সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

নারী প্রার্থীকে গণধর্ষণের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রচারণা চালাতে গিয়ে এক নারী সদস্য প্রার্থী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা করেছেন ওই নারী। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে মামলার পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ৭ সেপ্টেম্বর ভোটের প্রচারণা চালাতে গিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ওই নারী। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী ঘটনার পরদিন ৮ সেপ্টেম্বর বাদী হয়ে পাঁচজনের বিরুদ্ধে জেলার বাগমারা থানায় ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেছেন। তবে ধর্ষণের শিকার হলেও থেমে নেই ওই প্রার্থীর প্রচারণা। হাসপাতাল থেকে ফিরে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ১৭ অক্টোবর নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে। এক স্বজনকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইছেন ওই নারী সদস্য প্রার্থী। তিনি বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় অনেকটা ভেঙে পড়েছেন তিনি। তবে প্রচারণা চালাতে গিয়ে যেহেতু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাই এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে মাঠেই আছেন। ভোটারদের কাছ থেকে তিনি সাড়া পাচ্ছেন বলে দাবি করেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করায় পুলিশের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।

এ ঘটনায় গ্রেফতার পাঁচ আসামি হলেন বাগমারার মাহাবুর রহমান (২৮), আকবর হোসেন (৩৫), সোহেল রানা (২৪), দুলাল হোসেন (২৫) ও ফজলুর রহমান (৪৮)।

মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে বাগমারা থানা পুলিশ জানিয়েছে, আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচারণা চালাতে গিয়ে এক নারী সদস্য প্রার্থী বাগমারা উপজেলায় যান। প্রচারণা শেষ হতে রাত হয়ে যায়। বাড়ি ফেরার পথে পাঁচ ব্যক্তি তার গতি রোধ করেন। এ সময় তারা তাকে তুলে নিয়ে অস্ত্রের মুখে দলবদ্ধ ধর্ষণ করেন। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তিনি চিকিৎসা নেন। পুলিশ তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় আসামিদের গ্রেফতারে তৎপরতা শুরু করে। শুক্রবার রাতে পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শনিবার সকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। হাটগাঙ্গোপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক আফজাল হোসেন বলেন, এজাহারে ঠিকানা ও বাবার নাম ভুল থাকায় আসামিদের গ্রেফতার করতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হয়েছে। গ্রেফতার ব্যক্তিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। ভুক্তভোগী ওই নারী প্রার্থী বলেন, ‘আমি নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গেলে বাগমারার আউসপাড়া ইউনিয়নে একটি গ্রামের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় তারা আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এতে আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি। পরদিন ৮ সেপ্টেম্বর আমি থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করি। এরপর ওই দিনই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি হই। ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমি ওসিসিতে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরি। এরপর আবারও আমি নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে শুরু করি। প্রচারণা এখনো অব্যাহত রেখেছি।’ বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, ‘ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় শুক্রবার বাগমারা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরদিন শনিবার তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ব্যক্তিরা ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। তদন্ত শেষে  আরও বিস্তারিত জানানো যাবে।’

সর্বশেষ খবর