রণাঙ্গনে থেকে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। আর নির্মাণে এসে মুক্তিযুদ্ধের ছবি দিয়েই শুরু করেছিলেন। 'গেরিলা' নির্মাণের নেপথ্যের গল্পটা বলুন।
'গেরিলা' নির্মাণের আগে ১৯৯১ সালে 'একাত্তরের যীশু' নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলাম। 'একাত্তরের যীশু' ছবিটি দেখে বিশ্ববিখ্যাত চলচ্চিত্র সমালোচক ফাদার গাস্তোরেভেজ আমাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাণ অব্যাহত রাখার। তার সেই পরামর্শে চলচ্চিত্র নির্মাণের বিষয়ে আমি নতুন করে অনুপ্রেরণা পাই। কিন্তু ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন ব্যস্ততায় করতে পারিনি। এদিকে ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি নির্বাচিত হলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর 'গেরিলা' বানানোর চিন্তা আমার মাথায় আসে। সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে তথা চলচ্চিত্র দিয়ে একটা গণজাগরণ তৈরির লক্ষ্যেই 'গেরিলা' নির্মাণ করি। এ ছবিটির মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের অজানা ঘটনাগুলো তরুণ প্রজন্মের কাছে জানাতে পেরেছি। তাদের মাঝে দেশপ্রেমের সঞ্চার করতে পেরেছি।
দুই বাংলায় যৌথ প্রযোজনার ছবি নির্মাণের বিষয়ে আলোচনা চলছে। বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন?
সারা পৃথিবীতে ৩৫ কোটি বাঙালি রয়েছে। তাদের জন্য অন্তত বাংলা ছবির প্রসার ঘটানো উচিত। ছবি বিনিময় হলে আমাদের চলচ্চিত্রশিল্পই সমৃদ্ধ হবে। তবে যৌথ প্রযোজনার ছবি নির্মাণের ক্ষেত্রে শিল্পী, কলাকুশলী থেকে শুরু করে সবকিছুই সমতার ভিত্তিতে হওয়া উচিত।
তাহলে তো পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা দরকার।
লজিস্টিক সাপোর্ট, শিল্পী ও কলাকুশলী নির্বাচন এবং বাজেটের বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা উচিত বলেই আমি মনে করি।
চলচ্চিত্রশিল্পের উন্নয়নে কী ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত বলে মনে করেন?
বর্তমান সরকার চলচ্চিত্রকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করেছে। ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হয়েছে। ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটকে আরও উন্নয়নের দিকে নিয়ে যেতে হবে। শিল্পী-কলাকুশলীসহ চলচ্চিত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। সবকিছুর আগে সিনেমা হলের পরিবেশের উন্নয়ন করতে হবে। ৩০০ সিনেমা হলকে ডিজিটালাইজড করে যদি হলের শীতাতপ ব্যবস্থা, শৌচাগার ও আসনের আধুনিকায়ন করা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের দর্শক বাড়বে। প্রেক্ষাগৃহের উন্নয়নে সরকার কিছু পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। সরকারের পদক্ষেপগুলোর বাস্তবায়ন হলে চলচ্চিত্রশিল্পও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে।
এদিকে আমাদের চ্যানেলগুলো ভারতে চলতে দেওয়া হচ্ছে না। বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখেন?
ভারতের চ্যানেলগুলো কম ডাইনলোড ফিতে আমাদের দেশে চলছে। কিন্তু আমাদের চ্যানেলগুলো তাদের দেশে চালাতে হলে ডাউনলোড ফি অনেক বেশি দিতে হয়। আমরা যদি ক্যাবল অপারেটরদের বেশি ডাউনলোড ফি নির্ধারণ করে দিতে পারতাম তাহলে বিদেশি অনেক চ্যানেলই আমাদের এখানে চালানো যেত না। এতে আমাদের চ্যানেলগুলোর প্রসার ঘটত। দুই দেশের বন্ধুরাষ্ট্রের সম্পর্কের ভিত্তিতে ডাউনলোড ফি নির্ধারণ করা উচিত। এক্ষেত্রে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে।
মঞ্চে পেশাদারিত্ব তৈরি করা যায় কীভাবে?
থিয়েটার হচ্ছে একটা ভালো লাগার বিষয়। ভালোবাসার কারণেই আমি ৪৪ বছর ধরে থিয়েটার করছি। ভালোবাসা অর্থের বিনিময়ে হয় না।
মোস্তফা মতিহার