ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে- এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নতুন করে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে- চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে। সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা না হওয়ায় কিছু কিছু রাজনৈতিক দলের নেতারা আশ্বস্ত হতে পারছেন না। তারা বলছেন, চূড়ান্ত সময় ঘোষণা না করায় রাজনীতিতে সন্দেহ, সংশয় তৈরি করেছে। সরকারের সদিচ্ছা থাকলে আগামী ডিসেম্বর কেন তার আগেও নির্বাচন দেওয়া সম্ভব। এর মধ্যে সবাই ঐকমত্য হয়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজও এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নির্বাচন নিয়ে এখন আর সময়ক্ষেপণের দরকার আছে বলে মনে করি না। ১৫টি সংস্কার কমিশন তাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে। এগুলো নিয়ে ঐকমত্য কমিশন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক করছেন। রিপোর্ট নিয়ে খুব বেশি মতপার্থক্য নেই। তাই ডিসেম্বরের পরে নির্বাচন হওয়ার কোনো কারণ আছে বলে মনে করি না। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে- ঐকমত্যের বাইরে কিছু করা যাবে না। ঐকমত্যের কাজ তো আগামী এক-দুই মাসের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। যেগুলোতে ঐকমত্য হবে না, সেগুলোর জন্য তো দেরি করার কোনো সুযোগ নাই বলে মনে করেন রাজনৈতিক দলের নেতারা। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বলেন, ডিসেম্বর কেন নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হওয়া উচিত। দেশের আইনশৃঙ্খলা ঠিক নাই। বিনিয়োগ আসছে না। সরকার কী করবে সেটা ঠিক নাই। সময়ক্ষেপণ না করে নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া উচিত বলে মনে করি। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, প্রধান উপদেষ্টা যে স্বল্প ও দীর্ঘ সংস্কারের কথা বলেছেন- সেখানে অনেক কিছু পরিষ্কার করেননি। বিএনপি সাধারণভাবে বলেছে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন। আমরা মনে করি, ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন হওয়া সম্ভব।’ তিনি বলেন, অনির্বাচিত সরকারের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত হলে সংকট আরও ঘনীভূত হবে। ডিসেম্বরের অনেক আগেই সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য অবাধ নির্বাচনের জন্য যা যা সংস্কার দরকার, তা করে নির্বাচন করা সম্ভব। বামপন্থিরা অনেকদিন ধরেই এটি বলে আসছে। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন সম্ভব। এ জন্য সরকারের সদিচ্ছা থাকতে হবে। নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা না করায় রাজনীতির মাঠে সন্দেহ ও সংশয় তৈরি করেছে। এ অবস্থায় দ্রুত সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিত। আমাদের পরিষ্কার কথা- ডিসেম্বরের মধ্যেই ভোট হতে হবে।