১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ছবি। কিন্তু মূল বিষয় এই যুদ্ধে নারী নির্যাতন। আপনি কি আগে থেকেই বিষয়টি জানতেন?
বিভিন্ন ঘটনা নানাভাবে শুনেছি। বাংলাদেশেও আমাদের অনেক স্বজন আছেন। তাই অনেক খবরই কানে এসেছে। মুক্তিযুদ্ধের অনেক ঘটনাও জেনেছি। কিন্তু অনুভব করতে পারিনি। যেটা পেরেছি ছবিতে অভিনয় করতে গিয়ে। বুঝেছি ওই সময় বাংলাদেশের মেয়েরা কত নির্যাতন সহ্য করেছে।
১৯৭১ সাল প্রসঙ্গে কতটুকু জেনেছেন?
আগ্রহ ছিল জানার। কিন্তু বর্বরতার নিষ্ঠুর ঘটনাগুলো শুনে বারবার শিউরে উঠেছি। তাই ছবির প্রয়োজনে যতটুকু প্রয়োজন জেনেছি।
চলচ্চিত্রটির ট্রেলার দেখার পরই আলোচনা শুরু হয়েছে। আপনি কেমন প্রতিক্রিয়া পেয়েছিলেন?
অসম্ভব। ট্রেলারটি যেমন ভয়াবহ, মানুষের মন্তব্যগুলোও তেমন ভয়াবহ ছিল। সবাই অবাক হয়েছেন, এত কষ্ট সয়ে কাজটি করেছি।
আপনার চরিত্রটি কেমন?
অসম্ভব কঠিন একটি চরিত্র। ফিদা নামের একজন বাংলাদেশি নারীর চরিত্রে অভিনয় করেছি। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সৈন্যরা তাকে নির্যাতন করে। ফিদার স্বামী ইন্দ্রনীল একজন সাংবাদিক। আমাকে ধর্ষণ করার পর তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ক্যাম্পে রাখা হয়।
শুটিং-সংগ্রাম কেমন ছিল?
ও মাই গড। অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। ট্রাকের একটা দৃশ্য আছে। আমাদের হাত-পা মোটা রশি দিয়ে বাঁধা। দরজা খুলতেই আমরা সবাই একসঙ্গে হুড়মুড় করে পড়ব। খুব ভয়ে ছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত করতে পেরেছি। অনেকে জখমও হয়েছে।
আর ধর্ষণের দৃশ্যগুলো?
ওহ, আরও ভয়াবহ। ফিদা তার স্বামীর সঙ্গে মিলনদৃশ্য করছে। এরপরই ধর্ষণ দৃশ্য। ভালোবাসাবাসির দৃশ্যটার পরেই একটা ধর্ষণ দৃশ্য! ভাবতেই তো গা শিউরে ওঠে। এটা ছিল বিভীষিকাময়। তখন আমি বললাম এই দৃশ্যে আমার আপত্তি আছে, কারণ এটা খুবই আপত্তিকর। কিন্তু পাভান আমাকে খুবই সাহায্য করল। সহশিল্পী হিসেবে তিনি অসাধারণ।
সবকিছু মিলিয়ে বিরক্ত ছিলেন। ছবি দেখার পর কি বিরক্তি আছে?
মোটেও না। কোনো বিরক্তি নেই। আসলে পরিশ্রম করলে তার ফল ভালো হয়। ছবিটি দেখে আমি নিজেই কেঁদেছি। আমার কষ্টের জন্য নয়, আমার চরিত্রটির পরিণতির জন্য। বাংলাদেশের বীরাঙ্গনাদের কষ্ট ছুঁয়ে গেছে আমায়।
- শোবিজ ডেস্ক