এক সময় বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম ছিল সিনেমা। সিনেমা হলগুলোরও ছিল জমজমাট ব্যবসা। কিন্তু বর্তমানে নানা কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছে সিনেমা হল ব্যবসা। সিনেমার গুণগত মান এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ভাল না হওয়ায় দর্শকরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে সিনেমা হল থেকে। পুঁজি হারিয়ে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় টিকে থাকা দায় হয়ে পড়েছে মালিক-শ্রমিকদের।ইতোমধ্যেই দর্শক না থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে জেলার ২৪টি সিনেমা হল বাকি ৩টি কোন রকমে টিকে আছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, তথ্য প্রযুক্তির প্রভাবে ইউটিউব আর অনলাইন থেকে ডাউনলোড করে হাতে হাতে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে সিনেমা দেখছেন দর্শকরা। তবে এক সময়ের জমকালো সিনেমা হল ব্যবসা আর জনপ্রিয়তা পাবে না- এমনটাই ধরে নিয়েছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নীলফামারী জেলায় ২৭টি সিনেমা হল ছিলো। ইতোমধ্যে দর্শক না থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে ২৪টি। আর কোন রকমে টিকে আছে জলঢাকার জনতা সিনেমা হল, ডোমারের কনিকা এবং সৈয়দপুরের তামান্না সিনেমা হল।
বাংলা ছবির গুনগত মান না থাকায় মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন দর্শকরা বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই।
জেলা শহরের দিপালী সিনেমা হল মালিক জিল্লুর রহমান বলেন, অনেকটা বাধ্য হয়েই হল বন্ধ করতে হয়েছে। গুণগত মান না থাকায় দর্শকরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। এক সময় প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার ব্যবসা হলেও তা নেমে দাঁড়িয়েছিল এক হাজার থেকে দুইহাজার টাকায়। কর্মচারীর বেতন থেকে শুরু করে আনুসঙ্গিক ব্যয় উঠানো মুশকিল হয়ে পড়েছে। ফলে হলটি বন্ধ করতে হয়।
শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের বাস্তবমুখী কোন পরিকল্পনা না থাকায় হল গুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, দুর্বল নির্মাণ শৈলীর কারণে প্রতিযোগীতায় টিকতে পারছেনা দেশীয় সিনেমা। যার কারণে দর্শক হারাচ্ছে দেশীয় সিনেমা।
জানতে চাইলে নীলফামারী শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার আরিফুজ্জামান আরিফ বলেন, সিনেমা হলের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হলে শিল্পকলা একাডেমির তত্বাবধানে সপ্তাহে অন্তত তিনদিন সিনেমা প্রদর্শন করতে হবে। সেক্ষেত্রে ডিজিটালাইজড হল তৈরি করে দর্শকদের নতুনত্ব দিতে হবে। সরকার এদিকে নজর দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদি আধুনিকতার সাথে সামঞ্জস্য রাখা যায়, তাহলে আবারো প্রাণ ফিরে পাবে সিনেমা হলগুলো।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার