মঞ্চ, টিভি, ওটিটি ও চলচ্চিত্রের দাপুটে অভিনেতা-নির্দেশক তারিক আনাম খান। এ মুক্তিযোদ্ধা বেশ কিছু ওয়েব ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। সম্প্রতি ‘অভিনয়শিল্পী সংঘ’র সংস্কার কমিটি গঠন করা হয়েছে। চার মাস মেয়াদি নতুন এ কমিটির প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এ নাট্যজন-গুণী অভিনেতাকে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল
সুস্থ আছেন?
হ্যাঁ, আলহামদুলিল্লাহ, খুবই ভালো আছি।
আপনার প্রাত্যহিক জীবনের কথা জানতে চাই।
সময় তো তার নিজস্ব গতিতে চলছে। আমরা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চলছি। সকালে ঘুম থেকে ওঠে প্রথম যে কাজটি করি তা হলো খবরের কাগজ পড়া, হালকা এক্সারসাইজ সেরে শুটিংয়ের জন্য প্রস্তুত হওয়া। ফেসবুক, টুইটারে চোখ বুলানো। তাতে আনন্দ হয়, সময়ও কাটে। সবকিছু মিলিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করছি।
সেই সোনালি দিনগুলোর কথা কি মনে পড়ে?
আমি আসলে অতীতমগ্ন মানুষ নই। স্মৃতি রোমন্থন করারও মানুষ নই। আমি মনে করি বর্তমান সময়টাই সত্য। আজকে আমি সুস্থ সবল একজন মানুষ, আগামীকাল আমি বেঁচে না-ও থাকতে পারি। ভুলভ্রান্তি কাটিয়ে ওঠে অতীতকে ভুলে ভবিষ্যৎ ভাবনাটা বুঝে সামনের পথচলাটাই বড় কথা।
ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা কেমন মনে হচ্ছে?
ইন্ডাস্ট্রি কিন্তু স্টাবলিশ না। একটু সুবাতাস শুরু হয়েছে কেবল। আমার মনে হয় এ বছর থেকে আরও ডেভেলপ হবে। পরিবর্তন আসবে। প্রচুর ভিন্ন ভিন্ন ছবি তৈরি হবে আশা রাখছি।
প্রায়ই দর্শকের মুখে হতাশার কথা শোনা যায়...
আমাদের নাটক অতিরিক্ত ব্যবসার দিকে ঝুঁকে পড়েছে। অতিরিক্ত মনোরঞ্জনের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। মনোরঞ্জন, আনন্দ, বিনোদন দরকার আছে মানুষের বেঁচে থাকার জন্য; কিন্তু একমাত্র এ বিষয়গুলো নাটকের জন্য মুখ্য হতে পারে না। নাটকের মাধ্যমে সমাজের অসংগতিকে বিদ্রƒপ করা হয়েছে। এভাবেই কিন্তু চলচ্চিত্র ও নাটক সমাজে একটি ভূমিকা রেখেছে। আসলে সমাজের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে কোনো সংস্কৃতি টিকতে পারে না।
এ ইন্ডাস্ট্রির উত্তরণে কী করা প্রয়োজন?
টিভি নাটক আগের অবস্থায় নেই। আমরা বিটিভির মানুষ, নাটকের মানুষ। একটু যদি আমরা মান নিয়ন্ত্রণ করি, মার্কেট বুঝে কাজ করি, তাহলে ভালো কিছুই হবে। আমি খুবই আশাবাদী মানুষ। ভালো কিছু আশা করতেই পারি।
এত বছর পরও কি মনে হয় কেন অভিনয় করছেন?
আমার কাছে সহজ উত্তর- অভিনয় করি ভালোবাসা থেকে। নাটকে ও সিনেমায় অভিনয় এবং পরিচালনা করতে ভালোবাসি। যখন মুক্তিযুদ্ধ করি, যখন দিল্লিতে পড়ালেখা করতে যাই, তখনই ভেবেছিলাম আমার দায় আছে দেশের এবং শিল্পের প্রতি। সেই দায় থেকে একটুও সরিনি কখনো। আগামীতেও প্রিয় দেশের জন্য অনেক কিছু করে যেতে চাই।
অভিনয় শেখার স্কুল তৈরির অগ্রগতি কতদূর?
এ স্বপ্নটা এখনো আছে। আসলে জায়গা পাওয়াটাই হলো মুশকিল। তবে মনে হয় এ বছরই একটা কিছু করতে পারব।
থিয়েটারে নিয়মিত হবেন না?
একটু কাজের প্রেসার হয়ে গেছে তো, থিয়েটারটাকে যে লেভেলে নিয়ে যাওয়া দরকার সেটা কম হচ্ছে। তবে থিয়েটারটাকে পেশাদারিত্বের সঙ্গে মেলানো দরকার।