের জন্য ফুল প্রিপারেশন নিচ্ছি। গানসহ ভিডিও মুক্তি পাবে কোরবানির ঈদে। যদিও আমরা সারা বছরই টুকটাক গান-ভিডিও রিলিজ করি। নতুনদের প্রাধান্য দিয়ে এই ঈদে কিছু গান তৈরি রয়েছে। এর মধ্যে জিসান শুভ, লুৎফর হাসান, এসডি প্রিন্স, আসিফ-মিমির দ্বৈত গান রয়েছে। মিনার, তানজীব সারোয়ারের গানগুলো ভিডিও আকারে কোরবানিতে অবমুক্ত করার প্ল্যান রয়েছে।’
