রবিবার, ৩০ মার্চ, ২০১৪ ০০:০০ টা
সাবেকদের আমলনামা

ছেঁড়া পাঞ্জাবির আহাদ আলী সরকার এখন নেতা-কর্মী শূন্য

ছেঁড়া পাঞ্জাবির আহাদ আলী সরকার এখন নেতা-কর্মী শূন্য

নাটোর সদর থেকে নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য এবং মহাজোট সরকারের প্রভাবশালী সাবেক ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ার পর ঢাকা-নাটোর আসা-যাওয়া আর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কেন্দ্র ও স্থানীয়ভাবে ঘোষিত দলীয় কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশগ্রহণ করার মধ্যেই রাজনীতি সীমাবদ্ধ রেখেছেন বলে দলের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। তাছাড়া শারীরিক অসুস্থতা এবং দুই পুত্র সোহেল সরকার এবং বকুল সরকারের নানা অপকর্ম ও পাওনাদারদের কারণে নির্বাচনী এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ নেই বললেই চলে। তবে সদ্য অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিজ দলের প্রার্থীদের বিজয়ী করার জন্য তাকে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করতে দেখা গেছে।

দলীয় একাধিক সূত্র জানান, আহাদ আলী সরকার দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ার পর থেকেই তার শহরের জেলেপাড়ার বাসভবনে আগের মতো উপচে পড়া ভিড় নেই। নেতা-কর্মী এবং সমর্থক শূন্য অবস্থায় বেশির ভাগ সময় তাকে নাটোর শহরে চলাফেরা করতে দেখা যায়। এক সময় যারা সাবেক মন্ত্রীর কাছের মানুষ হিসেবে নাটোর সদর থানাবাসীর কাছে পরিচিত ছিল তারা আজ নাটোর সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল এবং সদর উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম রমজানের সঙ্গে চলাফেরা করতে দেখা যায়। আহাদ আলী সরকারের কট্টর সমর্থক হিসেবে যারা বিগত দিনে সরকারি বিভিন্ন দফতরের টেন্ডার বাণিজ্য, নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্যের মাধ্যমে পাহাড় সমান অর্থ সম্পদের মালিক বনে গেছেন তারা এখন মন্ত্রীর ছায়া পর্যন্ত মাড়ান না। বরং প্রকাশ্যে দলীয় ফোরামে বলেন, আহাদ আলী সরকার আমাদের জন্য কিছুই করেননি। ক্ষমতা যাওয়ার পর টয়োটা এঙ্ জি ২০১০ মডেলের একটি প্রাইভেট কার কিনেছেন আহাদ আলী সরকার। বেশির ভাগ সময় তিনি ঢাকায় অবস্থান করলেও মাঝে মধ্যে দলীয় কর্মসূচি উপলক্ষে নাটোর আসেন তিনি। মাসে ৪ থেকে ৫ দিন নাটোর অবস্থান করেন। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে চলাফেরা করতে দেখা যায়। জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নামপ্রকাশে অনইচ্ছুক একাধিক নেতা-কর্মী জানান, সাবেক ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকারের দুই পুত্র সোহেল সরকার ও বকুল সরকারের কাছে নানা অপকর্মের কারণে মন্ত্রিত্ব হারানোর পরও শান্তিতে নেই তিনি। মন্ত্রী থাকাকালে দুই পুত্র পুলিশ, খাদ্য বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ক্রীড়া মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন বিভাগে নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতি এবং হাট-বাজার ইজারা, টেন্ডার দেওয়ার কথা বলে আগাম বাণিজ্য করেছে তারা এখন গা ঢাকা দিয়েছে। আহাদ আলী সরকার নাটোর এলেই দুই পুত্রের পাওনাদারদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। সম্প্রতি মন্ত্রীর দুই পুত্রের ক্যাশিয়ার বলে পরিচিত মির্জা খোকনকে দলীয় নেতা-কর্মীরা পাওনা টাকার জন্য তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। মূলত এ কারণেই তিনি প্রয়োজন ছাড়া নাটোরে আসতে চান না।

 

সর্বশেষ খবর