বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার : সিয়াম আহমেদ

চরিত্রটির সঙ্গে অনেক আবেগ জড়িত

চরিত্রটির সঙ্গে অনেক আবেগ জড়িত
তারকা অভিনেতা সিয়াম আহমেদ। খুব কম সময়েই ঢাকাই সিনেমায় নিজের অবস্থান পোক্ত করে নিয়েছেন। প্রথমবারের মতো ‘বাবা’ হওয়া, ‘শান’র ব্যবসায়িক সাফল্য- সব মিলিয়ে তাঁর দিনকাল ভালোই যাচ্ছে। ‘পাপপুণ্য’ মুক্তির পর এবার তিনি ২৩ সেপ্টেম্বর ‘অপারেশন সুন্দরবন’-এ মেজর সায়েম সাদাত হয়ে সবার সামনে আসছেন।  ২৮ অক্টোবর হাজির হবেন ‘দামাল’ হয়ে। তাঁর সঙ্গে সাম্প্রতিক কাজ নিয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

বাসায় নাকি? আদরের পুত্র ও তাঁর মা কেমন আছেন?

হুমম... বাসায় আছি। কিছুদিন রেস্টে। আর আলহামদুলিল্লাহ, বাচ্চা আর তার মা ভালো আছে। যদিও বাচ্চার মা খুবই প্রেসারে আছে সন্তানের দেখাশোনায়।

 

‘অপারেশন সুন্দরবন’ মিশন তো এখনো শেষ হয়নি। ২৩ সেপ্টেম্বর মুক্তি। দর্শক এটি কেমনভাবে নেবে?

আমাদের অনেক দিনের পরিশ্রমের ফল হচ্ছে এই সিনেমা। আমরা যথেষ্ট সময় নিয়ে কাজটি করেছি। দীপনদা অনেক সময় নিয়ে, স্টাডি করে এই প্রোজেক্টটি নামিয়েছেন। এটি সবার কাছেই একটা স্বপ্নের কাজ। হয়তো কাজটি কারও কাছে ভালো লাগবে, কারও কাছে লাগবে না। তবে ডিরেক্টর সম্পূর্ণ ডেডিকেশন দিয়ে তৈরি করেছেন কাজটি দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্য করার জন্য। অনেকেই মনে করছেন, ‘অপারেশন সুন্দরবন’ র‌্যাবের সাফল্যগাথা ডকুমেন্টারি ধরনের সিনেমা, এটা একেবারে নয়। এটি পুরোপুরি মূল ধারার সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক সিনেমা; যেখানে অ্যাকশন, সাসপেন্স, আবেগ, প্রেম, গান, দর্শক বিনোদিত হওয়ার সব উপকরণই আছে। তবে তা অথেনটিকভাবে এসেছে, সিনেমাটিক স্টাইলাইজেশন দিয়ে। গণমানুষকে কানেক্ট করার সিনেমা অপারেশন সুন্দরবন। সেই সঙ্গে ক্লাস পিপল যেন পছন্দ করে সে চেষ্টাও রয়েছে, যেটি দর্শকরা ২৩ তারিখে প্রেক্ষাগৃহে দেখতে পাবেন।

 

মেজর সায়েম সাদাত হয়ে ওঠার গল্প জানতে চাই।

এই চরিত্রটির সঙ্গে আমার অনেক আবেগ জড়িত। প্রথম যখন এই চরিত্রটি সম্পর্কে আমাকে ব্রিফ করা হয়, তখন ছিল শুধুই মেজর সায়েম। কিন্তু আমি তাঁদের অনুরোধ করেছিলাম এটির সঙ্গে ‘সাদাত’ যোগ করতে। কারণ আমি চেয়েছিলাম স্ক্রিনে যেন ‘সায়েম সাদাত’ হয়ে সবার সামনে আসতে পারি। বলতে পারেন কেন? আসলে ২০১৪ সালে  শোবিজে আমি আত্মপ্রকাশ করি রেদওয়ান রনির ‘ভালোবাসা ১০১’র মাধ্যমে। যেটিতে আমার সহশিল্পী ছিল সায়েম সাদাত। সে খুবই অল্প বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে যায়। সেই ইমোশনের জায়গা থেকে আমিও চেয়েছি ‘অপারেশন সুন্দরবন’-এ মেজর সায়েম সাদাত ক্যারি করতে। অন্তত সে যেন এই নামের মাধ্যমে আমাদের সবার মাঝে বেঁচে থাকে। ওর ফ্যামিলি মেম্বার সিনেমাটি দেখলে জানবে, সায়েম সাদাত এখনো আছে। 

 

গহিন সুন্দরবনে শুটিং অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

গহিন অরণ্যে অপারেশন লিড করতে হয়েছে আমাকে। শুধু ফিজিক্যাল এটাচমেন্টই নয়, মেন্টাললি যুক্ত থাকতে হয়েছে সবসময়। এমনো হয়েছে যে, শুটিং অফ করে স্পিডবোটে অপেক্ষা করতে হয়েছে বাঘের স্মেল ও পায়ের ছাপচিহ্ন দেখার কারণে। দুর্গম এলাকায় আমার লিডারশিপে পুরো টিম অপারেশনে ছিল। যেখানে আমরা শুটিং করেছি, সেখানে আগে শুটিং করার কোনো রেফারেন্স ও অভিজ্ঞতা ছিল না। যেখানে দাঁড়িয়ে থাকাটা কষ্টের ছিল। কিছু জায়গার মাটি দেবে যায় নিচের দিকে, সেখানে অফিশিয়াল ডেকোরাম মেইন্টেইন করে আসল বুট ও আর্মস নিয়ে অ্যাকশন সিকোয়েন্স কন্টিনিউ করা খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল। এই সিনেমা শুরুর সময় যাঁরা রিয়েল লাইফে আছেন, তাঁদের সঙ্গে বসেছিলাম। র‌্যাব এই সুযোগ করে দিয়েছিল। আসলে ছোট ছোট অনেক অভিজ্ঞতাকে সামনে নিয়েই আমার এই চরিত্রটা তৈরি হয়েছে। তবে ডিরেক্টর যেভাবে চেয়েছেন, সেভাবেই শতভাগ চেষ্টা করেছি।

 

সমবয়সী-সিনিয়র শিল্পীদের সহযোগিতা কেমন পেয়েছেন?

সবাই যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। আমরা সবাই মিলে শুটিংয়ে যাওয়ার আগে ওয়ার্কশপ করেছি। এই সিনেমায় ইয়াং জেনারেশনের যেমন আছেন, তেমনি রয়েছেন প্রবীণশিল্পীও। সমবয়সী-সিনিয়র কম্বিনেশন দারুণ ছিল। ইয়াংরা সর্বদা একটু বেশিই দিতে চায়। আর সিনিয়ররা শুটিং সেটে থাকলে রিলাক্স থাকা যায়। একটা ঘটনা বলি, শুটিংয়ের একসময় খেয়াল করলাম আমরা নেটওয়ার্কের বাইরে। মোবাইলে ফ্যামিলির কাউকে সময় দিতে পারছি না। কিন্তু একবারও মনে হয়নি, আশপাশে যারা আছে তারা ফ্যামিলি মেম্বার নয়।  

 

সহশিল্পী যখন বন্ধু নুসরাত ফারিয়া, কেমন লাগে তখন?

আমার কো-আর্টিস্ট, কো-অ্যাংকর শুরু থেকেই। একই ব্যাকগ্রাউন্ডে পড়াশোনা আমাদের। তবে শোবিজে যাত্রা সে আগে শুরু করেছে। অনেক হার্ড ওয়ার্ক করে। ভালো কাজ করে। সে সর্বদা তার সেরাটাই চেষ্টা করে।

 

মুক্তির পূর্ব প্রস্তুতি কেমন চলছে?

শোকের মাস (আগস্ট) ছিল বলে গত মাসে আমরা কোনো প্রমোশনে যাইনি। আমাদের প্রস্তুতি শুরু এ মাস থেকেই। ইভেন্ট প্ল্যান চলছে। শুধু রিলিজের সময়ই নয়, মুুক্তির পরও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন রকম প্রচারণায় সবাই থাকবে।

 

একই দিন ‘বিউটি সার্কাস’ও মুক্তি পাচ্ছে...

সাম্প্রতিক সময়ে একই সঙ্গে একাধিক ভালো সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। সব সিনেমাই ভালো ব্যবসা করছে। এটাকে পজিটিভলি দেখছি। অন্তত প্রতিটি মাসে এখন কথা বলার মতো সিনেমা আসছে। আমি মনে করি, বিউটি সার্কাসের দর্শকরা যেমন অপারেশন সুন্দরবন দেখবে, তেমনি অপারেশ সুন্দরবনের দর্শকরাও বিউটি সার্কাস দেখতে যাবে। একটি অন্যটির সার্পোটিভ রোল প্লে করবে মনে করি। আমিও ‘বিউটি সার্কাস’ দেখব বলে স্থির করেছি।

 

রাফির সঙ্গে দীর্ঘদিনের জার্নি। তাঁর ‘দামাল’ নিয়ে প্রত্যাশা?

রাফির সঙ্গে অনেক মধুর জার্নি আমার। আমি তো মনে করি, শূন্যর আগে থেকে শুরু আমাদের। গত পরশু রাফি, রাজ ও আমি একসঙ্গে ছিলাম। রাজ চলে যাওয়ার পর মগবাজারে বৃষ্টিতে জ্যামে আটকে ছিলাম আমি আর রাফি। সে সময় আগের কথা ভেবে হাসছিলাম। সেই একসঙ্গে এই মগবাজারের রাফির অফিসে ছোট দুই কামরায় স্ক্রিপ্ট পড়েছি আর আলুপুরি খেয়েছি। অনেক সময় একসঙ্গে থেকেছি, আড্ডা দিয়েছি। এখন রাফি অনেক এগিয়েছে। খুবই বিউটিফুল স্মৃতি রয়েছে আমাদের। বাই দ্য ওয়ে, ‘দামাল’ নিয়ে প্রত্যাশা আমার আকাশচুম্বী। যারা কখনো সিনেমা দেখেনি, তাদের দেখানোর জন্যই এ সিনেমা।

 

হিন্দি সিনেমা ‘ইন দ্য রিং’-এর শুটিং কবে?

সামনের বছরের ফেব্রুয়ারির দিকে সময় দেওয়া। আমার চরিত্রের নাম রওশন।

 

প্রসেনজিৎ-শ্রাবন্তীর সঙ্গে সিনেমাটির আপডেট কী?

সামনের মাসে কলকাতায় যাব। স্ক্রিপ্ট নিয়ে বসবে সবাই।

সর্বশেষ খবর