জল ঘোলা কম হয়নি। কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি গড়িয়েছে অনেক দূর। তবুও হয়নি কোনো সমাধান। বরং দ্বন্দ্বটা প্রকাশ্য এখন। সবাই দেখছে, কীভাবে দাউদাউ করে জ্বলছে আগুন।
বলা হচ্ছিল চলচ্চিত্র প্রযোজক আবদুল আজিজ এবং অভিনেত্রী মাহিয়া মাহির দা-কুড়াল সম্পর্কের কথা। গত শনিবার বিকালে আবদুল আজিজের চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া প্রেসরিলিজ পাঠিয়ে জানায়, জাজ থেকে মাহি নিষিদ্ধ। সেখানে আরও উল্লেখ করা হয়- মাহির উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন, ভিডিও স্ক্যান্ডাল প্রকাশ এবং একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্কের জের ধরে চলচ্চিত্রমহলের বিব্রতকর অবস্থার পাশাপাশি জাজ মাল্টিমিডিয়াও এক ধরনের অস্বস্তিতে পড়ে। এমনকি দুই দিন আগে প্রযোজক আরশাদ আদনানের [ভার্সেটাইল মিডিয়ার কর্ণধার] সঙ্গে মাহির গোপনে ভারতে আবকাশ যাপনের ঘটনা নিয়েও চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করতে থাকে। এ জন্য জাজ মাল্টিমিডিয়ার সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে মাহিকে নিয়ে আর কোনো কাজ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
এই প্রেসরিলিজের মাধ্যমে কার্যত জাজের সঙ্গে মাহির সম্পর্কের ইতি ঘটেছে।
এদিকে চলচ্চিত্রপাড়ার মানুষের পরিষ্কার ধারণা, দীর্ঘদিন ধরেই মাহিকে সরিয়ে দেওয়ার সুযোগ খুঁজছিল জাজের কর্ণধার আবদুল আজিজ। কারণ ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব। মাহির সঙ্গে একসময় তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলেই বিশ্বাস করেন চলচ্চিত্রকর্মীরা। আর তাই মাহিকে নিজ প্রতিষ্ঠানের বাইরে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হতে দেননি। তাদের প্রেমের গভীরতা এতটাই তীব্র ছিল যে, মাহিকে নাকি ফ্ল্যাট-গাড়িও কিনে দিয়েছেন আবদুল আজিজ। শুধু তাই নয়, মাহিকে প্রযোজক হিসেবেও দাঁড় করাতে চেয়েছিলেন। মাহির ক্যারিয়ার আকাশচুম্বী করতে কলকাতার সঙ্গে যৌথ প্রযোজনাও শুরু করেন। আর তাদের প্রেমের নিদর্শন এতটাই নিখাদ ছিল যে, জাজের প্রত্যেকটি ছবির নায়িকা ছিল মাহি। সব ছবির নায়ক বারবার পরিবর্তন হলেও মাহি থেকে গেছেন স্থির। জোয়ারের পর তো ভাটা। আবদুল আজিজের প্রেমেও ভাটা পড়েছে। তিনি খুঁজে নিয়েছেন নতুন নায়িকা- জনপ্রিয় উপস্থাপিকা নুসরাত ফারিয়াকে। বেশ জমকালো আয়োজনে পাঁচতারা হোটেলে নতুন নায়িকা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় ফারিয়াকে। আর এতে মাহি আরও ক্ষেপে যান। নিজেদের মধ্যে অভিমান থেকে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল, ফারিয়ার ঘটা করে আত্মপ্রকাশ তাদের আরও দূরে সরিয়ে দেয়। আবদুল আজিজের সঙ্গে এ নিয়ে মাহির তীব্র বাকবিতণ্ডা হয় বলে জানা গেছে বিভিন্ন সূত্রে। এরপর ফারিয়ার সঙ্গে আবদুল আজিজের অন্তরঙ্গতার খবর ভেসে বেড়ায় বাতাসে। আজিজের নতুন প্রেমিকা হিসেবেও ফারিয়ার নাম ছড়িয়েছে বেশ। সব মিলিয়ে মাহি অংক মিলিয়েছেন, তার প্রেমের বেলা শেষ। নেমে আসছে গাঢ় অন্ধকার। আর তাই মাহি চূড়ান্তভাবে জাজ থেকে সরে যেতে চেয়েছেন। অন্যদিকে জাজও খুঁজছিল মাহিকে নিষিদ্ধ করার একটি 'সুযোগ'। খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি জাজকে। দ্রুতই সুযোগ পেয়ে যায় জাজ। মাহি প্রযোজক আরশাদ আদনানের সঙ্গে কলকাতায় গিয়েছিলেন নতুন ছবির মিটিং করতে। সেখানে নায়ক দেবের সঙ্গে মিটিং করেন তারা। আর এ সুযোগে খবর ছড়ায় আরশাদ আদনানের সঙ্গে মাহির অভিসার। কেউ কেউ বলেছেন, মাহির নতুন প্রেমিক আরশাদ আদনান। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রেম কিংবা অভিসার নয়, তারা গিয়েছিলেন চলচ্চিত্রের মিটিং করতে। যেহেতু প্রেমের খবরটি ছড়িয়েছে, 'সুযোগ'টি লুফে নিয়েছে জাজ।
তারা নিষিদ্ধের কারণ হিসেবে আরও একটু বেশি রস লাগিয়ে উল্লেখ করেছেন, 'মাহির উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন', 'ভিডিও স্ক্যান্ডাল' এবং 'একাধিক প্রেম'। কিন্তু চলচ্চিত্রপাড়ার মানুষ পরিষ্কারভাবেই বিশ্বাস করে, সব কিছুর মূলেই রয়েছে 'মাহি বনাম ফারিয়ার অদৃশ্য যুদ্ধ'। যে যুদ্ধে নতুন প্রেমিকার কাছে হেরে গেলেন পুরনো প্রেমিকা মাহি।