শুক্রবার, ২২ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

মারিউপোল দখলের দাবি রাশিয়ার

২ হাজারের বেশি ইউক্রেন সেনা অবরুদ্ধ, শান্তি বৈঠক চায় কিয়েভ, মস্কোর অনাস্থা

প্রতিদিন ডেস্ক

মারিউপোল দখলের দাবি রাশিয়ার

মারিউপোলের স্টিল কারখানা থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। এ কারখানায় ২ হাজারের বেশি ইউক্রেনীয় সেনা অবস্থান করছেন -এএফপি

ইউক্রেনের বন্দর শহর মারিউপোলে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর রাশিয়া এটিকে স্বাধীন এলাকা বলে ঘোষণা করেছে। তবে এ শহরের আজভস্টল স্টিল কারখানার ভূগর্ভে আটকে থাকা ২ সহস্রাধিক ইউক্রেনীয় এবং তাদের সঙ্গে থাকা বিদেশি ভাড়াটিয়া সেনাদের নিশ্চিহ্ন না করতে নির্দেশ দিয়েছে মস্কো। প্রেসিডেন্ট পুতিন সবাইকে আটকে রাখার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, সেখান থেকে যেন একটা মাছিও বাইরে বের হতে না পারে। এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আটকে পড়া সেনাদের মুক্ত করতে রাশিয়ার কাছে নিঃশর্ত শান্তি বৈঠকের অনুরোধ জানিয়েছে। জবাবে রাশিয়া ‘বারংবারের ওয়াদা ভঙ্গকারী’ উল্লেখ করে তার প্রতি অনাস্থার কথা জানিয়েছে। সূত্র : আলজাজিরা, স্পুটনিক, রয়টার্স, এএফপি।

এক খবরে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের অবরুদ্ধ বন্দরনগরী মারিউপোলের সর্বশেষ শক্ত অবস্থান আজভস্টল স্টিল কারখানায় অভিযানের পরিকল্পনা বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গতকাল তিনি রুশ সেনাবাহিনীকে নিশ্চিহ্ন অভিযানের বদলে কারখানাটি অবরুদ্ধ করে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগুকে এই নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। এর কয়েক দিন আগে সোইগু প্রেসিডেন্টকে জানান, আজভস্টল কারখানায় ২ হাজারের বেশি ইউক্রেনীয় এবং তাদের সহযোগী যোদ্ধা লুকিয়ে রয়েছে। বিশালাকার এই কারখানায় মাটির নিচে আশ্রয় নেওয়ার পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে। ক্রেমলিন থেকে টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত বৈঠকে সোইগুকে উদ্দেশ্য করে পুতিন বলেন, ‘শিল্প এলাকায় অভিযানের পরিকল্পনা অপ্রয়োজনীয় বলে বিবেচনা করছি। আজভস্টল কারখানায় অভিযান বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে রুশ সেনাদের জীবন রক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ভূগর্ভস্থ এসব সমাধিক্ষেত্রগুলোতে ঢুকে পড়ার এবং শিল্প কেন্দ্রের মাটির নিচে হামাগুড়ি দেওয়ার কোনো দরকার নেই। শিল্প এলাকাটি ঘিরে রাখুন, যাতে একটা মাছিও বের হতে না পারে।’ 

মারিউপোল এখনস্বাধীন : ইউক্রেনের এই শহরকে মুক্ত করতে সফল হয়েছে রাশিয়া। পুতিন বলেছেন, ‘মারিউপোলকে সফলভাবে মুক্ত করতে পেরে আমি গর্বিত।’ পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইউক্রেনের বন্দর শহর বলে পরিচিত মারিউপোল। এই বন্দর শহর দখল হওয়ার ফলে ২০১৪ সাল থেকে ‘স্বাধীন’ ক্রিমিয়ায় যাওয়ার পথ প্রশস্ত হলো রুশ বাহিনী এবং তাদের সহযোগীদের।

শান্তি বৈঠকের প্রস্তাব : ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অনতিবিলম্বে রাশিয়ার সঙ্গে আবারও শান্তি বৈঠকের অনুরোধ জানিয়ে উল্লেখ করেছেন, তার এই প্রস্তাব নিঃশর্ত। আজভস্টল স্টিল কারখানার ভূগর্ভে আটকে থাকা সেনাদের ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে তিনি তাদের হাতে আটক রুশ সেনাদের মুক্তি দিতে চান। এ বিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ গণমাধ্যমকে বলেন, আলোচনা নিয়ে ইউক্রেনের দিক থেকে ধারাবাহিকতার অভাব আলোচনা কার্যকর করতে খারাপ পরিণতি ডেকে আনছে। বারবার তারা অঙ্গীকার ভঙ্গ করছে এবং প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে চলছে। এরপর পেসকভের মতোই একই কথা বলেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা।

লুহানস্কের ৮০ শতাংশ রাশিয়ার দখলে : ইউক্রেনে রাশিয়া সর্বাত্মক অভিযানের শুরুর আগে পূর্ব ইউক্রেনের লুহানস্কের ৬০ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণের কথা জানিয়েছিল রুশ সমর্থিত সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। কিন্তু রুশ অভিযানের দুই মাসের মাথায় ইউক্রেন সরকার এখন বলছে, রুশ বাহিনী লুহানস্কের ৮০ শতাংশ দখল নিয়েছে। দনবাসের এই এলাকাটির হাসপাতাল, মর্গসহ বেশির ভাগ জায়গায় রুশ যোদ্ধারা বিচরণ করছে।

সর্বশেষ খবর