চিত্রনায়িকা অধরা খান। নায়ক, মাতাল ও পাগলের মতো ভালোবাসির পর বেশ কিছু নতুন সিনেমার শুটিংয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। দেশের বাইরেও কাজ করেছেন তিনি। আগামী মাসে বড়পর্দায় হাজির হচ্ছেন ‘সুলতানপুর’র রানী হয়ে। এসব বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল
অধরাকে নাকি কেউ খুঁজে পাচ্ছে না! এখন কোথায় আপনি?
তাই নাকি? আমি হারিয়ে তো যাইনি। গাজীপুরে আছি। আমার একজন আত্মীয়ের দাওয়াতে এখানে এসেছি। আজ বিকালেই ফিরব ঢাকায়।
শেষ পর্যন্ত সুলতানপুরের রানী হয়ে বড়পর্দায় আসছেন। কেমন লাগছে?
ভীষণ ভালোলাগা কাজ করছে। আসলে ভালো ছবি রিলিজ হলে ভালো লাগে। প্রায় তিন বছর আগে সিনেমাটি করেছিলাম। ২০২০ সালের অক্টোবরের ১০ তারিখে। কভিটের সময়। অনেক কষ্ট করে কাজটি করেছি সবাই। সে সময়ের কাজ হলেও সৈকত নাসির ভাইয়ের এ সিনেমাটি সমসাময়িক। এখনকার সময় ও ট্রেন্ডের সঙ্গে পুরোপুরি মিলে গেছে। পারফেক্ট গল্প ও নির্মাণে পারফেক্ট একটা সময়ে মুক্তি পাচ্ছে সিনেমাটি।
২ জুন মুক্তি। সময় খুবই কম। প্রমোশনাল প্রস্তুতি কেমন চলছে?
টিম থেকে প্রপার পিপারেশন নিচ্ছে। তবে শুরু থেকেই আমি আমার মতো এই সিনেমার প্রচারণায় সময় দিচ্ছি। এরমধ্যে নতুন সিনেমা ‘দখিনো দুয়ার’-এর শুটিংয়ে থাকায় লাস্ট প্রমোশনে তেমন করে সময় দিতে পারিনি। তবে বিভিন্নভাবে টিমের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। এখন যেখানে ডাকছে যাচ্ছি, প্রচারণায় অংশ নিচ্ছি। আশা করছি, ভালো সিনেমার পাশে দর্শক সবসময়ই আছে ও থাকবে।
সিনেমার প্রচারণা নিয়ে কতখানি সন্তুষ্ট?
আমার যতগুলো সিনেমা মুক্তি পেয়েছে ততবারই সবাইকে পাশে পেয়েছি। আমি খুবই লাকি। নায়ক, মাতাল কিংবা পাগলের মতো ভালোবাসি সিনেমা মুক্তির সময় প্রিন্ট, অনলাইন আর ভিজ্যুয়াল মিডিয়া সর্বদা আমার পাশে থেকেছে। এ জন্য আমি সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তবে ‘পাগলের মতো ভালোবাসি’ যে সময় মুক্তি পেয়েছিল, সে সময়টা উপযুক্ত সময় ছিল না। সবাইকে সিনেমা দেখার জন্য আমন্ত্রণও ঠিকমতো জানাতে পারিনি। এবারের ‘সুলতানপুর’ প্রচারণা ঠিকঠাক মতো হচ্ছে। আমি খুশি।
‘সুলতানপুর’ ছবিতে চরিত্রটি কেমন?
চরিত্রের নাম সামিয়া। যার বাবা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সে তার বাবার আদর্শে বেড়ে উঠেছে। নিজের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ছেলেমেয়েদের প্রতি সে অনেক কেয়ারিং। দেশ, নিজের এলাকা, গ্রাম নিয়ে সে সর্বদা কনসার্ন থাকে। তবে প্রেম থেকে সে নিজেকে দূরে রাখতে পছন্দ করে। খুব সাধারণ লুকে দর্শক দেখবে আমাকে।
বর্ডার পাল্টে সুলতানপুর, দর্শক কীভাবে নিয়েছে?
নামকরণটাকে দর্শকরা পজিটিভলিই নেবে। বর্ডার থেকে সুলতানপুর হলেও সিনেমাটির বিষয়বস্তুকে তেমন করে প্রভাবিত করেনি। আমার কাছে সুলতানপুর নামটা অনেক বেশি ক্য¬াসিক মনে হয়েছে। আর সৈকত নাসির তো মাস্টার মেকার। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এ কনটেন্ট নিয়ে একমাত্র তিনিই কাজটি করেছেন। তবে সময়কে ভেবে কিছু রিশুট করেও রেখেছিলেন। আই জাস্ট বিকামিং হিজ ফ্যান। উনি উনার বয়স অনুযায়ী অন্যান্য নির্মাতা থেকে অনেক ম্যাচিউর ও পারফেক্ট। তিনি প্রত্যেকটা কাজ ঢাকঢোল পিটিয়ে না করে নীরবে-নিভৃতে করে থাকেন।
নায়কের মধ্যে কাকে এগিয়ে রাখবেন?
কোনো নায়কই কাজকে এগিয়ে নেন না। সিনেমার কাজ এগিয়ে নেন ডিরেক্টর। তাই ডিরেক্টরকে এগিয়ে রাখব। আমার নায়ক আমার ডিরেক্টর।
নতুন কাজে ব্যস্ততা...
শুটিং করছি ওয়াহিদুজ্জামান ডায়মন্ডের ‘দখিনো দুয়ার’ এর। জাজিরা, মাদারীপুরে এই সিনেমার ৯০% শুটিং শেষ হয়েছে। বাকি ১০% সামনের মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই সিনেমায় ফেরদৌস, সিমলা আপার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেছি। এ ছাড়াও সফিক হাসানের ‘দ্য ফ্রড (বাটপার)’, মাজহার বাবুর ‘ঠোকর’ ছবিতে কাজ করছি। আর অপূর্ব রানার নির্মাণে একটি কাজ করারও কথা হয়েছে।
গন্ডি পেরিয়ে ওপারের সিনেমাতেও অভিনয় করছেন...
হ্যাঁ, সিনেমাটির কাজ প্রায় শেষের দিকে। কিছু অংশ বাকি। সামনে সেটারও কাজ শুরু করব। তবে ছবির কনসেপ্ট ও আমার চরিত্রটি চমক হিসেবে রাখতে চাই।
ওটিটির কাজের জন্য আপনি কি প্রস্তুত?
পুরোপুরি প্রস্তুত। অনেক স্ক্রিপ্ট পেয়েছি। তবে ব্যাটে-বলে মিলছে না। আমি মনে করি, সিনেমার ক্ষেত্রে আমার ডেবিউ যতটা জমজমাট হয়েছে, ওটিটিতে অভিষেকের সময়ও ততটা ভালোভাবে যেন হয়।
দেশের বাইরে ঘুরতে নাকি ব্যবসার কাজে যাওয়া হয়?
দেশের বাইরে আমাদের পারিবারিক ব্যবসা আছে। আমি সেটা দেখভাল করি। এ ব্যবসার কারণে আমাকে দেশের বাইরে যেতে হয়। তবে আমার প্রথম প্রফেশন হচ্ছে অ্যাকটিং। এরপর আমার ফ্যামিলি বিজনেস। জুনের প্রথম সপ্তাহে ইউএসের ফনিক্সে যেতে পারি বিজনেসের কাজে। সঙ্গে ঘোরাঘুরি। তবে বাইরে গেলে কাজই বেশি হয়, ঘোরাঘুরিটা কম।
নায়িকা সংকট রয়েছে বলে মনে করেন?
সংকট তো আছেই। তবে আমরা যারা এসেছি তারা কতটা স্ক্রিল্ড সেটার প্রমাণ তো দিতেই হবে। আর আমরা এসেছি বলে নতুনরা আসবে না, তা নয়। আমি চাই নতুনরা বেশি বেশি আসুক। তখন সিনেমার গল্পে অনেক চেঞ্জ আসবে। দর্শকরা ভিন্ন কিছু পাবে।
প্রেমের সম্পর্কে আছেন, সেটা আড়ালে রাখছেন কেন?
হ্যাঁ, প্রেমের সম্পর্কে আছি। সম্পর্কে না থাকলে জগড়াঝাঁটি করব কার সঙ্গে? তবে কত বছর ধরে আছি সেটা বলা যাবে না। টপ সিক্রেট! তবে সে মিডিয়ার বাইরের লোক।
বিয়ে নিয়ে প্ল্যান তাহলে এগোচ্ছে...
হা হা হা... সেটা এখনই নয়। বিয়ের প্ল্যান এখনো করিনি। তবে বিয়ে করলে হুটহাট করে ফেলব যে কোনো সময়। দুই বা পাঁচ বছর পর, এমনটি নয়।