শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার :- তারিন জাহান

সিন্ডিকেট একটা সময় পর্যন্ত থাকে, বেশি দিন টেকে না

সিন্ডিকেট একটা সময় পর্যন্ত থাকে, বেশি দিন টেকে না

নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তারিন জাহান। এখনো নিয়মিত অভিনয় করছেন তিনি।  সঙ্গে রাজনীতিতেও সরব। বর্তমানে তাঁর হাতে রয়েছে বেশ কিছু নাটক, ওয়েব ও সিনেমার কাজ। তাঁর সঙ্গে সমসাময়িক ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

‘এক্টরস ইকুইটি ডে’র আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন। পুরো আয়োজনটি কেমন লাগল?

আমাদের নিজেদের পরিবারের বাইরেও যে পরিবারটিকে আমরা নিজের আপন মনে করি, বিপদে-আপদে যে কোনো সময়ে যাদের সবার আগে পাশে পাই, সেটি আমাদের এক্টরস ইকুইটি পরিবার। আমাদের এই বনভোজন বা আয়োজনে সবসময় আসতে চেষ্টা করি। আমরা কাজের মধ্যে সর্বদা ব্যস্ত থাকি, কাজ থাকে সবারই। সবার সঙ্গে সবসময় দেখা হয় না। কিন্তু এই বনভোজনের মাধ্যমে সবাই অন্তত বছরে একবার একত্রিত হই। সেদিনও একত্রিত হয়েছি। সারা দিন অনেক আনন্দে কাটিয়েছি। প্রিয়মুখগুলোর সঙ্গে দেখা হয়ে ভালো লেগেছে। খাওয়া-দাওয়ার পাশাপাশি পেইন্টি, নানা রকম গেম খেলা, গান-বাজনা হয়েছে। একুশে পদকপ্রাপ্তদের সম্মানিতও করা হয়েছে এই দিনে। আর ফাগুনের দিনে এই আয়োজন হয়েছে, তাই আনন্দটা দ্বিগুণ ছিল। 

 

সিনেমার শিল্পী-নির্মাতাদের টিভি মিডিয়ার আর্টিস্ট নিয়ে ভুল ধারণা রয়েছে। আপনি এ প্রসঙ্গে কী বলবেন?

দেখুন ওটিটি মিডিয়ায় কিন্তু আমাদের টেলিভিশনের আর্টিস্টরাই কাজ করছেন। এ ছাড়াও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন যে সিনেমাগুলো হচ্ছে, দুই বাংলা মিলে কাজ হচ্ছে, কানে যে সিনেমাগুলো যাচ্ছে এগুলোতে কিন্তু আমাদের টেলিভিশন মিডিয়ার আর্টিস্টরাই অভিনয় করছেন। এটা খুবই গর্বের যে, আমাদের শিল্পীরা ভারতসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গিয়ে সুনাম অর্জন করছে। কারণ আমি মনে করি, আমাদের শিল্পীরা অনেক বেশি দক্ষ, পরিপক্ব ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। আমাদের দেশে অনেক গুণী শিল্পী রয়েছেন। যদি সুযোগ পায় তাহলে আমি বিশ্বাস করি তারা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সুনাম অর্জন করতে আরও বেশি সক্ষম হবেন।

ওটিটিতে ঝুঁকছেন শিল্পীরা, টিভি চ্যানেল মুখ থুবড়ে পড়ছে- বিষয়টি ভাবলে কেমন অনুভব করেন?

টিভি থেকে এখন অবশ্য ওয়েব কনটেন্টে বেশি কাজ হচ্ছে। কাজ বেশি দেখছে মানুষ। শুধু বাংলাদেশের মানুষই নয়, বিদেশের মানুষরাও ওয়েবের কাজগুলো দেখছেন। এটা অবশ্যই শুভ উদ্যোগ। এটাকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। এই প্ল্যাটফরমটি আমরা নতুন পেয়েছি। নাটক, সিনেমা, ওয়েব কনটেন্টে আমাদের টেলিভিশন মিডিয়ার আর্টিস্টরাই বেশি কাজ করছেন। সুনাম অর্জন করছেন এবং পুরস্কৃতও হচ্ছেন। তাই এক্ষেত্রেই বোঝা যায়, আমরা যদি সুযোগ পাই তাহলে কোনো অংশেই পিছিয়ে যাব না।

 

টিভি মিডিয়া আর ওটিটি প্ল্যাটফরমে শিল্পী-নির্মাতা-প্রযোজকদের সিন্ডিকেট নিয়ে কী বলবেন?

এখন যেহেতু মিডিয়া অনেক বেশি। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষ জানে খুব তাড়াতাড়ি। হাতের কাছে পৌঁছে যায় সব নিউজ। সিন্ডিকেট থাকতেই পারে কিন্তু সিন্ডিকেটের বাইরেও কিন্তু শিল্পীরা নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন। কেউ কম আবার কেউ অনেক বেশি কাজ করছেন, সেটা সত্য। একটা বিষয় খেয়াল করবেন, বিদেশে কিন্তু যারা বেশি বয়সের বা বেশি অভিজ্ঞতাসম্পন্ন তাদের কথা মাথায় রেখে কাজ করা হয়। তাদের নিয়ে সেভাবে গল্প তৈরি হয়, সেভাবে চরিত্রায়ণ করা হয়। আর আমাদের দেশে ঠিক এর উল্টো ছিল। তবে এখন আমরা এই কনসেপ্টটা থেকে বের হতে চেষ্টা করছি। আসলে একটা ট্রানজিকশন প্রিরিয়ড যায়। প্রত্যেকটা সময় তো নতুন প্রজন্ম আসবে। নতুনরা একটা ট্রেন্ড এনেছেন। সেটাতে দর্শকরা এখন অভ্যস্ত হচ্ছেন। তবে দর্শকরা মনোটোনাস কোনো বিষয়ই পছন্দ করেন না। সুস্থ ও গল্প যদি জীবনধর্মী হয়, তবে দর্শকরা সেগুলো রিলেট করতে পারে। সিন্ডিকেট একটা সময় পর্যন্ত থাকে, বেশি দিন টিকে না। খারাপ জিনিস বেশি দিন থাকে না।

 

ওটিটিতে কাজ করবেন কি?

অবশ্যই করতে চাই। ভালো গল্প, চরিত্র ও নির্মাতা হলে কাজ করতে তো সমস্যা নেই। ওটিটিতে কাজ করার কিছু কথা চলছে।

 

নতুন কোন সিনেমাতে অভিনয় করছেন?

সামনে একটি সিনেমায় কাজ করব। সেটি নিয়ে প্রস্তুতি চলছে।

 

এই যে শিল্পীরা অভিনয়ের চেয়ে বেশি রাজনীতির দিকে ঝুঁকছেন...

সেটা নয়। শিল্পীদের কাজ অভিনয় করা শুধু নয়, তাদের রাজনৈতিক সচেতনও কিন্তু হতে হয়। শিল্পীরা আগেও রাজনীতিতে সরব ছিল। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের সময়ও তারা শিল্পীসত্তা দিয়ে যুদ্ধ করে গেছেন। কেউ কণ্ঠ দিয়ে আবার কেউ ট্রাকে ট্রাকে বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণিত করেছেন।  তাই এটা ইতিবাচক একটা বিষয়। শিল্পীদের রাজনৈতিক সচেতন হতে হবে। তাই শিল্পীদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ দোষের কিছু নয়।

সর্বশেষ খবর