২১ আগস্ট, ২০১৯ ১৭:১৭

এখন ‘আলাদা’ হইতে মানুষ ইনসিকিউর ফিল করে

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

এখন ‘আলাদা’ হইতে মানুষ ইনসিকিউর ফিল করে

সোশ্যাল মিডিয়ার সবচেয়ে বড় ভূমিকা হচ্ছে এটা মানুষকে এক অন্তহীন হীনম্মন্যতার টোপে আটকে ফেলছে। আগে ''আলাদা'', ''ভিন্ন'' হওয়ার মধ্যে মানুষ সার্থকতা খুঁজে পেতো। এখন ''আলাদা'' হইতে মানুষ ইনসিকিউর ফিল করে। মানুষ এখন সেই বার্গার খাইতেই লাইন দিবে যেটা সবাই খাচ্ছে। সেটা খাইয়া একটা সেলফি না দিতে পারলে সে তার সোশ্যাল রিলাভেন্স হারাইয়া ফেলার আতঙ্কে থাকবে। এখন মানুষ সেই গানই শেয়ার দিবে যেটা আরো তিরিশ মিলিয়ন লোকে শেয়ার দিছে। সেই সিনেমা দেখতেই হল ভাইঙ্গা ফেলবে যেটা পত্রিকার রিপোর্টে ওপেনিং উইকেই হান্ড্রেড মিলিয়ন আয় করছে। তা সেই ছবি যতোই স্টুপিড ''গান্জারামন সর্দারন'' হউক না কেনো। কারণ সেই ছবির হল থেকে দেয়া সেলফিটাই যে কেবল তার অস্তিত্বকে এনডোর্স করছে, দুনিয়াকে বলছে ''আমিও আছি, আমিও ছিলাম এই স্রোতে, ভুলো না আমায়!''

কখনো দেখি নাই ওয়ারফেজ মমতাজের মতো বিক্রি হইতেছে না বইলা ওয়ারফেজ বা তার ফ্যানদের হীনমন্যতায় ভুগতে। কিন্তু এখন হইলে ভিউ’র লজ্জায় তাহাদের কাটা মাথা তাহারা কোথায় রাখিবে তার দিশা খুঁজিয়া পাইতো না। আমার ছবি কোনোদিনও এক নম্বর ব্যবসাসফল ছবি হয় নাই, হইছে ডিপজল সাহেবের ছবি, তাতে আমি বিন্দুমাত্র হীনমন্যতায় ভুগছি বইলা তো মনে পড়ে না।

আজকে নতুন ছেলেদের সাথে কথা বললে দেখি, ভিউ’র চাপে তারা ম্রিয়মাণ! তারা নতুন ছবি বানানোর, নতুন সুর করার, নতুন কথা লিখার আগেই ভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ খাবে তো? তার দোষই বা কি? তাকে সমর্থন দিয়ে আগাইতে সাহায্য করবে সেই ভোক্তা কই?

যে ভোক্তা আলাদা হইয়া নতুন সুর, নতুন চিন্তা, নতুন কথাকে ছোট হইলেও একটা ধারায় পরিণত করার কথা সে নিজেই তো অস্তিত্বের সংকটে হংসমতো ধুঁকছে। স্রোতের মধ্যে হাঁসের মতে মাথাটা লুকাইয়া কোনমতে অস্তিত্ব টিকাইয়া রাখার সংগ্রামে মানবজাতিকে নামাইয়া দিলো যে সোশ্যাল মিডিয়া, আমরা তার কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করিবো?

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

বিডি-প্রতিদিন/শফিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর