শিরোনাম
সোমবার, ১১ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা
৯২ বছরে বদরুদ্দোজা চৌধুরী

জীবনের আনন্দ শেষ করে দিয়েছে কভিড

নিজস্ব প্রতিবেদক

জীবনের আনন্দ শেষ করে দিয়েছে কভিড

দেশের খ্যাতিমান চিকিৎসক ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ৯২ বছরে পা রাখলেন। আজ ১১ অক্টোবর তাঁর ৯১তম জন্মবার্ষিকী। বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী বি চৌধুরী ১৯৩০ সালের ১১ অক্টোবর কুমিল্লা শহরে (প্রখ্যাত মুন্সেফ বাড়ি) মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থানার মজিদপুর দয়হাটা গ্রামে। বি চৌধুরীর পিতা অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন চৌধুরী কৃষক প্রজা পার্টির সহসভাপতি, যুক্তফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। জন্মদিন উপলক্ষে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে কথা হয় তাঁর। তিনি বলেন, জীবনের আনন্দ শেষ করে দিয়েছে কভিড-১৯। বন্দীজীবন কাটাতে হচ্ছে এখন। আগে তেমনটা ছিল না। এখনকার জন্মদিন আর কভিড-পূর্ব জন্মদিনে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। সেসময় অনেক আনন্দ ছিল। বন্ধু-বান্ধব যারা ছিলেন, তারা আসতেন। কথা বলতাম। একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করতাম। আলাদাই একটা আনন্দ ছিল তখন। তিনি বলেন, জীবনের অনেক মাধুর্য ছিল তখন। একসঙ্গে হওয়া, কোলাকুলি করা, আনন্দ করা, হাসি, গান এগুলো প্রায় সবই বন্ধ হয়ে গেছে এখন। আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, প্রিয়জন, ছাত্র-শিক্ষক, দেশের মানুষজন সবার কাছ থেকে শুভেচ্ছা পাওয়া- এসবের কিছুই করতে পারিনি। তাই বারবার মনে হচ্ছে- যদি কভিড না থাকত- তাহলে জন্মদিনটা আরও সুন্দর হতো।

বিকল্পধারা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সাবেক এই রাষ্ট্রপতির ৯২তম জন্মদিন উপলক্ষে বিকল্পধারা বাংলাদেশ মধ্যবাড্ডার দলীয় কার্যালয়ে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- নিম্নআয়ের মানুষের মধ্যে মাস্ক বিতরণ, কেক কাটা, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা।

এদিকে বি চৌধুরীর জন্মদিন উপলক্ষে বিকল্পধারা যুক্তরাজ্য শাখা আলাদা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সাবেক এই রাষ্ট্রপতির জন্মদিন উপলক্ষে লন্ডনের স্পেকট্রাম বাংলা রেডিও ও অনলাইন টিভিতে আজ যুক্তরাজ্য সময় দুপুর ২টায় এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

অধ্যাপক বি চৌধুরী ছোট বেলা থেকেই ছিলেন কৃতী ছাত্র। ১৯৪৭ সালে ঢাকার বিখ্যাত স্কুল সেন্ট গ্রেগরী স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৪৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আইএসসি পাস করেন। তিনি ১৯৫৪-৫৫ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। সব পরীক্ষাতেই তিনি মেধা তালিকায় ছিলেন। ডা. বি চৌধুরী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের অনুরোধে ১৯৭৮ সালে রাজনীতি শুরু করেন। তিনি মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থেকে ১৯৭৯ সালে প্রথম এমপি নির্বাচিত হন এবং কেবিনেট মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে তিনি দ্বিতীয়বার এমপি নির্বাচিত হন এবং প্রথমে শিক্ষামন্ত্রী ও পরে সংসদ উপনেতা হন। ১৯৯৬ সালে তিনি সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতার দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ ২০০১ সালে তিনি পুনরায় এমপি নির্বাচিত হন এবং প্রথমে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক কারণে ২০০২ সালের ২১ জুন রাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। ২০০৪ সালের ৮ মে বিকল্পধারা বাংলাদেশ নামের একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে তিনি দলটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর সহধর্মিণীর নাম হাসিনা ওয়ার্দা চৌধুরী। অধ্যাপক চৌধুরী দুই মেয়ে এবং এক ছেলের জনক। তাঁর বড় মেয়ে মুনা চৌধুরী ব্যারিস্টার। ছোট মেয়ে শায়লা চৌধুরী পেশায় চিকিৎসক এবং ঢাকার উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজে অধ্যাপনা করেন। একমাত্র ছেলে মাহী বি চৌধুরী রাজনীতিবিদ ও সংসদ সদস্য এবং মিডিয়া ব্যক্তিত্ব।

সর্বশেষ খবর