বলিউডের দুই জনপ্রিয় অভিনেত্রী মধুবালা ও মীনা কুমারী। দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব ছিল একেবারে শিরায় শিরায়। কিন্তু বেশিদিন টেকেনি সেই আকাশছোঁয়া বন্ধুত্ব। কিন্তু কেন? পাঁচ দশকের সর্বাধিক জনপ্রিয় সুন্দরী নায়িকা ছিলেন তাঁরা দুজন। শোনা যায়, সমসাময়িক নায়িকাদের নাকি কখনো বন্ধুত্ব হয় না। তেমনই মিথ ছিল এ দুই নায়িকাকে নিয়েও। দীর্ঘ সময় মুখ দেখাদেখি বন্ধ ছিল দুই নায়িকার। মধুবালা যেমন ছিলেন হিন্দি ছবির স্বপ্নসুন্দরী, তেমন পর্দার ট্র্যাজেডি কুইন ছিলেন মীনা কুমারী। দুজনই দুজনের কাজে রীতিমতো টক্কর দিতেন একে অপরকে। নাচ থেকে অভিনয়, দুজনই ছিলেন প্রথমা। প্রথম দিকে দুই নায়িকার সম্পর্ক ছিল মিষ্টি বন্ধুত্বের। একে অপরের বাড়ি যেতেন, গল্প করতেন। তাই সে সময় ফিল্মফেয়ার পত্রিকার প্রচ্ছদে প্রকাশিত হয়েছিল মধুবালা আর মীনা কুমারীর হাসিমুখের ছবি। শ্বেতশুভ্র শাড়িতে দুই নায়িকার ছবি শরতের শিউলির মতো দর্শকহৃদয় ভরিয়ে তুলেছিল। দুজনের ইন্ডাস্ট্রিতে আসা প্রায় একই সময়ে। দুজনই শাসন করতেন বলিউড। কিন্তু কাজের জগতের প্রতিযোগিতা তাঁদের সম্পর্কে কখনো তিক্ততা আনেনি। যদিও এ হাসি, গান, বন্ধুত্ব হারিয়ে যায় তীব্র তিক্ততার অন্ধকারে। ‘মহল’ ছিল মধুবালার অভিনীত, জীবনের বাঁকবদলের ছবি। যে ছবির পর মধুবালাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ‘মহল’ ছবির শুটিংয়েই তরুণী মধুবালা পড়লেন এ ছবির পরিচালক কামাল আমরোহির প্রেমে। মহলের সেটেই কাছাকাছি আসেন আমরোহি আর মধুবালা। সদ্য ফোটা ফুলের মতো মধুবালার রূপে পাগল হয়েছিলেন বয়স্ক পরিচালক আমরোহি। মধুবালাও দুঃসাহসী হয়ে আমরোহিকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু ততদিনে কামাল আমরোহি বিবাহিত, ঘোর সংসারী। তাঁর স্ত্রী তখন মীনা কুমারী। নিজের স্বামীকে নিয়ে মধুবালার এমন অদ্ভুত আবদার একেবারেই মেনে নিতে পারেননি মীনা কুমারী। দুই নায়িকার সম্পর্কে চিড় ধরে এ নিয়েই। কারণ মীনা কুমারীর মনে যথেষ্ট ঝড় ওঠে তাঁর মনের মানুষ মধুবালার প্রেমে পড়াতে।
এ ঘটনার পর থেকেই মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয় দুই অভিনেত্রীর। স্বামী কামাল আমরোহিকে মধুবালার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে আনতেও তৎপর হন মীনা কুমারী। আর কখনো মধুবালার সঙ্গে মীনা কুমারীর সম্পর্ক সহজ হয়নি। স্থায়ী হয়নি আমরোহি-মধুবালার সম্পর্কও। পরবর্তীতে গায়ক-নায়ক কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন মধুবালা। যদিও কিশোরের দ্বিতীয় বিয়ে ছিল এটি।
যাই হোক, এসবের পরেও দুই নায়িকার জীবন পথে মিল থেকেই গেছে। দুজনের ইন্ডাস্ট্রিতে আসা একই সময়ে। পর্দা থেকে দুজনের প্রস্থান অল্প বয়সেই। মধুবালা আর মীনা কুমারী দুজনই অকালে মারা যান যৌবন না পেরোতেই।