রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার : আবদুন নূর সজল

আমার ডিকশনারিতে হতাশা শব্দটি নেই

সজল, এ নামটি বললেই আগেপিছে আর কোনো বিন্ডিষণের দরকার হয় না। দীর্ঘ ২২ বছরের শোবিজ ক্যারিয়ারে এই ছোট পর্দার সুপারস্টার একচেটিয়া কাজ করে যাচ্ছেন বিজ্ঞাপন, টিভি নাটক, ওয়েব কনটেন্ট ও চলচ্চিত্রে। রোমান্টিক ইমেজ থেকে বেরিয়ে নানা বৈচিত্র্যময় ও চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে নিজেকে নতুন করে চেনাচ্ছেন। সাম্প্রতিক প্রশংসিত কাজ ‘দ্য সাইলেন্স’ ও সমসাময়িক ব্যস্ততা নিয়ে এই তারকার সঙ্গে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

আমার ডিকশনারিতে হতাশা শব্দটি নেই

কেমন আছেন? আজ শুটিং আছে?

আলহামদুলিল্লাহ! সৃষ্টিকর্তার অন্ডিষ দয়ায় ভালো ও সুস্থ আছি। আজ শুটিং নেই। তবে ‘লিজেন্ড অব দ্য ব্লু সির (জলপরী) ডাবিং রয়েছে এসআরকে স্টুডিওতে।

 

নতুন মাধ্যম হিসেবে অভিজ্ঞতা কেমন?

অভিজ্ঞতা ভালো। নতুন হলেও এটি কিন্তু অভিনয়ের একটি মাধ্যম। যদিও যে কোনো প্রিয় চরিত্রে ভয়েস দেওয়াটা কঠিন কাজ। তবে কাজের প্রসেস ভালো লেগেছে। এ জন্য পুরো ক্রেডিট দিতে হবে ডাবিং ডিরেক্টর খালিদ হোসেন অভিকে। অনেক কিছু শেখা হচ্ছে। ২৭ পর্বের সিরিজটির একেকটি পর্বই প্রায় ৪০ মিনিটের! শুনেছি, এসআরকের ‘লিজেন্ড অব দ্য ব্লু সি’ এখন বায়োস্কোপ ট্রেন্ডিংয়ের শীর্ষে রয়েছে। এটি সত্যিই আনন্দের।

 

কয়েক বছর ধরে সজল নতুনরূপে দর্শক সম্মুখে হাজির হচ্ছেন। তার প্রমাণ ‘ব্যাচ : ২০০৩’ ও ‘দ্য সাইলেন্স’। এসব কাজে দর্শকদের এত প্রশংসা- কেমন লাগছে?

আলহামদুলিল্লাহ! এসবই দর্শকদের ভালোবাসা। আসলে দর্শকদের ভালোবাসা পাওয়া অনেক কঠিন কাজ। কার কাজ কখন যে ভালো লাগে তা দর্শক ছাড়া কেউ বলতে পারে না। আগে অসংখ্য রোমান্টিক চরিত্রে কাজ করেছি, দর্শকের ভালোবাসাও পেয়েছি। এখন অল্প কিছু চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে কাজ করলেও দর্শকের ভালোবাসা শুধুই বেড়েছে; এতটুকু কমেনি। আমি সর্বদা বলি, আমি শিক্ষানবিশ। সব সময় শেখার মধ্যেই আছি।

 

‘দ্য সাইলেন্স’-এ শিবলী নামে ইবলিশ চরিত্র করেছেন। ভিউ আর ট্রেন্ডিংয়ের যুগে অভিজ্ঞতা যে দামি তা কি ফের প্রমাণিত হলো?

অভিজ্ঞতা সব সময়ই দামি। অভিজ্ঞতা একটা বড় জায়গা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জানার জায়গা, দেখার জায়গা বোঝা যায়। সততার সঙ্গে সর্বোচ্চ দিয়ে কাজ করলে একটা জায়গায় আসা যায়। ‘দ্য সাইলেন্স’ সিরিজটি মুক্তির পর দর্শকদের দারুণ রেসপন্স পাচ্ছি। আমার চরিত্র দেখে সবাই অবাক হচ্ছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখছেন, মন্তব্য করছেন। সবার মন্তব্যই উপভোগ করছি আমি। এসব কাজের ফিডব্যাক। এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা। এর জন্য অবশ্যই সর্বদা ও সর্বপ্রথম সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনিই সবকিছু নির্ধারণ করেন। এরপর এই কাজের জন্য নির্মাতা ভিকি জাহেদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা। তাঁর কাজ বরাবরই আমার খুবই পছন্দের। তিনি যখন এই চরিত্রের কথা বললেন, আমি সঙ্গে সঙ্গেই কাজটি করতে খুশি মনে রাজি হয়ে যাই। এরপর কৃতজ্ঞতা জানাই হাকিম ভাই, বিজরী আপা, শ্যামল মাওলা, মেহজাবীনসহ পুরো ইউনিটের সবাইকে। আর দর্শক ও সাংবাদিক ভাইবোনদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই। তাঁরা পান্ডিনা থাকলে সজলের এত দূরের জার্নি সম্ভব হতো না।

 

আপনার অভিনয়ের প্রশংসা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন গুণী অভিনেত্রী ডলি জহুর, মনিরা মিঠু, মম, শশীরা...

এটা অবশ্যই আমার জন্য বড় ও বিশেষ প্রাপ্তি। আমরা যারা একই অঙ্গনে কাজ করি তাঁরা কিন্তু একটা পরিবার। যাঁরা লিখেছেন তাঁরা প্রত্যেকেই অনেক গুণী ও মেধাবী। বিশেষ করে সিনিয়র শিল্পী ডলি আপা ও মিঠু আপার এমন মন্তব্য আমাকে ভালো কাজের অনুপ্রেরণা দেয়। মোটকথা প্রিয় মানুষের কাছ থেকে যখন এমন মন্তব্য পেয়েছি তখন খুবই ইমোশনাল হয়ে গেছি। এত ব্যস্ততার মধ্যেই তাঁরা আমাকে নিয়ে লিখেছেন, কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা।

 

তাহলে এখন থেকে কি নাটক কম, ওয়েবে বেশি দেখা যাবে?

আমি অভিনয়কে ভালোবাসি। সেই চরিত্রগুলোকে ভালোবাসি যেটায় কাজ করার জায়গা আছে। যেই চরিত্রে কাজ করার সুযোগ আছে, চ্যালেঞ্জ আছে, যা ভাবাবে বা ঘাঁটাবে সেই কাজটিই করতে চাই সর্বদা। মাধ্যম বড় বিষয় নয়। তাই তো গত চার-পাঁচ বছর তেমন করে নাটকে দর্শক আমাকে দেখতে পায়নি। এটা করেছি সুচিন্তিতভাবেই। আমি ভালো কাজই করতে চেয়েছি। অনেক চরিত্রের স্বাদ নিতে আমার ভালো লাগে। কাজ সফল বা বিফল হতে পারে, তবে চেষ্টা থাকাটা জরুরি। সেটাই এত বছর ধরে করেছি।

 

এত বছরের জার্নিতে কোনো কারণে হতাশ হয়ে অভিনয় ছেড়ে দিতে ইচ্ছা হয়নি?

আমি অন্যরকম মানুষ। আমার ডিকশনারিতে হতাশা নামে কোনো শব্দ নেই। ছোটবেলা থেকে আমি মায়ের দর্শন দেখে বড় হওয়া। একটা দিনে শরীর ও মন উভয়ই কিন্তু ভালো থাকবে না। মানুষকে সাধারণ নিয়মকে মেনে নিয়ে চলতে হবে। আর একটা কথা, আমি ভীষণ আল্লাহভক্ত মানুষ। তিনি যা যাকে যখন নির্ধারণ করছেন তাই হবে।

 

আগামীতে কোন কোন সিনেমা রয়েছে মুক্তির অপেক্ষায়?

আবু সাইয়ীদের ‘সংযোগ’, নাদের চৌধুরীর ‘জিন’, হৃদি হকের পরিচালনায় ‘১৯৭১ সেইসব দিন’, জাহিদ হোসেনের ‘সুবর্ণভূমি’, বঙ্গবিডির ‘পাপড্যাডি’ সিনেমা।

 

প্রেম-বিয়ে নিয়ে কি রহস্যই থাকবে?

বিয়ে যখন করব সবাই জানবে, আমি লুকোচুরি করার মানুষ নই। তবে প্রেম করি না বললে ভুল বলা হবে। প্রেম মানুষের জীবনে টুকটাক থাকে। কিন্তু আমি মনে করি, ব্যক্তিগত জীবন ব্যক্তিগতই রাখা ভালো।

সর্বশেষ খবর