সোমবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক

যে কোনো মূল্যে গণশুনানি হবেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

পূর্বঘোষণা অনুযায়ী ২৪ ফেব্রুয়ারি গণশুনানি অনুষ্ঠানের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। গতকাল বিকালে ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং ও সমন্বয়ক কমিটির যৌথসভার পর  জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব এ কথা জানান। তিনি বলেন, গণশুনানির কথা শুনে তারা (সরকার) ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকা শহরের সব হল বুক করে রেখেছে। এরপরও আমরা করব। যত প্রতিবন্ধকতা আসুক, যেখানেই পারি আমরা ২৪ তারিখ ঢাকায় গণশুনানি করব। যেখানেই জায়গা পাই, আমরা গণশুনানি করব। গতকাল বিকাল ৪টায় মতিঝিলে গণফোরামের কার্যালয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং ও সমন্বয় কমিটির এ বৈঠক হয়। গণশুনানির জন্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তন, রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তন, গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চ, কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তন কর্তৃপক্ষের কাছে ঐক্যফ্রন্ট আবেদন  করে। কিন্তু কোথাও তারা অনুমতি পায়নি।

আ স ম আবদুর রব বলেন, তারা (সরকার) বিভিন্ন হল কর্তৃপক্ষকে বলছে, পুলিশের অনুমতি ছাড়া হল বুকিং দেওয়া যাবে না। তারা আমাদের গণশুনানির কথা শুনে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনেক হল বুক করে রেখেছে। গণশুনানিতে অংশগ্রহণের জন্য ক্ষমতাসীন জোট ছাড়া বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দলের প্রার্থী ও ভোটের সহিংসতায় নিহতদের স্বজন ও আক্রান্তদের শুনানিতে আমন্ত্রণ জানানোর কাজ শুরু হয়েছে। আ স ম রব বলেন, ‘জনগণ কি ৩০ ডিসেম্বর ভোট দিতে পেরেছে? সারা পৃথিবীতে ভোট হয় দিনের  বেলা। বাংলাদেশে ভোট হয়েছে ২৯ তারিখ রাতে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর গোপালগঞ্জ ছাড়া আর ৬৩ জেলার যে কোনো একটি আসনের একটি কেন্দ্রে লটারি করে এই সরকার যদি প্রতীক নিয়ে ধানের শীষের বিপক্ষে জিততে পারে তাহলে আমরা রাজনীতি থেকে বিদায় নেব।বৈঠকে জেএসডির আবদুর রব, আবদুল মালেক রতন, শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, হাবিবুর রহমান, বিএনপির আবদুল মঈন খান, আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মহসীন মন্টু, জগলুল হায়দার আফ্রিক, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, মমিনুল ইসলাম, আতিকুর রহমান, শহীদুল্লাহ কায়সার, বিকল্পধারার নুরুল আমিন ব্যাপারী, শাহ আহমেদ বাদল, জনদলের গোলাম মওলা চৌধুরী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, লতিফুর বারী হামীম, মোশাররফ হোসেন, আজমেরী বেগম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে ঐক্যফ্রন্টের আরও ৭ প্রার্থীর মামলা : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আরও সাত প্রার্থী মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তারা পৃথক পৃথকভাবে এসব আবেদন দাখিল করেন।

আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছেন অ্যাডভোকেট আবু ইউসুফ মো. খলিলুর রহমান (জয়পুরহাট-২), মাহমুদুল হক রুবেল (শেরপুর-৩), আবু ওহাব আকন্দ ওয়াহিদ (ময়মনসিংহ-৪), আবুল হোসেন খান (বরিশাল-৬), মো. শরিফুল আলম (কিশোরগঞ্জ-৬), শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন (জামালপুর-৫) এবং আনোয়ারুল হক (নেত্রকোনা-২)। আবেদনকারীদের আইনজীবীরা হলেন অ্যাডভোকেট এম আতিকুর রহমান, অ্যাডভোকেট সগীর হোসেন লিয়ন এবং অ্যাডভোকেট খন্দকার বাহার রুমী। এর আগে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিএনপি, গণফোরাম ও প্রগ্রেসিভ ডেমোক্রেটিভ পার্টির (পিডিপি) ৭৪ জন প্রার্থী হাই কোর্টের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছিলেন। প্রত্যেক আবেদনকারী নিজ নির্বাচনী আসনের অন্য প্রার্থীদের বিবাদী করেছেন। আবেদনে বিবাদীদের প্রতি নোটিস ও সাক্ষীদের তলবের আরজি জানানো হয়েছে। আর ওই আসনের বিজয়ী প্রার্থীর সংসদ সদস্য পদ বাতিল চাওয়া হয়েছে আবেদনে। এছাড়া প্রত্যেক সংসদীয় আসনের নির্বাচন বাতিল চাওয়া হয়েছে। নির্বাচনী আবেদন শুনানির জন্য বিচারপতি সৌমেন্দ্র সরকার, বিচারপতি রেজাউল হাসান, বিচারপতি একেএম জহিরুল হক, বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান, বিচারপতি মাহমুদুল হক ও বিচারপতি কাশেফা হোসেনকে নিয়ে পৃথক পৃথক নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

সর্বশেষ খবর