দেশের পর্যটন খাতে চলছে মন্দা ভাব। এই ব্যবসার বড় অংশই এখন দেশি পর্যটকনির্ভর হয়ে পড়েছে। এর ফলে বিদেশ থেকে আসা পর্যটকদের খরচও কমে গেছে। এক বছরে এই খাতে বিদেশি পর্যটকদের খরচ কমেছে ১ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার। প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য ১২২ টাকা ধরলে বাংলাদিশ মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ১৫৯ কোটি টাকা।
সম্প্রতি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর অর্থনৈতিক ও সামাজিক নানা সূচকের ওপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। এতে দেশ ও অঞ্চলভেদে বিভিন্ন সূচকের অবস্থান প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালে বাংলাদেশ বিদেশি পর্যটকদের কাছ থেকে আয় করেছিল ৪৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার। ২০২৪ সালে এই আয় কমে দাঁড়িয়েছে ৪৪ কোটি ডলারে।
জানা গেছে, মূলত বিদেশি পর্যটক আসা কমে যাওয়ায় এই খাত থেকে আয়ও কমে গেছে। বিদেশিরা বাংলাদেশে এসে থাকা–খাওয়া ও ঘোরাঘুরি বাবদ যে অর্থ ব্যয় করেন, সেটি বিদেশি পর্যটকদের কাছ থেকে বাংলাদেশের আয় হিসেবে ধরা হয়।
এডিবির প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, নেপাল, ভুটানসহ বাংলাদেশের পর্যটন খাতের আয় ও পর্যটকের আগমন সংখ্যা প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিদেশি পর্যটক ভ্রমণ করেন ভারতে। তারপরের অবস্থান মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার। ভারত ২০২৩ সালে বিদেশি পর্যটকদের কাছ থেকে আয় করেছিল ৩ হাজার ২২০ কোটি ডলার। ২০২৪ সালে এই আয় বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৫০২ কোটি ডলার। এক বছরের ব্যবধানে শ্রীলঙ্কায় এই আয় ১০১ কোটি ডলার বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩১৭ কোটি ডলারে।
এডিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে প্রায় ১ কোটি ৭৪ লাখ পর্যটক দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন। ২০২৩ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২ কোটি ৩৩ লাখে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০২০ সালে প্রকাশিত ট্যুরিজম স্যাটেলাইট অ্যাকাউন্ট শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশি–বিদেশি মোট ১৬ লাখ ৪০ হাজার পর্যটক বাংলাদেশ ভ্রমণ করেন। তাদের মধ্যে প্রবাসী বাংলাদেশি (এনআরবি) পর্যটক ১৩ লাখ ৫০ হাজার, যা শতাংশের হিসাবে ৮০ শতাংশের বেশি। আর বিদেশি পর্যটক ২ লাখ ৯০ হাজার, যা শতাংশের হিসাবে প্রায় ২০ শতাংশ। তাদের মধ্যে ৭২ শতাংশ পর্যটক আকাশপথে ভ্রমণ করেন। বাকি ২৮ শতাংশ ভ্রমণ করেন স্থলপথে।
বিডি প্রতিদিন/একেএ