ভারতের দিল্লিতে আয়োজিত ‘নো মানি ফর টেরর’ শীর্ষক সম্মেলনের উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, যারা সন্ত্রাসবাদে মদদ দেয় তাদের কঠিন মূল্য দিতে হবে। তিনি বলেন, এমন অনেক সংগঠন ও ব্যক্তি আছেন যারা সন্ত্রাসবাদীদের প্রতি সহানুভূতি দেখানোর চেষ্টা করেন, তাদের বিচ্ছিন্ন করা দরকার। সন্ত্রাসবাদে মদদদাতাদের বিরুদ্ধে গোটা বিশ্বকেই ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত।
দিল্লির হোটেল তাজ প্যালেসে আয়োজিত দুই দিনের (শুক্র এবং শনিবার) এ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন ৭০টির বেশি রাষ্ট্রের ৪৫০ প্রতিনিধি, যার মধ্যে রয়েছেন মন্ত্রী, বিভিন্ন তদন্তকারী সংগঠন, ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের শীর্ষ কর্মকর্তারা। আলোচনায় অংশ নিতে বাংলাদেশ থেকে দিল্লি এসেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তবে চীন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান এ সম্মেলনে যোগ দেয়নি। উদ্বোধনী ভাষণে মোদি আরও উল্লেখ করেন, সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলো বিভিন্ন উৎসের মাধ্যমে অর্থ পায়। এর মধ্যে অন্যতম হলো রাষ্ট্রীয় সমর্থন। কিছু রাষ্ট্র তাদের পররাষ্ট্র নীতির অংশ হিসেবে সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে। তারা তাদের রাজনৈতিক, আদর্শগত এবং আর্থিক সহায়তা দেয়। তিনি বলেন, ‘বিশ্ব এই বিষয়টিকে গভীরভাবে নেওয়ার অনেক আগে থেকেই এই দেশ সন্ত্রাসবাদের বীভৎসতা প্রত্যক্ষ করেছে। কয়েক দশক ধরেই সন্ত্রাসবাদ বিভিন্ন নামে বিভিন্ন আকারে দেশের ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে। তাদের জন্য হাজার হাজার মূল্যবান জীবন হারিয়েছে। অথচ একটি সন্ত্রাসবাদী হামলা বা একটি জীবন হারানো অনেকগুলো হামলা বা জীবন হারানোর সমান। তাই সন্ত্রাসবাদ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত বিশ্রাম নেওয়া যাবে না।’ মোদি বলেন, এখন সন্ত্রাসবাদের অভিমুখ পরিবর্তিত হচ্ছে। সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন এবং নিয়োগের জন্য নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। নতুন ফাইন্যান্স প্রযুক্তির মোকাবিলা করার জন্য একটি অভিন্ন বোঝাপড়ার প্রয়োজন আছে। এসব প্রচেষ্টায় বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করাও জরুরি। কারণ সন্ত্রাসবাদ মানে মানবজাতি, স্বাধীনতা সর্বোপরি সভ্যতার ওপরে হামলা। সন্ত্রাসবাদ কোনো সীমারেখা মানে না। কেবলমাত্র অভিন্ন, ঐক্যবদ্ধ এবং জিরো টলারেন্সই পারে সন্ত্রাসবাদকে পরাস্ত করতে। নরেন্দ্র মোদি ছাড়াও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রায় নিশীদ প্রামাণিক, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, এনআইএর ডিজি দিনকার গুপ্তাসহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা।