বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘দয়া করে রাজনৈতিক দলগুলোকে বা রাজনীতিকে আপনাদের প্রতিপক্ষ বানাবেন না। রাজনৈতিক দলগুলো আপনাদের সহযোগিতা করছে। এটা রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব।’ গতকাল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তবে তিনি এ আহ্বান জানান। সভায় আরও বক্তব্য দেন দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।
সভায় মহান মুক্তিযুদ্ধকে পেছনে ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি রাজনৈতিক দল প্রসঙ্গে বক্তব্য দেওয়ার সময় উপদেষ্টাদের আরও সতর্ক থাকার আহ্বানও জানান। তিনি বলেন, একজন উপদেষ্টা যখন এই কথা বলেন যে, ‘রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করার জন্য কাজ করছে’ এটা অত্যন্ত ঘোরতর অভিযোগ। আমি তীব্রভাবে এর নিন্দা জানাচ্ছি, প্রতিবাদ করছি এবং আমি মনে করি যে, এ ধরনের উক্তি তার প্রত্যাহার করা উচিত। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যেন কেউ বিকৃত করতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন এখনো বাস্তবায়ন হয়নি : গতকাল শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীরা স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, যার আদর্শ হবে গণতন্ত্র। সেই স্বপ্ন এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। তাদের স্বপ্ন পূরণে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার সর্বজনীন অধিকার সমুন্নত রাখতে আমাদের মিলিত শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। মির্জা ফখরুল আরও বলেন, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয় এক সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের শেষলগ্নে হানাদার বাহিনীর দোসররা এ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের অস্তিত্বকেই বিপজ্জনক মনে করেছিল, তাই তারা ১৪ ডিসেম্বর শেষ নিধনের কর্মসূচি চালায় বর্বরভাবে। পৈশাচিক সে হত্যাকা জাতির জীবনে সৃষ্টি করেছে এক গভীর ক্ষত। দেশমাতৃকার এই বরেণ্য সন্তানদের অম্লান স্মৃতি আজও আমাদের ব্যথিত ও বেদনার্ত করে। তারা মনে করেছিল- বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাে র সঙ্গে জড়িত জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করলেই এই দেশ নিজ পায়ে দাঁড়াতে পারবে না এবং নতুন দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি স্তব্ধ হয়ে যাবে। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়ার পথে মুখথুবড়ে পড়বে। কিন্তু তাদের সে উদ্দেশ্য সফল হয়নি। বাণীতে তিনি ’৭১-এ বিজয়ের চূড়ান্তক্ষণে শাহাদাতবরণকারী বুদ্ধিজীবীদের অমলিন স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান ও তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।