রংপুরের গঙ্গাচড়ার বড়াইবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে পাঁচ সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রতি গঙ্গাচড়ায় কর্মরত সকল সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে এই কর্মসূচির আয়োজন করে সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজ। মানববন্ধনটি সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক আলী আরিফ সরকার রিজু।
হামলার শিকার সাংবাদিকরা হলেন—চ্যানেল এস-এর প্রতিনিধি সোহেল, মুক্ত খবরের প্রতিনিধি শিমু, দৈনিক ঘোষণা পত্রিকার প্রতিনিধি আজমীর, চ্যানেল ওয়ান-এর রানু মিয়া ও দৈনিক লিখনী সংবাদের প্রতিনিধি আব্দুর রাজ্জাক। তারা অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীর জামানের নেতৃত্বে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় একাধিক সাংবাদিক আহত হন এবং তাদের ক্যামেরা ও অন্যান্য সরঞ্জাম ভাঙচুর ও ছিনতাই করা হয়।
সাংবাদিকদের অভিযোগ, হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে গঙ্গাচড়া থানার ওসি মামলা গ্রহণে গড়িমসি করেন এবং উল্টো সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। এতে প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক আচরণ ও দায়িত্বহীনতা স্পষ্ট হয়েছে বলে তারা উল্লেখ করেন।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন গঙ্গাচড়া প্রেসক্লাব সভাপতি ও কালের কণ্ঠ প্রতিনিধি সাজু আহমেদ লাল। বক্তব্য দেন দৈনিক সকালের বানী প্রতিনিধি মাহফুজার রহমান মাহফুজ, দৈনিক সংগ্রামের আশরাফুল ইসলাম, উপজেলা প্রেসক্লাব আহ্বায়ক আব্দুল আলীম প্রামানিক এবং রিপোর্টার্স ক্লাব রংপুরের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান লুলু।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিদ্যালয়ের দুর্নীতির বিষয়ে প্রতিবেদন করার কারণেই সাংবাদিকদের ওপর পরিকল্পিত হামলা চালানো হয়েছে। এর নেপথ্যে রয়েছে রাজনৈতিক প্রভাবশালী মহল। আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘সাংবাদিকদের ভূমিকার কারণেই বিদ্যালয়ের রাজনৈতিক কমিটি বাতিল হয়। এর জেরে যুবলীগ নেতার পরামর্শে প্রধান শিক্ষক এই হামলার নির্দেশ দেন।’
আব্দুল আলীম প্রামানিক বলেন, ‘আমরা কলম সৈনিক। আমাদের থামানো যাবে না। হামলাকারীরা যদি মনে করে সাংবাদিকদের ভয় দেখিয়ে দমন করা যাবে—তাহলে তারা ভুল করেছে।’
রিপোর্টার্স ক্লাব রংপুরের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান লুলু বলেন, ‘সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রশাসনের দায়িত্ব। কিন্তু এখানে দেখা যাচ্ছে, হামলাকারীদের না ধরে উল্টো সাংবাদিকদের বিরুদ্ধেই মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে। এটি প্রশাসনের গাফিলতি ও পক্ষপাতিত্বের উদাহরণ।’
সমাবেশে বক্তারা হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গঙ্গাচড়া থানার ওসিকে অপসারণের দাবি জানান। তা না হলে গঙ্গাচড়ার সাংবাদিক সমাজ কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছে। মানববন্ধনে উপজেলার সকল সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ