মুঘলরা প্রায় ৩৩১ বছর ভারতীয় উপমহাদেশ শাসন করেছেন। স্থাপত্য, সাহিত্য, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, প্রশাসনসহ বিভিন্ন খাতে তারা অবদান রেখেছেন। তবে বলিউডে মুঘল শাসকদের চিত্রায়ন বেশিরভাগ সময় নেতিবাচকরূপে করা হয়। বিষয়টি পছন্দ নয় বলিউডের জনপ্রিয় নির্মাতা কবীর খানের। তার বক্তব্য, ‘দেশ গড়েছিল মুঘল শাসকরা, তারা ভিলেন নন।’
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ‘বজরঙ্গি ভাইজান’, ‘নিউ ইয়র্ক’-এর মতো ছবির পরিচালক জানিয়েছেন, সেই সকল ছবির প্রতি তার কোনও শ্রদ্ধা নেই যা মুঘল সম্রাটদের খলনায়ক হিসেবে তুলে ধরে, কারণ ‘প্রকৃত অর্থে ভারত গড়েছিলেন’ মুঘলরাই।
‘যোদ্ধা আকবর’ ছবিতে দেখানো হয়েছিল মুঘল সম্রাট আকবরের চরিত্রটি
বলিউড হাঙ্গামাকে তিনি বলেন, ‘আমি সত্যি বলতে আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে এটা ভীষণরকমভাবে সমস্যাযুক্ত এবং অস্বস্তিকর। সেই অস্বস্তিরমূল কারণ হল সকলে প্রচলিত কথার উপর ভিত্তি করে সেই ছবি বানায়। একজন নির্মাতা ইতিহাসনির্ভর ছবি করলে নিজে গবেষণা করবেন, এবং সেই তথ্য-অনুসন্ধানের উপর ভিত্তি করেই ছবি তৈরি হবে। সেখানে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন হতে পারে, তবে যদি আপনি মুঘলদের ক্ষতিকারক হিসাবে তুলে ধরতে চান দয়া করে সেটা যুক্তি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করুন। বুঝিয়ে দিন কেন তারা ভিলেন ছিলেন? বা আপনি কেন সেটা মনে করছেন। ….. আমি সত্যি এর পিছনে ইতিহাস পড়ে কোনও যুক্তি খুঁজে পাই না। আমার তো মনে হয়, তাঁরা প্রকৃত অর্থে আমাদের দেশ গড়েছে। তাদের এক্কেবারে ছেঁটে ফেলা, এটা বলা তারা হত্যাকারী, সেটার পিছনের তথ্য-প্রমাণ কই? শুধু তুমি জনপ্রিয় হবে বলে ইতিহাসবিকৃত করা অনুচিত’।
কবীর খানের কথায়, আজকের দিনে মুঘল এবং অন্য সকল মুসলিম শাসকদের খাটো করে দেখানোটা খুব সহজ কাজ।
'পদ্মাবত', ‘পানিপথ’, ‘তানাজি’-র মতো বহু ছবিতে সাম্প্রতিক সময়ে মুঘল ও মুসলিম শাসকদের নেগেটিভভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এমনকি 'তানাজি' ছবির অভিনেতা সাইফ আলি খান নিজেও বলেছিলেন, ‘ছবিতে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে।’
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা