নাম তাঁর রায়হান জামিল (৩৫)। বাড়ি ফরিদপুর জেলার চরভদ্রাসন উপজেলার চরভদ্রাসন ইউনিয়নের এমকেডাঙ্গী গ্রামে। তিনি ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) আসন থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান। কয়েক মাস ধরে তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছেন। সেই প্রচারণায় চমক সৃষ্টি করাই তাঁর লক্ষ্য।
চমকের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ১০০ জনকে ১ টাকায় এক কেজি করে গরুর মাংস বিতরণ করেন তিনি।
এর আগে ফরিদপুর-৪ আসনের সদরপুর উপজেলায় ১০ টাকায় পিসপ্রতি ইলিশ মাছ বিতরণের আয়োজন করে বিপাকে পড়েছিলেন রায়হান জামিল। কারণ, আয়োজনের তুলনায় প্রচার ছিল অনেক বেশি—আর উপস্থিত মানুষের তুলনায় মাছ ছিল অপ্রতুল। ফলে ঘটনাটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
জানা যায়, গত ১৭ সেপ্টেম্বর সদরপুর বিশ্ব জাকের মঞ্জিল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে ১০ টাকায় ইলিশ বিতরণের আয়োজন করেছিলেন তিনি। কয়েক দিন আগে থেকেই পোস্টার, মাইকিং ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়। বিতরণের দিনে প্রায় দুই হাজার মানুষ সেখানে ভিড় করলেও, রায়হান জামিল নিয়ে আসেন মাত্র ৬০০ পিস ইলিশ। ফলে উপস্থিতদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। একপর্যায়ে তিনি গোপনে এলাকা ত্যাগ করেন।
এর এক মাস ১৩ দিন পর তিনি আবারও আলোচনায় আসেন ভাঙ্গায় ১ টাকায় কেজিপ্রতি গরুর মাংস বিতরণের মাধ্যমে। এই আয়োজনের প্রচারণা চলেছে তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে, যা পরবর্তীতে বহুজন শেয়ার করেছেন। এমনকি নিজের গাড়িতে করে চরভদ্রাসনের বাড়ি থেকে `১ টাকার ক্রেতা' খুঁজে বের হওয়ার দৃশ্যও তিনি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন।
এবার তিনি গরুর মাংস বিক্রির জন্য নিজের ছবি সংবলিত ব্যাগ বানিয়েছেন, আর স্বেচ্ছাসেবকদের পরিয়েছেন নিজস্ব ছবি ছাপানো টি-শার্ট। পুরো আয়োজনটি অনেকের কাছে তাঁর প্রচারণার অংশ হিসেবে দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গা উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা মিলিয়ে দুই শতাধিক গ্রামের মধ্যে মাত্র ১০০ জনকে এ সুযোগ দেওয়া হয়েছে—যা অনেকেই ‘প্রচারমূলক কৌশল’ হিসেবে দেখছেন।
উল্লেখ্য, এবার তাঁর তৈরি করা পোস্টার বা প্রচার কার্ডে মাংস বিতরণের স্থান উল্লেখ করা ছিল না।
এ বিষয়ে রায়হান জামিল বলেন, ভাঙ্গায় এবার ১ টাকায় কেজিপ্রতি গরুর মাংস দেওয়া হয়েছে। মোট ১০০ জনকে এক কেজি করে দেওয়া হয়েছে। আগেই তাদের সিলেক্ট করে কুপন দেওয়া হয়েছিল। নির্বাচিত প্রত্যেককে নিজ হাতে মাংস বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছি। চলার পথে ভ্যানচালক ও রিকশাচালকদেরও দিয়েছি।
বিডি-প্রতিদিন/মাইনুল