প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ চা-বাগান মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। এ খবর জানার পর দুই দিনের জন্য শ্রমিকরা মিছিল-সমাবেশ বন্ধ রেখেছেন। শ্রমিকরা চেয়ে আছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখের দিকে। চা শ্রমিক অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মোহন রবি দাস বলেন, প্রধানমন্ত্রী মালিক পক্ষের সঙ্গে বসবেন। তাই আমরা আন্দোলন দুই দিনের জন্য সীমিত করেছি। এই দুই দিন শ্রমিকরা বড় কোনো কর্মসূচিতে যাবে না। তবে বাগানে শ্রমিকদের কাজ বন্ধ থাকবে। আমরা ওই বৈঠকের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছি। প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের চলমান আন্দোলন নিয়ে চা-বাগান মালিকদের সঙ্গে আজ বিকাল ৪টায় গণভবনে বৈঠকে বসবেন। প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে সিলেটে চা শ্রমিকদের কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে। গতকাল শুক্রবারও ১৪তম দিন তারা বাগানে কাজে যাননি। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে সিলেটের ২৩ বাগানের পঞ্চায়েত কমিটি মালনীছড়া মন্দিরে বৈঠকে বসে। বৈঠক শেষে কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন চা-শ্রমিক নেতারা। এ ছাড়া আজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চা-বাগান মালিকদের বৈঠকের সিদ্ধান্তের পর তারা পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে জানাবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চা শ্রমিকদের দাবি পূরণে সহযোগিতা করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। গতকালও শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৩৯টি চা-বাগানে কাজ বন্ধ ছিল। সরেজমিন উপজেলার ভাড়াউড়া, ভূরভুড়িয়া, খাইছড়া, ফুলছড়া, খেজুরি ও কাকিয়াছড়া চা-বাগানে গিয়ে দেখা যায়, বাগানগুলো নীরব-নিস্তব্ধ। শ্রমিকরা কাজে না গিয়ে ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছেন। কোনো বাগানেই শ্রমিকদের মিছিল-সমাবেশ করতে দেখা যায়নি। ঘরে বসেই শ্রমিকরা দাবি আদায়ের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, ১২০ থেকে ৩০০ টাকায় দৈনিক মজুরি উন্নীতকরণের দাবিতে সিলেটসহ সারা দেশের চা শ্রমিকরা ৯ আগস্ট থেকে আন্দোলনে নামেন। প্রথম দুই দিন ২ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালনের পর ১৩ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন শুরু করেন। এর মধ্যে কয়েক দফা বৈঠকে চা শ্রমিক নেতারা কাজে যোগদানের ঘোষণা দিলেও সাধারণ শ্রমিকরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যান। আন্দোলনকারী শ্রমিকদের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তারা ভিডিও কনফারেন্সে সরাসরি কথা বলতে চান। মজুরি বৃদ্ধিসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে আশ্বাস পেলে তারা কাজে ফিরে যাবেন।