ইংল্যান্ডের রানি মানেই যেন দারুণ একটা স্ক্রিপ্ট! বইপত্তর ঘাঁটলে কিংবা একটু পুরনো লোকজনকে জিঞ্জাসা করলেই উঠে আসবে রানি-মহারানির মনের কথা। টেলিভিশন সিরিজ হোক, হলিউডি ছবি হোক-রানি সব সময়েই হটকেক।
বর্ষীয়ান অভিনেত্রী জুডি ডেঞ্চ এবার কুইন ভিক্টোরিয়া। ‘ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড আবদুল’ ছবিতে। রানি আর তার রাঁধুনির বন্ধুত্বের গল্প। আবদুলের চরিত্রে আলি ফজল। পরদায় ইংল্যান্ডের রানি সাজার কিছু অভিজ্ঞতা কী রকম? অভিনেত্রীদের জবানি।
কেট ব্ল্যাঞ্চেট
ইংল্যান্ডের রানি প্রথম এলিজাবেথের জীবন নির্ভর এই ছবিতে রানির ভূমিকায় কেট ব্ল্যাঞ্চেট। পরিচালক শেখর কপূর। রানি হওয়ার পর এত বড় সাম্রাজ্য কীভাবে চালাবেন, সেই বিষয়টা তুলে ধরা হয়েছিল ছবিতে। অস্ট্রেলীয় অভিনেত্রী ইংল্যান্ডের রানির ভূমিকায়। ভাবা যায়! ইতিহাস আমাকে চিরকালই টানে। এলিজাবেথের ইতিহাসটাই এই ছবি করার জন্য যথেষ্ট ছিল।
হেলেন মিরেন
অস্কার এবং গোল্ডেন গ্লোব, দু’টোই পেয়েছিলেন হেলেন মিরেন। ২০০৭’এ। ‘দ্য কুইন’এ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের চরিত্রে অভিনয় করে। প্রায় এক দশক কেটে যাওয়ার পর আবার ব্রডওয়ে’তে একই চরিত্রে দেখা গেল হেলেনকে। ‘দি অডিয়েন্স’ নাটকে। এখানেও তিনি রানি। তরুণী এলিজাবেথ কীভাবে ‘রানি’ হয়ে উঠলেন সেই কাহিনিতে অভিনয় করেছিলেন হেলেন।
মনে আছে, যখন প্রথমবার ‘দ্য কুইন’এর কস্টিউমগুলো দেখেছিলাম, কেঁদে ফেলেছিলাম! মনে হয়েছিল, এই পোশাকগুলো যিনি পরেন, তাঁর চরিত্রে অভিনয় করতে পারব না। ঠিক যেমন পুলিশের ইউনিফর্ম। রানির পোশাকও তেমনই। তবে উনি জানেন, কোন জায়গায় কোন পোশাকটা পরতে হয়।
জেনা কোলম্যান
এই চরিত্রটা করা যে একটা ‘দায়িত্বে’র কাজ সেটা প্রথমেই স্বীকার করে নিয়েছিলেন জেনা। কারণ কুইন ভিক্টোরিয়ার মতো এত বড় মাপের চরিত্র করা রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছিল তার কাছে। যে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সূর্য কখনও অস্তমিত হতো না, তার সম্রাজ্ঞী ছিলেন ভিক্টোরিনা। মহারানি। ১৮ বছর বয়সে রানি হওয়া, প্রিন্স অ্যালবার্টের সঙ্গে তার প্রেম সবকিছু নিয়ে ভিক্টোরিয়াকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন নির্মাতারা। বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল এই সিরিজ। এত স্ট্রং, অনুপ্রেরণাদায়ক এবং বহুমুখী একটা চরিত্র পেয়ে খুব খুশি হয়েছিলাম। ব্রিটিশ ইতিহাসে
কুইন ভিক্টোরিয়ার মতো চরিত্র খুব কমই আছে।
ক্লেয়ার ফয়
প্রায় আট কোটি পাউন্ড খরচ করে অন-ডিমান্ড এনটারটেনমেন্ট ওয়েবসাইট নেটফ্লিক্স তৈরি করেছে ‘দ্য ক্রাউন’। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রথমদিকের রাজত্বকাল এই সিরিজের গল্পে। প্রিন্স ফিলিপের সঙ্গে রানির সম্পর্কটাও তুলে ধরা হয়েছে ছবিতে। নেটফ্লিক্সের সবচেয়ে বড় বাজেটের সিরিজ ‘দ্য ক্রাউন’। রানির চরিত্রে ক্লেয়ার ফয়।
রয়্যাল ফ্যামিলির কোনও সদস্যের চরিত্র করতে গেলে ভুলে যেতে হবে তুমি কী জানো, এবং এতদিন ধরে যে ধারণাগুলো মনের মধ্যে পুষে রেখেছ সেগুলোও। ওই পরিবারে যারা বেড়ে উঠেছেন, তাদের চরিত্রগুলো করা খুবই কঠিন। যে কেউ চাইবে সাধারণ মানুষের পর্যায়ে নামিয়ে এনে ওদের বিচার করতে। কিন্তু আসলে যখন চরিত্রটা করতে যাবে, সেটা মেলাতে পারবে না!
এমিলি ব্লান্ট
মহারানি ভিক্টোরিয়ার ছোটবেলা থেকে শুরু করে তার ‘কুইন ভিক্টোরিয়া’ হয়ে ওঠার গল্প বলা হয়েছে এই ছবিতে। সেরা কস্টিউম ডিজাইনিংয়ের জন্য অস্কার পেয়েছিল এই ছবি। প্রিন্স অ্যালবার্টের সঙ্গে প্রেম, ইংল্যান্ডের রাজনীতি, পরতে পরতে বিপদ এবং ষড়যন্ত্রের মধ্যে কীভাবে একটা সাম্রাজ্য চালিয়েছিলেন ভিক্টোরিয়া সেটাই এই ছবির মূল। ভিক্টোরিয়ার চরিত্রে এমিলি ব্লান্ট নজর কেড়েছিলেন দর্শক-সমালোচকের। হ্যাঁ, ‘ডেভিল ওয়্যার্স প্রাডার এমিলি ব্লান্ট। যিনি কিনা আদতে ফ্রেঞ্চ-কানাডিয়ান!
চরিত্রটার প্রতি যাতে সুবিচার হয়, সেটাই চেয়েছিলাম। কারণ উনি আমাদের দেশের শিক্ষা, সমাজ সংস্কার, স্থাপত্য, বিজ্ঞান, সাহিত্যের জন্য যা করেছেন, সেটাকে সম্মান জানানো জরুরি ছিল। আমি তো জানতাম না, ইংল্যান্ডের রানি মানে কী! কেউই জানে না!
বিডি প্রতিদিন/ ০২ জুন ২০১৭/আরাফাত