বুধবার, ৯ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বুয়েট ছাত্রের মাথা ও বুকে আঘাতের চিহ্ন

হত্যা করা হয়েছে : চিকিৎসক

নারায়ণগঞ্জ ও সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি

বুয়েট ছাত্রের মাথা ও বুকে আঘাতের চিহ্ন

ফারদিন

নিখোঁজের ৭২ ঘণ্টা পর নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর ওরফে পরশকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শেখ ফরহাদ এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘ফারদিনের মাথার বিভিন্ন অংশে আঘাত পাওয়া গেছে। বুকের ভিতর আঘাতের চিহ্ন আছে। প্রাথমিকভাবে আমরা বুঝতে পেরেছি, এটি হত্যাকান্ড। ময়নাতদন্ত শেষে দ্রুত প্রতিবেদন দেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, সোমাবর বিকালে নারায়ণগঞ্জের লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিলের পেছনে নদী থেকে ফারদিনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর একজন বন্ধু ও এক বান্ধবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারদিন শনিবার থেকে নিখোঁজ  ছিলেন। ওই দিনই রাজধানীর রামপুরা থানায় এ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তাঁর বাবা কাজী নূর উদ্দিন। এতে বলা হয়, শুক্রবার বেলা ৩টার দিকে ফারদিন নূর পরশ ডেমরা থানার কোনাপাড়ার বাসা থেকে বুয়েটে তাঁর আবাসিক হলের উদ্দেশে বের হন। পর দিন শনিবার সকালে তাঁর পরীক্ষা ছিল। তবে সে পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। তাঁর মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট জেনে শহরের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিন গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, তিনি বিজনেস পত্রিকা ‘দ্য রিভারাইন’-এর সম্পাদক ও প্রকাশক। তার স্ত্রী ফারহানা ইয়াসমিন একজন গৃহিণী। তাঁদের গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা উপজেলায়। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় ফারদিন। তাঁর মেজো ভাই আবদুল্লাহ নূর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। ছোট ভাই তামিম নূর এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। পড়াশোনায় মেধাবী ফারদিন এসএসসি ও এইচএসসিতে সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। গবেষণায় আগ্রহ ছিল ফারদিনের। সে নিজের ইচ্ছায় বুয়েটে ভর্তি হয়। একপর্যায়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, ‘আমরা ফারদিনকে স্বাধীনভাবে পড়াশোনা করতে দিয়েছি। নিজের পড়াশোনা, পড়ানো, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আসা-যাওয়া ও সামাজিক কর্মকান্ডে যুক্ত ছিল। ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে তিনি বলেন, আমি আমার সন্তানকে ফিরে পাব না। বিচার হোক, এটি আমরা চাই।’ নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান গতকাল জানান, বুয়েট ছাত্র ফারদিনের লাশ সিদ্ধিরগঞ্জ থানার নদী এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। এখনো থানায় কেউ এজাহার দেয়নি। এজাহার পেলেই আমরা আইনি ব্যবস্থা নিয়ে মাঠে নামব। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে হত্যার আলামত পাওয়া গেছে। এ হত্যার বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।

সর্বশেষ খবর