ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রোধে এরই মধ্যে নানা উদ্যোগও নিয়েছে মন্ত্রণালয়টি। এর অংশ হিসেবে অগ্নিদুর্ঘটনা ইস্যুতে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করতে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলোকে দোকান থেকে দাহ্য পদার্থ সরানো, মার্কেটে স্মোক ডিটেক্টর লাগানোসহ সাতটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানান, ১৭ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে একটি সভা হয়েছে মন্ত্রণালয়ে। এতে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া অগ্নিদুর্ঘটনা পর্যালোচনা করা হয়। এ ছাড়া জাতীয় নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। পরে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নানা সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে সিটি করপোরেশনগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌরসভাগুলোর মেয়র বরাবর চিঠি দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ শামছুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সারা দেশে অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয়। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলো। তবে এগুলো বাস্তবায়নে তদারকি করবে মন্ত্রণালয়। তিনি আরও বলেন, নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ বা কার্যপদ্ধতি সংস্থাগুলো মন্ত্রণালয়কে অবিলম্বে অবহিত করবে। কার্যক্রমগুলো বাস্তবায়নে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সব সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাকে দেওয়া সাত নির্দেশনা হলো : সিটি করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত মার্কেটগুলোয় সংশ্লিষ্ট মার্কেট ব্যবস্থাপনা কমিটির তত্ত্বাবধানে দিনে ও রাতে স্ব স্ব নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার নিশ্চিত করা, যেসব মার্কেটে সিসি ক্যামেরা বিদ্যমান রয়েছে তা সচল রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ এবং যেসব মার্কেটে সিসি ক্যামেরা নেই সেখানে সিসি ক্যামেরা লাগানো নিশ্চিত করা। সিসি ক্যামেরার তথ্য সংশ্লিষ্ট স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে প্রয়োজনে শেয়ার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এ ছাড়া নির্দেশনায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে : যেসব মার্কেটে জায়গার অপ্রতুলতা রয়েছে কিন্তু লোকসমাগম বেশি হয়, সেসব মার্কেটে অগ্নি প্রতিরোধে ‘স্মোক ডিটেক্টর’ লাগানো এবং মার্কেটগুলোর বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ অন্যান্য ইউটিলিটি সংযোগ সঠিক ও নিরাপদ আছে কি না তা যাচাই করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সার্টিফিকেশন নিশ্চিত করতে হবে। এসঙ্গে সব মার্কেটে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র সচল রাখা এবং পর্যাপ্ত ওয়াটার বা ফায়ার হাইড্র্যান্ট স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ, মার্কেটগুলোয় পর্যাপ্ত আলোবাতাসের চলাচল নিশ্চিত রাখা, যেসব মার্কেটে কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র বিদ্যমান আছে, তা যাতে পর্যাপ্ত, কার্যকর ও সচল থাকে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।