বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খাতের অগ্রযাত্রায় আইইউবিএটি এক পথিকৃৎ প্রতিষ্ঠান। ১৯৯১ সালে ড. এম আলিমউল্যা মিয়ানের হাত ধরে শুরু হওয়া এ যাত্রা এখন হাজারো শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণের ঠিকানা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন ড. এম আলিমউল্যা মিয়ান। এই শিক্ষাবিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও আইবিএর সাবেক পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। তাঁর হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয় ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি)। ড. মিয়ানের বিশ্বাস ছিল, ‘যোগ্যতাসম্পন্ন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য উচ্চশিক্ষার নিশ্চয়তা থাকতে হবে।’ আর্থিকভাবে অসচ্ছল হলেও মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো ছিল তাঁর দর্শন।
সবুজে ঘেরা শিক্ষাঙ্গন : রাজধানীর উত্তরায় ২০ বিঘা জমির ওপর বিস্তৃত আইইউবিএটি ক্যাম্পাস। এখানে আছে নয়নাভিরাম সবুজ মাঠ, উন্মুক্ত স্টাডি এরিয়া, শহীদ মিনার, খেলার মাঠ আর গাছপালা ঘেরা শান্ত পরিবেশ। ফ্রি ওয়াইফাই, ইনডোর ও আউটডোর গেমস, আর নান্দনিক অবকাঠামো মিলে আইইউবিএটি শিক্ষা ও গবেষণার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ।
আছে মেধাবৃত্তি : আইইউবিএটি বিশ্বাস করে শিক্ষা কোনো শ্রেণি বা গোষ্ঠীর জন্য সীমাবদ্ধ নয়। তাই মেধাবী কিন্তু আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে বিস্তৃত বৃত্তি কর্মসূচি। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক ফলাফলের ভিত্তিতে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত মেধাবৃত্তি। মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় উৎসাহ দিতে ১৫ শতাংশ বিশেষ বৃত্তি। অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন আর্থিক সহায়তা। এ ছাড়া ঢাকার বিভিন্ন রুটে শিক্ষার্থীদের জন্য বিনাখরচে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন ব্যবস্থা রয়েছে।
আন্তর্জাতিক পরিসরে আইইউবিএটি : এশিয়া ও আফ্রিকার ১২টি দেশ থেকে শতাধিক বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে আইইউবিএটিতে। ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট অফিস বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসন, নিরাপত্তা ও সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করে। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষার কারণে দিনদিন বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে।
কর্মসংস্থানে সেতুবন্ধন : শুধু ডিগ্রি প্রদান নয়, শিক্ষার্থীদের কর্মক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত করার দিকেও বিশেষ মনোযোগ দেয় আইইউবিএটি। এ জন্য রয়েছে অ্যালামনাই অ্যান্ড প্লেসমেন্ট অফিস, যারা প্রতিটি গ্র্যাজুয়েটকে চাকরি খুঁজে পেতে সহযোগিতা করে। প্রতি বছর শতাধিক দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে আয়োজিত হয় ন্যাশনাল ক্যারিয়ার ফেস্টিভ্যাল। এতে শিক্ষার্থীরা সরাসরি নিয়োগকর্তাদের কাছে নিজেদের যোগ্যতা তুলে ধরার সুযোগ পান। পাশাপাশি নিয়মিত আয়োজন করা হয় প্রশিক্ষণ, কর্মশালা ও সেমিনার, যা শিক্ষার্থীদের চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতামূলক হতে প্রস্তুত করে। ব্যাংক, টেলিকম, এফএমসিজি, আইটি সেক্টরসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আইইউবিএটির গ্র্যাজুয়েটদের অবস্থান আজ দৃঢ়। শুধু দেশে নয়, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও তারা কাজ করছে সাফল্যের সঙ্গে।
গবেষণায় নেতৃত্ব ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি : আইইউবিএটি গবেষণার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ‘মিয়ান রিসার্চ ইনস্টিটিউট’, এখানে নিয়মিত গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করে এটি। প্রতিবছর প্রকাশিত হয় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গবেষণাপত্র, যেগুলো আন্তর্জাতিক স্বীকৃত জার্নালে প্রকাশিত হয়। ২০২৪ সালে স্কোপাস ইনডেক্স অনুযায়ী আইইউবিএটি দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে চতুর্থ অবস্থানে ছিল। এ ছাড়াও QS Ranking, Times Higher Education, SCImago এবং UI Green Metric-এর মতো বৈশ্বিক র্যাংকিংয়ে আইইউবিএটি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেছে।
ড. মিয়ানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন : আইইউবিএটির সূচনা থেকেই লক্ষ্য ছিল, শুধু গ্র্যাজুয়েট তৈরি নয়, বরং পেশাদার গ্র্যাজুয়েট তৈরি করা। যারা পরিবার, সমাজ ও দেশ গঠনে ভূমিকা রাখবে। এখন আইইউবিএটির অ্যালামনাইরা বিশ্বব্যাংক, বহুজাতিক কোম্পানি এবং দেশের শীর্ষ শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কাজ করছে। দেশের প্রতিটি গ্রামে অন্তত একজন দক্ষ গ্র্যাজুয়েট তৈরির প্রত্যয় এখন অনেকটাই সফল হয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও নিজেদের অবদান প্রমাণ করছে আইইউবিএটি।