সোমবার, ৬ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

মাঠে আওয়ামী লীগ, ভোটে যাচ্ছে না বিএনপি

বগুড়া-১ ও যশোর-৬ উপ-নির্বাচন

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী ১৪ জুলাই করোনার মধ্যেই বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) এবং যশোর-৬ (কেশবপুর উপজেলা) উপনির্বাচন। এরই মধ্যে মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা। ছোটখাটো অন্য দলগুলোও ভোটে লড়বেন। তবে করোনা ও বন্যা পরিস্থিতির কারণে এই দুই উপনির্বাচনে যাচ্ছে না বিএনপি। গতকাল রাতে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি রাতে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপনির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মতামত গ্রহণ করা হয়েছে। দেশে করোনাভাইরাসের বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনোভাবেই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পরিবেশ নেই বলেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, এরপরও যদি ইসি নির্বাচনে যায়, তাতে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে।

এ দিকে বগুড়া থেকে আবদুর রহমান টুলু জানান, করোনার মধ্যেই বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসন উপনির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী। তবে বিএনপির প্রার্থী হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। অন্য প্রার্থীদের নড়াচড়া নেই বললেই চলে। শনিবার নির্বাচন কমিশন ভোট অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেওয়ায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী প্রয়াত এমপির সহধর্মিণী সাহাদারা মান্নান প্রচারণা শুরু করেছেন। নৌকার প্রার্থী গতকাল সকাল থেকেই সারিয়াকান্দির বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ, প্রচারণা শুরু করেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাহাদারা মান্নান জানান, প্রয়াত এমপি আবদুল মান্নান সবসময় এলাকার উন্নয়নে কাজ করেছেন। সুখে-দুঃখে মানুষের পাশে থাকতেন। তার মতো দুটি উপজেলায় আমিও মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থাকব। আবদুল মান্নানের গৃহীত উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আপ্রাণ চেষ্টা করব। করোনার মধ্যে নির্বাচন না করে তারিখ পেছানোর দাবি জানিয়ে বিএনপির প্রাথী এ কে এম আহসানুল তৈয়ব জাকির বলেন, সারবিশ্ব করোনা আক্রান্ত, সারিয়াকান্দি-সোনাতলা নদী ভাঙন কবলিত, মানুষের দুঃসময়ে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা ঠিক হয়নি। এখনো গ্রামেগঞ্জে সেভাবে করোনা প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়নি, ভোটের প্রচারণায় এক এলাকার নেতা-কর্মী অন্য এলাকায় যাবে, এতে করে করোনা সংক্রমণের শঙ্কা বাড়বে। তাই করোনা পরিস্থিতি ভালো হলে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে তারিখ পেছানোর আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির প্রার্থী। তবে অন্য প্রার্থীরা এখনো মাঠে নামেননি। জাপা মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ মোকছেদুল আলম আজ সোমবার থেকে প্রচারণা শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন। সংসদ উপনির্বাচনে এমপি পদে এবার ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী প্রয়াত সংসদ সদস্য আবদুল মান্নানের সহধর্মিণী ও সারিয়কান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহাদারা মান্নান (নৌকা), বিএনপি প্রার্থী এ কে এম আহসানুল তৈয়ব জাকির (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির প্রার্থী অধ্যক্ষ মোকছেদুল আলম (লাঙ্গল), প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টির মো. রনি (বাঘ), খেলাফত আন্দোলনের প্রার্থী প্রভাষক নজরুল ইসলাম (বটগাছ) ও সতন্ত্র প্রার্থী ইয়াসির রহমতুল্লাহ ইন্তাজ (ট্রাক)।

যশোর থেকে সাইফুল ইসলাম জানান, যশোর-৬ (কেশবপুর উপজেলা) আসনে উপনির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণার পরপরই আওয়ামী লীগ প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার নেতা-কর্মীদের নিয়ে গতকাল কেশবপুর যান। সেখানে তিনি এই করোনা পরিস্থিতিতে ব্যক্তিগত দূরত্ব বজায় রেখে কীভাবে প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে সে ব্যাপারে নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দেন। গতকাল থেকেই তিনি প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন। এলাকায় তার সমর্থনে মাইকিংও শুরু হয়ে গেছে। তবে বিএনপি প্রার্থী দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন আজাদ এলাকাতে অবস্থান করলেও নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেননি। তিনি বলেন, মানুষের কল্যাণের জন্যই রাজনীতি। যে রাজনীতি মানুষের কল্যাণ বয়ে আনে না, তার প্রয়োজনীয়তা কতটুকু? আবুল হোসেন আজাদ বলেন, ২৯ মার্চ এই আসনে ভোটগ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়। তখনকার সময়ের চেয়ে করোনা পরিস্থিতি এখন অনেক খারাপ। রেড জোন, লকডাউন আর কোয়ারেন্টাইনের কথা বলা হচ্ছে। এরকম পরিস্থিতে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো এবং ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া কতটুকু সমীচীন হবে, তা ভেবে দেখার বিষয়। তারপরও আমি এলাকায় আছি, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা পেলেই আমি সে অনুযায়ী কার্যক্রম গ্রহণ করব।

দুই উপনির্বাচনে যাচ্ছে না বিএনপি : করোনা ভাইরাস ও বন্যার কারণে বগুড়া-১ ও যশোর-৬ আসনের উপনির্বাচন বর্জন করবে বিএনপি। গতকাল রাতে দলের স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে নিজ নিজ বাসা থেকে যুক্ত ছিলেন- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু প্রমুখ। লন্ডন থেকে যুক্ত থেকে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকে সবার সম্মতিতে দুই উপনির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর